ঢাকা,  শুক্রবার
১৯ ডিসেম্বর ২০২৫ , ০৩:৫০ মিনিট

Donik Barta

শিরোনাম:

* জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে মানবতাবিরোধী অপরাধ: ওবায়দুল কাদেরসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দাখিল * গুলিবিদ্ধ শরিফ ওসমান হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক, দেশে–বিদেশে উদ্বেগ * ঢাকা–দিল্লি সম্পর্কে নতুন করে উত্তেজনা, আজ চালু থাকছে ভারতীয় ভিসা কেন্দ্র * ৬৬ হাজার কোটি টাকার সম্পদ জব্দ, বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ উদ্ধারে গতি আনছে সরকার * যুক্তরাষ্ট্রের ‘সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধ’ ফিরিয়ে আনছেন ট্রাম্প, সমালোচনার কেন্দ্রে ভেনেজুয়েলা অভিযান * পাবনার বেড়ায় স্পিডবোটে এসে বাজারে ডাকাতি, ব্যবসায়ীরা আতঙ্কিত * যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভেনেজুয়েলা অভিযান: মাদুরো সরকারের ওপর চাপ বাড়ছে * ট্রাম্পের ২৮ দফা শান্তি পরিকল্পনা: ইউক্রেন–রাশিয়া যুদ্ধ বন্ধে নতুন জটিলতা * গুম ও মানবতাবিরোধী অভিযোগে ১৩ সেনা কর্মকর্তা ট্রাইব্যুনালে * বিএনপির ৪০টির বেশি আসনে মনোনয়নসংক্রান্ত অসন্তোষ, কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ব্যস্ত সমাধান খুঁজতে

জীবনের হুমকি বিবেচনায় এনসিপি নেতাদের উদ্ধার: সেনাসদর

repoter

প্রকাশিত: ০৭:১৬:২৩অপরাহ্ন , ৩১ জুলাই ২০২৫

আপডেট: ০৭:১৬:২৩অপরাহ্ন , ৩১ জুলাই ২০২৫

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: ছবি: সংগৃহীত

গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতাদের উদ্ধার কোনো দলীয় পক্ষপাত নয়, বরং কেবল জীবনের হুমকির বিবেচনায় করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সেনাসদর।

বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) ঢাকা সেনাসদরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই মন্তব্য করেন সেনাসদরের মিলিটারি অপারেশনস পরিদপ্তরের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজিম-উদ-দৌলা। তিনি বলেন, কারও জীবন বিপন্ন হলে সেনাবাহিনী চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকবে না। উদ্ধার অভিযানের পেছনে কোনো দলীয় বিবেচনা কাজ করেনি, বরং শুধুমাত্র জীবন রক্ষার দিকটিই বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে।

১৬ জুলাই গোপালগঞ্জে এনসিপির কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে দফায় দফায় সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে আওয়ামী লীগ কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে, যার এক পর্যায়ে সেনাবাহিনীও যুক্ত হয়। গুলিবর্ষণে চারজন নিহত হন, আহত হন অন্তত ৫০ জন, এর মধ্যে নয়জন গুলিবিদ্ধ হন। পরবর্তীতে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও একজনের মৃত্যু হয়। ওই সময় সেনাবাহিনী এনসিপির শীর্ষ নেতাদের সুরক্ষার জন্য নিজেদের এপিসিতে করে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়।

সংবাদ সম্মেলনে সেনাবাহিনীর পক্ষপাতিত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠলে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাজিম-উদ-দৌলা স্পষ্ট করে বলেন, দল বা পরিচয়ের ভিত্তিতে নয়, বরং কারও জীবন হুমকির মধ্যে থাকলে সেটিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েই ব্যবস্থা নেওয়া হয়। যেকোনো দল বা মতের মানুষ হোক না কেন, সেনাবাহিনীর দৃষ্টিভঙ্গি একই থাকবে।

তিনি বলেন, যে কোনো আকস্মিক পরিস্থিতিতে যদি কেউ মৃত্যুর মুখোমুখি হয়, তাহলে সেনাবাহিনী অবশ্যই তার পাশে থাকবে। গোপালগঞ্জের ঘটনায় প্রাণহানী খুবই দুঃখজনক উল্লেখ করে তিনি জানান, এই ঘটনার পেছনের কারণ ও প্রেক্ষাপট নির্ধারণে একজন বিচারপতির নেতৃত্বে তদন্ত কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া চলছে।

এ সময় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচিত সেনা কর্মকর্তা মেজর সাদিকের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি সেনাসদরের নজরে এসেছে এবং তা তদন্তাধীন। মেজর সাদিক বর্তমানে সেনাবাহিনীর হেফাজতে আছেন এবং তদন্তে দোষ প্রমাণিত হলে প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তদন্ত চলমান থাকায় এ বিষয়ে আর কিছু বলা এই মুহূর্তে উপযুক্ত হবে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে পার্বত্য চট্টগ্রামের সাম্প্রতিক সহিংসতা প্রসঙ্গে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল বলেন, ইউপিডিএফ, জেএসএসসহ বিভিন্ন গোষ্ঠীর চাঁদাবাজি ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এলাকাটিতে মাঝে মাঝে সংঘর্ষ হয়। সেনাবাহিনী সেখানে দায়িত্ব পালন করছে এবং এই সহিংসতা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে।

তবে তিনি মনে করিয়ে দেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে শুধু সেনাবাহিনী নয়, বেসামরিক প্রশাসন এবং পুলিশসহ আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠান সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। সবাই মিলে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করলে সহিংসতা আরও নিয়ন্ত্রণে আসবে এবং এটি অত্যন্ত জরুরি বলে উল্লেখ করেন তিনি।

কুকিচিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) এবং আরাকান আর্মির মধ্যে সম্ভাব্য যোগাযোগ নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আরাকান আর্মির বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায়, কেএনএফের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ অস্বাভাবিক নয়। উভয় গোষ্ঠীই একধরনের জাতিগত সংযোগ ও মানসিকতা নিয়ে কাজ করে, তাই অস্ত্র সহায়তা বা অন্যান্য সহযোগিতা থাকলেও তা অবাক হওয়ার বিষয় নয়।

তিনি জানান, কেএনএফ এখন আর আগের মতো সক্রিয় নেই। তাদের অনেক সদস্য সেনা অভিযানে হতাহত হয়েছে এবং তাদের বিভিন্ন বেইজ ও ট্রেনিং ক্যাম্প ধ্বংস করা সম্ভব হয়েছে। তিনি বলেন, শুরুর দিকে সংঘর্ষে সেনাবাহিনীর আটজন সদস্য নিহত হন, অসংখ্য আহত হন। কিন্তু গত কয়েক মাসে তেমন কোন ঘটনা ঘটেনি, যা প্রমাণ করে কেএনএফ এখন নাজুক অবস্থায় রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, একটি স্বাধীন দেশে কোনো বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীর আধিপত্য মেনে নেওয়া যায় না। সেনাবাহিনী তাদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে এবং বিশ্বাস করা হচ্ছে যে সব পক্ষ একত্রে কাজ করলে কেএনএফকে চূড়ান্তভাবে নির্মূল করা সম্ভব হবে।

repoter