
ছবি: ছবি: সংগৃহীত
কেরানীগঞ্জের দক্ষিণাঞ্চলের চুনকুটিয়া পাকাপুল এলাকায় অবস্থিত রূপালী ব্যাংকের জিঞ্জিরা শাখায় সংঘবদ্ধ এক ডাকাত দল প্রবেশ করেছে বলে জানা গেছে। স্থানীয় এলাকাবাসী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তাৎক্ষণিক পদক্ষেপে পুরো এলাকা এখন ঘিরে রাখা হয়েছে। পুলিশ, সেনাবাহিনী এবং র্যাবের সমন্বিত দল ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে।
ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার আহমেদ মুয়িদ গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন যে, চুনকুটিয়া এলাকায় অবস্থিত ব্যাংকটিতে ডাকাত দল প্রবেশ করার পর স্থানীয় জনগণ তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে ব্যাংকের গেট বাইরে থেকে বন্ধ করে দেয়। এরপরই বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জানানো হলে দ্রুত তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পুরো এলাকা ঘিরে ফেলে।
তিনি আরও জানান, ডাকাত দলের কাছে আগ্নেয়াস্ত্র থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে পরিস্থিতি যাতে আর উত্তেজনাপূর্ণ না হয়, সেজন্য সরাসরি অভিযানের পরিবর্তে ডাকাতদের আত্মসমর্পণ করানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। ভেতরে ব্যাংকের কর্মী ও গ্রাহকরা অবস্থান করছেন কিনা, তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য তথ্য সংগ্রহ চলছে।
স্থানীয় এলাকাবাসী জানান, দুপুর ২টার দিকে ব্যাংকে ডাকাত প্রবেশ করার খবর ছড়িয়ে পড়লে পাশের একটি মসজিদের মাইকে বিষয়টি জানানো হয়। এর ফলে আশপাশের শত শত মানুষ ঘটনাস্থলে জড়ো হয় এবং ব্যাংকের গেট বন্ধ করে দেয়। এরপর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে পুরো এলাকা নিয়ন্ত্রণে নেয়।
প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, দুপুরের দিকে ব্যাংকের ভেতরে গুলির শব্দ শোনা গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, ব্যাংকের ভেতরে থাকা কর্মী ও গ্রাহকদের জিম্মি করে ডাকাত দল অবস্থান নিয়েছে। তবে এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য এখনো পাওয়া যায়নি।
এদিকে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পুরো এলাকাটি নিরাপত্তা বেষ্টনীতে নিয়ে ভেতরে থাকা ডাকাত দলের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের চেষ্টা করছে। ব্যাংকের ভেতর থাকা ব্যক্তিদের নিরাপত্তার বিষয়টি অগ্রাধিকার দিয়ে সমস্ত পরিকল্পনা সাজানো হচ্ছে।
পুলিশ সুপার আহমেদ মুয়িদ জানান, ঘটনাটি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। তিনি বলেন, “আমাদের প্রথম লক্ষ্য হলো ভেতরে থাকা মানুষদের নিরাপদে বের করে আনা। আমরা ডাকাত দলকে আত্মসমর্পণের সুযোগ দিচ্ছি। প্রয়োজনে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, চুনকুটিয়া এলাকায় এমন ঘটনা বিরল। ব্যাংকে ঢুকে ডাকাতি করার সাহস দেখানোর ঘটনা এলাকায় আগে কখনো ঘটেনি। ঘটনার পর থেকে পুরো এলাকা থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে। দোকানপাট বন্ধ হয়ে গেছে, এবং সাধারণ মানুষের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি এলাকাবাসীর মধ্যে বেশ কিছু স্বেচ্ছাসেবী সদস্যও উপস্থিত রয়েছেন। তারা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সহযোগিতা করছেন। র্যাব ও সেনাবাহিনী পৃথক পরিকল্পনার মাধ্যমে পুরো ঘটনাটি নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করছে।
উল্লেখ্য, এ ঘটনার পর থেকে এলাকাবাসী তাদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তারা দ্রুত এবং কার্যকর পদক্ষেপের মাধ্যমে পরিস্থিতি সমাধানের আশা করছেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানিয়েছে, প্রয়োজনে আরও শক্তি প্রয়োগ করে পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আনা হবে।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ডাকাত দল ব্যাংকের ভেতরে অবস্থান করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
repoter