ঢাকা,  শুক্রবার
১৯ ডিসেম্বর ২০২৫ , ০৩:৩৯ মিনিট

Donik Barta

শিরোনাম:

* জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে মানবতাবিরোধী অপরাধ: ওবায়দুল কাদেরসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দাখিল * গুলিবিদ্ধ শরিফ ওসমান হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক, দেশে–বিদেশে উদ্বেগ * ঢাকা–দিল্লি সম্পর্কে নতুন করে উত্তেজনা, আজ চালু থাকছে ভারতীয় ভিসা কেন্দ্র * ৬৬ হাজার কোটি টাকার সম্পদ জব্দ, বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ উদ্ধারে গতি আনছে সরকার * যুক্তরাষ্ট্রের ‘সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধ’ ফিরিয়ে আনছেন ট্রাম্প, সমালোচনার কেন্দ্রে ভেনেজুয়েলা অভিযান * পাবনার বেড়ায় স্পিডবোটে এসে বাজারে ডাকাতি, ব্যবসায়ীরা আতঙ্কিত * যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভেনেজুয়েলা অভিযান: মাদুরো সরকারের ওপর চাপ বাড়ছে * ট্রাম্পের ২৮ দফা শান্তি পরিকল্পনা: ইউক্রেন–রাশিয়া যুদ্ধ বন্ধে নতুন জটিলতা * গুম ও মানবতাবিরোধী অভিযোগে ১৩ সেনা কর্মকর্তা ট্রাইব্যুনালে * বিএনপির ৪০টির বেশি আসনে মনোনয়নসংক্রান্ত অসন্তোষ, কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ব্যস্ত সমাধান খুঁজতে

খুলনায় গ্রেপ্তার এসআই সুকান্ত, পদত্যাগের দাবিতে পুলিশ কমিশনারকে ঘিরে বিক্ষোভ

repoter

প্রকাশিত: ০৭:০৪:০৬অপরাহ্ন , ২৬ জুন ২০২৫

আপডেট: ০৭:০৪:০৬অপরাহ্ন , ২৬ জুন ২০২৫

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: ছবি: সংগৃহীত

আটকের পর ছেড়ে দেওয়া এসআই সুকান্তকে আবার গ্রেপ্তারের ঘটনায় উত্তাল খুলনা; পুলিশ কমিশনারের পদত্যাগ দাবি শিক্ষার্থী ও জনতার


খুলনায় ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ এবং বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা এসআই সুকান্ত দাশকে অবশেষে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা থেকে তাকে আটক করে পুলিশ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের (কেএমপি) কমিশনার মো. জুলফিকার আলী হায়দার।

এর আগে মঙ্গলবার বিকেলে নগরীর ইস্টার্ন গেট এলাকায় একটি থ্রি-হুইলারে করে যাওয়ার সময় সুকান্ত দাশকে চিনে ফেলে বিক্ষুব্ধ জনতা। জনতার হাতে মারধরের পর তাকে খানজাহান আলী থানার পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়। কিন্তু পরে রাতে পুলিশ তাকে ছেড়ে দেয়। এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে শিক্ষার্থীরা এবং নগরজুড়ে শুরু হয় তীব্র প্রতিক্রিয়া।

বুধবার সকাল থেকেই এ ঘটনা নগরীর বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছড়িয়ে পড়ে। দুপুর থেকে শিক্ষার্থীরা কেএমপি সদর দপ্তরের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করে। পরে সাধারণ মানুষও তাদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে। বিক্ষোভকারীরা সদর দপ্তরের প্রধান ফটক বন্ধ করে দেয় এবং রাত পর্যন্ত চলে প্রতিবাদ। রাত সাড়ে ৯টার দিকে বিক্ষোভকারীরা চলে যাওয়ার পর পুলিশ কর্মকর্তারা তালা ভেঙে কার্যালয় থেকে বের হন।

বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টা থেকে বিক্ষোভ আরও তীব্র আকার ধারণ করে। কেএমপি সদর দপ্তরের সামনে জড়ো হয়ে শিক্ষার্থীরা স্লোগানে উত্তাল করে তোলে পরিবেশ। তাদের স্লোগানে ছিল,
– ‘আবু সাঈদ-মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ’
– ‘দিয়েছি তো রক্ত, আরও দেব রক্ত’
– ‘পুলিশ কমিশনারের চামড়া, তুলে নেব আমরা’
– ‘এক দফা, এক দাবি – পুলিশ কমিশনার কখন যাবি’
– ‘দফা এক, দাবি এক – পুলিশ কমিশনারের পদত্যাগ’

বিক্ষোভকারীদের প্রধান দাবি, কেএমপি কমিশনার মো. জুলফিকার আলী হায়দারকে অবশ্যই পদত্যাগ করতে হবে। তারা অভিযোগ করেন, খুলনায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির পেছনে তার দায়িত্বহীনতা রয়েছে।

আন্দোলনকারী এক শিক্ষার্থী বলেন, “খুলনার আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ ব্যর্থ হয়েছে। বর্তমান কমিশনারের আমলে অপরাধ বেড়েছে। তিনি রাজনৈতিক প্রভাবশালী মহলের লোকদের গ্রেপ্তার করেন না। আমরা খুলনায় একজন সাহসী, দেশপ্রেমিক এবং নিরপেক্ষ কমিশনার চাই।”

তবে কেএমপি কমিশনার জুলফিকার আলী হায়দার এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “সরকারি কর্মচারী গ্রেপ্তারের ক্ষেত্রে যে বিধিবিধান রয়েছে, সেগুলোর ভিত্তিতেই এসআই সুকান্ত দাশের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তাকে আজই আদালতে হাজির করা হবে এবং প্রক্রিয়াগত কার্যক্রম চলমান রয়েছে।”

এই ঘটনার জেরে খুলনার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে শহরজুড়ে বাড়ছে উত্তেজনা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও এ নিয়ে আলোচনা তুঙ্গে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, পুলিশের অভ্যন্তরীণ জবাবদিহিতার অভাব এবং রাজনৈতিক পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ সাধারণ মানুষের মধ্যে আস্থা কমিয়ে দিচ্ছে।

এদিকে কেএমপি সূত্রে জানা গেছে, এসআই সুকান্ত দাশের বিরুদ্ধে পূর্বে নানা অভিযোগ থাকলেও সেগুলোর যথাযথ তদন্ত হয়নি। এবারও তাকে ছেড়ে দেওয়ার পরই জনগণের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দেয়।

খুলনার এই চলমান আন্দোলন কতদূর গড়াবে এবং এর প্রেক্ষিতে পুলিশ প্রশাসনে কোনো পরিবর্তন আসবে কি না, সেটাই এখন দেখার বিষয়। শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।

repoter