
ছবি: -সংগৃহীত ছবি
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোখলেস উর রহমানকে পদ থেকে সরিয়ে পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য হিসেবে বদলি করা হয়েছে। রোববার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন নিয়োগ-১ শাখা থেকে জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, জনস্বার্থে জারিকৃত এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে। এতে স্বাক্ষর করেন উপসচিব মোহাম্মদ রফিকুল হক।
চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পাওয়া মোখলেস উর রহমানকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব থেকে অপসারণের ঘটনা প্রশাসনিক অঙ্গনে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। কারণ, তিনি মাত্র ১৩ মাস আগে এই মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ পদে নিয়োগ পেয়েছিলেন। দুই বছরের জন্য চুক্তি হলেও মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই তাকে সরিয়ে দেওয়া হলো।
প্রসঙ্গত, ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের পর দেশে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হলে তৎকালীন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরীকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। তার পরিবর্তে সিনিয়র আমলা মোখলেস উর রহমানকে সিনিয়র সচিব হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। সেই সময় সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, প্রশাসনের স্থিতিশীলতা ও দক্ষতা বাড়াতে এ নিয়োগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
কিন্তু এক বছরের কিছু বেশি সময় পার হওয়ার পরেই জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে আবারও পরিবর্তন আসলো। মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, নতুন দায়িত্বে পরিকল্পনা কমিশনে যোগদান করবেন মোখলেস উর রহমান। সেখানে তিনি সদস্য হিসেবে উন্নয়ন পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন তদারকিতে কাজ করবেন।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় দেশের প্রশাসনিক কাঠামোর কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে কাজ করে। এ মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ পর্যায়ে হঠাৎ রদবদল প্রশাসনে নতুন গতিশীলতা আনবে কিনা, তা নিয়ে সরকারি কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট মহলে নানা আলোচনা চলছে। পরিকল্পনা কমিশনে দায়িত্বপ্রাপ্ত হওয়ায় মোখলেস উর রহমানকে নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখার সুযোগ দেওয়া হলো বলে মনে করছেন অনেকে।
অন্যদিকে, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নতুন সিনিয়র সচিব হিসেবে কে দায়িত্ব নেবেন, তা এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হয়নি। তবে মন্ত্রণালয়ের ভেতরে ও বাইরে আলোচনায় রয়েছে কয়েকজন জ্যেষ্ঠ সচিবের নাম। সাধারণত এ ধরনের পদে অভিজ্ঞ আমলাদের নিয়োগ দেওয়া হয়, যারা মন্ত্রণালয়ের কর্মকাণ্ডে দক্ষতার পরিচয় রেখেছেন।
মোখলেস উর রহমান প্রশাসনে দীর্ঘ অভিজ্ঞতা সম্পন্ন কর্মকর্তা হিসেবে পরিচিত। তিনি বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও দপ্তরে দায়িত্ব পালন করেছেন। প্রশাসনিক কাজে তার সুনাম থাকলেও চুক্তির ভিত্তিতে দেওয়া দায়িত্ব আগাম সমাপ্ত হওয়া অনেককে বিস্মিত করেছে। এ বিষয়ে সরকারি কোনো ব্যাখ্যা না পাওয়া গেলেও প্রজ্ঞাপনে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে, সিদ্ধান্তটি জনস্বার্থে নেওয়া হয়েছে।
এক বছরের ব্যবধানে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ পদে দুইবার রদবদল হওয়া প্রশাসনিক ক্ষেত্রে পরিবর্তনশীল পরিস্থিতির প্রতিফলন বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা। তাদের মতে, এ ধরনের পরিবর্তন সরকারী নীতি ও কর্মকৌশল বাস্তবায়নে নতুন দিকনির্দেশনা দিতে পারে।
repoter