ঢাকা,  শুক্রবার
১৯ ডিসেম্বর ২০২৫ , ০৩:৪২ মিনিট

Donik Barta

শিরোনাম:

* জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে মানবতাবিরোধী অপরাধ: ওবায়দুল কাদেরসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দাখিল * গুলিবিদ্ধ শরিফ ওসমান হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক, দেশে–বিদেশে উদ্বেগ * ঢাকা–দিল্লি সম্পর্কে নতুন করে উত্তেজনা, আজ চালু থাকছে ভারতীয় ভিসা কেন্দ্র * ৬৬ হাজার কোটি টাকার সম্পদ জব্দ, বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ উদ্ধারে গতি আনছে সরকার * যুক্তরাষ্ট্রের ‘সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধ’ ফিরিয়ে আনছেন ট্রাম্প, সমালোচনার কেন্দ্রে ভেনেজুয়েলা অভিযান * পাবনার বেড়ায় স্পিডবোটে এসে বাজারে ডাকাতি, ব্যবসায়ীরা আতঙ্কিত * যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভেনেজুয়েলা অভিযান: মাদুরো সরকারের ওপর চাপ বাড়ছে * ট্রাম্পের ২৮ দফা শান্তি পরিকল্পনা: ইউক্রেন–রাশিয়া যুদ্ধ বন্ধে নতুন জটিলতা * গুম ও মানবতাবিরোধী অভিযোগে ১৩ সেনা কর্মকর্তা ট্রাইব্যুনালে * বিএনপির ৪০টির বেশি আসনে মনোনয়নসংক্রান্ত অসন্তোষ, কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ব্যস্ত সমাধান খুঁজতে

হিলি বাজারে আলু-পেঁয়াজ-ডিমের দাম বাড়লেও জিরার দামে স্বস্তি

repoter

প্রকাশিত: ০৭:৫৮:৩৩অপরাহ্ন , ০৪ আগস্ট ২০২৫

আপডেট: ০৭:৫৮:৩৩অপরাহ্ন , ০৪ আগস্ট ২০২৫

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: ছবি: সংগৃহীত

দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলার হিলি বাজারে আবারও নিত্যপণ্যের দামে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। কয়েক দিনের ব্যবধানে আলু, পেঁয়াজ, আদা ও ডিমের দাম বেড়ে যাওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ ও নিম্ন আয়ের মানুষ। তবে এই বাজারেই কিছুটা স্বস্তির খবর মিলেছে জিরার দামে। ভারত থেকে আমদানি বাড়ায় হিলি বাজারে মসলা জাতীয় এই পণ্যের দাম অনেকটাই কমে এসেছে।

সোমবার হিলি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, দুদিন আগেও যেখানে এক কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছিল ৫০ টাকা দরে, এখন তা ৭০ টাকায় উঠেছে। একইভাবে আদার দাম ১০০ টাকা থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৬০ টাকায়। আলুর কেজি প্রতি দাম ৪ টাকা বেড়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ১৮ টাকায়। ডিমের দামও বেড়েছে চোখে পড়ার মতো—৩০টি ডিমের হালি এখন বিক্রি হচ্ছে ৩২০ টাকায়, যা মাত্র দুদিন আগেও ছিল ২৮০ টাকা।

নিত্যপ্রয়োজনীয় এসব পণ্যের আকস্মিক মূল্যবৃদ্ধিতে সবচেয়ে বেশি ভুগছেন দিনমজুর, রিকশাচালক, নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষজন। বাজারে পেঁয়াজ কিনতে আসা রফিক নামের এক ক্রেতা বলেন, “দুই দিন আগেই এক কেজি পেঁয়াজ কিনলাম ৫০ টাকায়, আজ সেটাই ৭০ টাকা। আমাদের তো আয় বাড়ে না, তাহলে এই দাম কিভাবে সামলাবো?” তার মতে, সরকার যদি দ্রুত পদক্ষেপ না নেয়, তাহলে এই পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে।

ডিম কিনতে আসা আজাদ বলেন, “আমরা মাছ-মাংস কম খেতে পারি, কিন্তু ডিমটা কিনে খাই। এখন তো সেটার দামও নাগালের বাইরে। ডিমের দাম কমলে আমাদের মতো গরিব মানুষের উপকার হয়।”

আলু ও আদার দাম নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন আলী হাসান। তিনি জানান, “১৪ টাকায় যে আলু কিনেছি দুদিন আগে, আজ সেটা কিনতে হলো ১৮ টাকায়। আর আদার দাম তো একেবারে আকাশ ছুঁয়েছে—৯০ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ১৫০ টাকা। সবকিছুর দাম হঠাৎ করে বেড়ে গেছে।”

ব্যবসায়ীরাও এই মূল্যবৃদ্ধির পেছনে পণ্যের সংকট এবং সরবরাহ সমস্যাকেই দায়ী করছেন। হিলি বাজারের ব্যবসায়ী শাকিল আহমেদ বলেন, “দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ কমে গেছে। আগে মোকাম থেকে ৫০ টাকায় কিনতাম, এখন সেটা ৬০-৬২ টাকা কেজিতে কিনতে হচ্ছে। আমরাও তো লোকসান দিতে পারি না, তাই দাম বেশি নিতে হচ্ছে।”

তবে বাজারে কিছুটা আশার খবরও আছে। যে সময় অন্যান্য নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে, ঠিক সেই সময়ই জিরার দাম ক্রমেই কমছে। তিন সপ্তাহ আগেও এক কেজি জিরা বিক্রি হচ্ছিল ৬০০ টাকা দরে, এখন তা কমে দাঁড়িয়েছে ৫৩০ টাকায়। গত বছর এই সময় একই জিরা বিক্রি হয়েছিল ১,০০০ থেকে ১,১০০ টাকা কেজি দরে।

হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে বিপুল পরিমাণ জিরা আমদানি হওয়ায় বাজারে সরবরাহ বেড়েছে, ফলে দামও স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। মসলা কিনতে আসা মাহবুব নামে এক ক্রেতা জানান, “দুই মাস আগেও জিরা কিনেছি ৬০০ টাকায়। আজ সেটাই ৫৩০ টাকায় কিনলাম। দাম কমেছে দেখে এক কেজি কিনে নিলাম।”

খুচরা মসলা বিক্রেতা আওলাদ হোসেন শাওন জানান, “বর্তমানে হিলি বন্দর দিয়ে প্রচুর জিরা আসছে। আমদানি এখন স্বাভাবিক রয়েছে। তবে ক্রেতার সংখ্যা কিছুটা কম থাকায় বিক্রিও কম হচ্ছে। সব মিলিয়ে বাজারে জিরার দাম অনেকটাই পড়ে গেছে।”

সবমিলিয়ে হিলি বাজারে একদিকে যেমন অধিকাংশ নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি সাধারণ মানুষের জীবনকে কঠিন করে তুলছে, অন্যদিকে জিরার দামে যে স্বস্তির পরশ মিলেছে, তা কিছুটা হলেও স্বাভাবিক বাজার পরিস্থিতির আশা জাগাচ্ছে। তবে টেকসই সমাধানের জন্য সরকার ও সংশ্লিষ্ট মহলের পক্ষ থেকে কার্যকর বাজার নিয়ন্ত্রণ এবং পণ্যের সরবরাহ ব্যবস্থাপনায় শক্ত পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানাচ্ছেন ভোক্তারা।

repoter