ছবি: ইমরান খান, বুশরা বিবি ও সৌদি যুবরাজ সালমান। ছবি : সংগৃহীত
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের ক্ষমতাচ্যুতির পেছনে সৌদি আরবের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে বলে দাবি করেছেন তার স্ত্রী এবং প্রাক্তন ফার্স্ট লেডি বুশরা বিবি। তিনি এক ভিডিও বার্তায় এ অভিযোগ তুলেছেন।
শুক্রবার (২২ নভেম্বর) জিও নিউজের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, কারাবন্দি ইমরান খানের মুক্তির দাবিতে আয়োজিত বিক্ষোভে যোগদানের আহ্বান জানানোর সময় বুশরা বিবি বলেন, ২০২২ সালে ইমরানের নেতৃত্বাধীন সরকারের পতনের পেছনে সৌদি আরব সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে।
বুশরা বিবি জানান, ইমরান খান যখন মদিনা সফরে ছিলেন, তখন সৌদি কর্মকর্তারা তৎকালীন পাকিস্তানি সেনাপ্রধান জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়াকে ফোন করে ইমরানের ওপর অসন্তোষ প্রকাশ করেন। তারা প্রশ্ন তোলেন, "আপনারা কাকে নিয়ে এসেছেন? এমন ব্যক্তিত্বের লোক আমরা পছন্দ করি না।" এরপর থেকেই ইমরান খানের বিরুদ্ধে প্রচারণা শুরু হয় এবং তাকে "ইহুদির এজেন্ট" হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়।
ভিডিও বার্তায় বুশরা বিবি পিটিআই (পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ) কর্মী ও সমর্থকদের ২৪ নভেম্বর ইসলামাবাদে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, "ইমরান খান একটি বার্তা পাঠিয়েছেন। ২৪ নভেম্বরের বিক্ষোভে সবাইকে উপস্থিত থাকতে হবে। তারিখ পরিবর্তন করা হবে না। আমাদের প্রতিবাদ হবে সংবিধান এবং আইন অনুযায়ী।"
ইমরানের সমর্থকদের বিক্ষোভ ঠেকাতে দেশটির সরকার কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলোতে প্রবেশপথগুলো কনটেইনার দিয়ে বন্ধ করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। রাওয়ালপিন্ডিতে ৫০টি পয়েন্টে ব্লেডযুক্ত তার, কাঁটাতার এবং পণ্যবাহী কনটেইনার দিয়ে অবরোধ করার প্রস্তুতি চলছে। মোতায়েন করা হয়েছে বিপুলসংখ্যক পুলিশ সদস্য এবং এলিট ফোর্স।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বিক্ষোভকারীরা কোনো অবস্থাতেই রাজধানীতে প্রবেশ করতে পারবে না। প্রয়োজনে জলকামান ও রাবার বুলেট ব্যবহারের পরিকল্পনা রয়েছে, তবে সংঘর্ষ এড়ানোর চেষ্টা করা হবে।
বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে এরই মধ্যে ৩০ জনের বেশি পিটিআই কর্মীকে আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। পুলিশের ধারণা, বিক্ষোভকারীরা অস্ত্র নিয়ে আসতে পারে, যা জননিরাপত্তার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।
দেশটির প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম ডন জানিয়েছে, সরকারের এমন কঠোর পদক্ষেপের কারণে বিক্ষোভের আগে মোবাইল ইন্টারনেট সেবা বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
পাকিস্তানের রাজনীতি এখন উত্তাল। ইমরান খানের পক্ষে-বিপক্ষে এই পরিস্থিতি দেশটির রাজনৈতিক অঙ্গনে আরও অস্থিরতা তৈরি করতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
repoter