
ছবি: -সংগৃহীত ছবি
ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর ইলাতের একটি হোটেলের সামনে ড্রোন হামলার ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় চালানো এ হামলায় ড্রোনটি হোটেলের প্রবেশপথে আঘাত হানে। ঘটনার পরপরই ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনী ও জরুরি সেবাদানকারী স্বাস্থ্যকর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায়।
টাইমস অব ইসরায়েলের খবরে বলা হয়েছে, এ হামলার পেছনে ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের সম্পৃক্ততা থাকতে পারে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। ইলাত শহরটি ইসরায়েলের সর্বদক্ষিণ প্রান্তে অবস্থিত এবং পর্যটকদের কাছে এটি একটি জনপ্রিয় গন্তব্য। এ ধরনের হামলায় স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যটন নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
অন্যদিকে, ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের অব্যাহত বিমান ও ড্রোন হামলায় মানবিক বিপর্যয় আরও ঘনীভূত হচ্ছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, চলমান আক্রমণে এখন পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৫ হাজার ১৪১ জনে। শুধু গত ২৪ ঘণ্টাতেই প্রাণ হারিয়েছে আরও ৭৯ জন এবং আহত হয়েছে অন্তত ২২৮ জন।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ধ্বংসস্তূপের নিচে ও রাস্তায় অসংখ্য মরদেহ পড়ে রয়েছে যেগুলো উদ্ধারকর্মীরা এখনো উদ্ধার করতে পারছেন না। এতে প্রকৃত নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় মানবিক সহায়তা সংগ্রহ করতে গিয়ে ইসরায়েলি সেনাদের গুলিতে আরও নয়জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে অন্তত ৩৩ জন। চলতি বছরের ২৭ মে থেকে এখন পর্যন্ত একইভাবে ২ হাজার ৫১৩ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, আর আহত হয়েছে ১৮ হাজার ৪১৪ জনেরও বেশি।
গাজায় খাদ্য ও ওষুধের সংকটও দিন দিন চরম আকার ধারণ করছে। মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, গত ২৪ ঘণ্টায় অনাহার ও অপুষ্টিতে মারা গেছে চারজন, যার মধ্যে একটি শিশু রয়েছে। অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া অবরোধ ও মানবিক সংকটের কারণে এখন পর্যন্ত মোট ৪৩৫ জন ফিলিস্তিনি অনাহারে মারা গেছেন। এদের মধ্যে ১৪৭ জন শিশু।
গাজার চলমান পরিস্থিতি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। মানবাধিকার সংস্থাগুলো বারবার সতর্ক করছে যে এ ধরনের হামলা ও অবরোধ সাধারণ মানুষের জন্য ভয়াবহ দুর্ভোগ বয়ে আনছে এবং মানবিক বিপর্যয়ের মাত্রা বাড়াচ্ছে। তা সত্ত্বেও হামলা ও সহিংসতা অব্যাহত রয়েছে।
এদিকে, ইলাতের হোটেলে ড্রোন হামলার ঘটনায় ইসরায়েল সরকার এখনও আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায়নি। তবে স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, সামরিক বাহিনী এ হামলার সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করতে তদন্ত শুরু করেছে। ইসরায়েলের দাবি, সীমান্তের বাইরে থেকে আসা এসব আক্রমণ তাদের জাতীয় নিরাপত্তার ওপর নতুন ধরনের চাপ সৃষ্টি করছে।
গাজা ও ইসরায়েলের সাম্প্রতিক ঘটনাবলি মধ্যপ্রাচ্যের সংঘাত পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। একদিকে ইলাত শহরে পর্যটনকেন্দ্রের সামনে হামলা, অন্যদিকে গাজায় হাজারো মানুষের প্রাণহানি—সব মিলিয়ে অঞ্চলের স্থিতিশীলতা আরও অনিশ্চিত হয়ে উঠছে।
repoter