
ছবি: -সংগৃহীত ছবি
পিআর চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা অগণতান্ত্রিক পদক্ষেপ বলে মন্তব্য বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্যের
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেছেন, গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে জনগণের ইচ্ছা ও অংশগ্রহণই মুখ্য। কেবল পিআর (প্রোপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন) প্রবর্তনের দাবিকে গণতন্ত্র শক্তিশালী করার কার্যকরী উপায় হিসেবে দেখা যাবে না। তিনি মনে করেন, জনগণের ইচ্ছার বাইরে গিয়ে কোনো দাবি চাপিয়ে দেওয়া হলে তা গণতান্ত্রিক চর্চার পরিপন্থী হবে।
শুক্রবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় এক সম্মেলনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন। এ সময় তিনি নির্বাচন সামনে রেখে পিআর ব্যবস্থাকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন মহলের আন্দোলন ও কর্মসূচি প্রসঙ্গে তার অবস্থান তুলে ধরেন।
ডা. জাহিদ বলেন, “গণতান্ত্রিক অধিকারের জায়গা থেকে কেউ পিআর চাইতে পারে, এটা স্বাভাবিক। কিন্তু এটা আবশ্যকই হতে হবে—এমন ধারণা চাপিয়ে দেওয়া মোটেও গণতান্ত্রিক নয়। জনগণকে পাশ কাটিয়ে কোনো দলীয় এজেন্ডা চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হবে।”
তিনি আরও বলেন, “জনগণ যদি কিছু না চায়, তবে জনগণের নামে সেটিকে চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা স্বৈরাচার পুনঃপ্রতিষ্ঠার পথকে প্রশস্ত করতে পারে। এতে নির্বাচন বিলম্বিত করারও অপচেষ্টা লক্ষ্য করা যাচ্ছে, যা গণতন্ত্রের জন্য শুভ নয়।”
বিএনপির এ নেতা মনে করেন, রাজনৈতিক দলগুলোর দায়িত্ব হলো জনগণের মতামতকে প্রাধান্য দেওয়া। জনগণের স্বার্থ বিবেচনা না করে নিজেদের সুবিধা ও এজেন্ডা বাস্তবায়নের চেষ্টা গণতন্ত্রকে দুর্বল করে। তিনি বলেন, “দেশের সাধারণ মানুষই এ ধরনের চাপিয়ে দেওয়া মনোভাব প্রতিহত করবে। কারণ জনগণই গণতন্ত্রের প্রকৃত মালিক, তাদের ওপর কোনো কিছু চাপিয়ে দিলে তা দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে না।”
তিনি তার বক্তব্যে এও উল্লেখ করেন যে, পিআরকে ঘিরে যেসব রাজনৈতিক তৎপরতা বাড়ছে, তার পেছনে প্রকৃত উদ্দেশ্য গণতান্ত্রিক উন্নয়ন নয়, বরং নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে বিলম্বিত করা। “নির্বাচনের প্রক্রিয়া এগিয়ে চললেও, কিছু মহল ইচ্ছাকৃতভাবে এ বিতর্ক তৈরি করছে, যাতে নির্বাচন নিয়ে সংশয় সৃষ্টি হয়। কিন্তু জনগণ এসব কৌশল বোঝে এবং তারাই চূড়ান্তভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুলবে,” বলেন ডা. জাহিদ।
তার মতে, গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করতে হলে সবার আগে প্রয়োজন মুক্ত, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন। জনগণ যাতে অবাধে ভোট দিতে পারে, সেটাই হবে গণতন্ত্র রক্ষার মূল পথ। তিনি বলেন, “গণতন্ত্র শক্তিশালী হবে কেবল জনগণের সরাসরি অংশগ্রহণের মাধ্যমে। দলীয় বা বিশেষ কোনো গোষ্ঠীর স্বার্থে কোনো কৃত্রিম প্রক্রিয়া চাপিয়ে দিলে তা সফল হবে না।”
সম্মেলনে ডা. জাহিদ হুঁশিয়ারি দেন যে, গণতন্ত্রের নামে কোনো ভিন্ন এজেন্ডা বাস্তবায়নের চেষ্টা করলে সাধারণ জনগণ তা রুখে দেবে। তিনি আহ্বান জানান, রাজনৈতিক দলগুলো যেন জনগণের অভিমতকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয় এবং নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের মত প্রকাশের সুযোগ নিশ্চিত করে।
তিনি উপসংহারে বলেন, “গণতন্ত্রের জন্য সবচেয়ে জরুরি হলো জনগণের আস্থা অর্জন করা। জনগণ না চাইলে কোনো পদ্ধতি টেকসই হবে না। তাই গণতন্ত্রের প্রকৃত শক্তি হলো জনগণের সিদ্ধান্ত ও অংশগ্রহণ।”
repoter