ঢাকা,  শুক্রবার
১৯ ডিসেম্বর ২০২৫ , ০২:২৪ মিনিট

Donik Barta

শিরোনাম:

* জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে মানবতাবিরোধী অপরাধ: ওবায়দুল কাদেরসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দাখিল * গুলিবিদ্ধ শরিফ ওসমান হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক, দেশে–বিদেশে উদ্বেগ * ঢাকা–দিল্লি সম্পর্কে নতুন করে উত্তেজনা, আজ চালু থাকছে ভারতীয় ভিসা কেন্দ্র * ৬৬ হাজার কোটি টাকার সম্পদ জব্দ, বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ উদ্ধারে গতি আনছে সরকার * যুক্তরাষ্ট্রের ‘সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধ’ ফিরিয়ে আনছেন ট্রাম্প, সমালোচনার কেন্দ্রে ভেনেজুয়েলা অভিযান * পাবনার বেড়ায় স্পিডবোটে এসে বাজারে ডাকাতি, ব্যবসায়ীরা আতঙ্কিত * যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভেনেজুয়েলা অভিযান: মাদুরো সরকারের ওপর চাপ বাড়ছে * ট্রাম্পের ২৮ দফা শান্তি পরিকল্পনা: ইউক্রেন–রাশিয়া যুদ্ধ বন্ধে নতুন জটিলতা * গুম ও মানবতাবিরোধী অভিযোগে ১৩ সেনা কর্মকর্তা ট্রাইব্যুনালে * বিএনপির ৪০টির বেশি আসনে মনোনয়নসংক্রান্ত অসন্তোষ, কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ব্যস্ত সমাধান খুঁজতে

জুলাই-আগস্ট গণহত্যাকারীদের কেউ ছাড় পাবে না: চিফ প্রসিকিউটর

repoter

প্রকাশিত: ০৬:২১:৪২অপরাহ্ন , ১১ আগস্ট ২০২৫

আপডেট: ০৬:২১:৪২অপরাহ্ন , ১১ আগস্ট ২০২৫

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: ছবি: সংগৃহীত

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রধান প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম জানিয়েছেন, বিচার প্রক্রিয়া কোনোভাবেই থামবে না, অপরাধীরা সবাই আইনের আওতায় আসবে

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেছেন, জুলাই ও আগস্টে সংঘটিত গণহত্যার সঙ্গে জড়িত কেউই আইনের হাত থেকে রক্ষা পাবে না। সোমবার দুপুরে ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, যারা ভেবেছিলেন বাংলাদেশে গণহত্যা চালিয়ে পার পাওয়া যাবে কিংবা প্রতিবিপ্লব ঘটিয়ে বিচার প্রক্রিয়া বানচাল করা সম্ভব হবে, তাদের জন্য এটি স্পষ্ট বার্তা—অপরাধীদের কেউ ছাড় পাবে না। বিচার কার্যক্রম কোনোভাবেই বন্ধ হবে না।

এদিন রাজধানীর চাঁনখারপুলে জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থী আনাসসহ ছয়জনকে হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার সূচনা বক্তব্য উপস্থাপন করেন চিফ প্রসিকিউটর। মামলার প্রথম দিনেই তিনি আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের অবস্থান তুলে ধরে বলেন, যেসব তরুণ রক্ত দিয়ে বাংলাদেশকে দ্বিতীয়বার মুক্ত করেছেন, তাদের আত্মত্যাগ বৃথা যাবে না। রাষ্ট্র তাদের পরিবারের জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করবে।

সূচনা বক্তব্য শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপের সময় তাজুল ইসলাম বলেন, শহিদ আনাসসহ যারা প্রাণ দিয়েছেন, তাদের স্বজনরা এখনো জীবিত আছেন। তাদের সাক্ষ্য এবং প্রমাণের মাধ্যমে দেড় হাজারেরও বেশি নিহত মানুষের পরিবারের প্রতি রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ন্যায়বিচারের চেষ্টা অব্যাহত থাকবে। তিনি আশ্বাস দেন, এই বিচার প্রক্রিয়া স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ এবং ন্যায়সংগতভাবে সম্পন্ন হবে, যাতে ভবিষ্যতে কেউ এ ধরনের অপরাধ করার সাহস না পায়।

মামলার প্রথম সাক্ষী হিসেবে আদালতে উপস্থিত ছিলেন শহিদ আনাসের বাবা পলাশ। তিনি আদালতে ছেলের হত্যার ঘটনার বর্ণনা দেন। এ সময় শহিদ আনাসের মা-ও সাক্ষী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। মামলার শুনানির সময় আদালতকে তারা জানান, আন্দোলনের সময় কীভাবে তাদের সন্তান ও অন্যান্য ভুক্তভোগী হত্যার শিকার হয়েছিলেন।

চিফ প্রসিকিউটর তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন, মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার শুধু ভুক্তভোগী পরিবার নয়, পুরো জাতির প্রতি একটি দায়বদ্ধতা। তিনি বলেন, এই বিচার ইতিহাসের অংশ হয়ে থাকবে এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সতর্কবার্তা হিসেবে কাজ করবে। গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের দায় কেউ এড়িয়ে যেতে পারবে না—এটি আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচারেরও মূলনীতি।

তিনি আরও বলেন, স্বাধীনতার ইতিহাসে জুলাই-আগস্ট আন্দোলন একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। যারা এই আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন, তারা গণতন্ত্র ও ন্যায়বিচারের জন্য জীবন দিয়েছেন। তাদের আত্মত্যাগের স্বীকৃতি দিতে এবং ইতিহাসের ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে এই বিচার অপরিহার্য।

আদালতের কার্যক্রম চলাকালীন ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন। মামলার পরবর্তী তারিখে আরও কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগীর স্বজন সাক্ষ্য দেবেন বলে জানা গেছে।

রাষ্ট্রপক্ষ আশা করছে, প্রমাণ ও সাক্ষ্যের ভিত্তিতে এই মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি সম্ভব হবে এবং দোষীরা আইনের সর্বোচ্চ শাস্তি পাবে। অপরদিকে, ভুক্তভোগী পরিবারগুলোও দীর্ঘদিনের প্রতীক্ষিত ন্যায়বিচার দেখতে পারবে।

চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম তার বক্তব্যে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতিও আহ্বান জানান, তারা যেন এ ধরনের অপরাধের বিচার প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশকে সহযোগিতা করে এবং মানবতাবিরোধী অপরাধ দমনে ঐক্যবদ্ধ ভূমিকা রাখে। তিনি বলেন, ন্যায়বিচারের প্রক্রিয়া বিলম্বিত হলে অপরাধীরা উৎসাহিত হয়, যা কোনো সভ্য সমাজে কাম্য নয়।

মামলার পরবর্তী ধাপ হিসেবে আরও সাক্ষ্যগ্রহণ ও প্রমাণ উপস্থাপন করা হবে। ট্রাইব্যুনাল জানিয়েছে, তারা এই মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য অগ্রাধিকার দিচ্ছে। বিচার প্রক্রিয়ার প্রতিটি ধাপ কঠোর নিরাপত্তা ও স্বচ্ছতার সঙ্গে সম্পন্ন হবে বলে আদালত আশ্বাস দিয়েছে।

repoter