ছবি: ছবি: সংগৃহীত
"ফ্যাসিবাদবিরোধী ঐক্য বজায় রেখে ইনসাফভিত্তিক সমাজ ও জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার ডাক বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের"
বাংলাদেশের ইতিহাসের একটি রক্তাক্ত অধ্যায়—জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থান। সেই অধ্যায়ের শহীদদের রক্তঋণ পরিশোধে জনগণের সরকার ও ইনসাফভিত্তিক সমাজ গঠনের এখনই উপযুক্ত সময় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
মঙ্গলবার (১ জুলাই) বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত ‘গণঅভ্যুত্থান ২০২৪: জাতীয় ঐক্য ও গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তারেক রহমান বলেন, "জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থান ছিল একটি যুগান্তকারী ঘটনা। দীর্ঘ দেড় দশকেরও বেশি সময় ধরে জনগণের ওপর চেপে বসা ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে অসংখ্য মানুষ শহীদ হয়েছেন, নিখোঁজ হয়েছেন, গুম-খুন ও নিপীড়নের শিকার হয়েছেন। এই আত্মত্যাগ বৃথা যেতে দেওয়া যায় না। শহীদদের ঋণ পরিশোধ করতে হবে একটি জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে।"
তিনি আরও বলেন, "ফ্যাসিবাদমুক্ত এক নতুন পরিবেশে আজ একটি আধুনিক, ইনসাফভিত্তিক ও প্রত্যাশিত গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। আমাদের রাজনীতির মূল লক্ষ্য এখন নিরাপদ কর্মপরিবেশ ও নতুন কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা। এই রাজনীতি শুধু অঙ্গীকারের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বাস্তবায়নের মাধ্যমে দৃষ্টান্ত স্থাপন করাই আমাদের লক্ষ্য।"
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জোর দিয়ে বলেন, “জাতীয় স্বার্থে ও জাতীয় ইস্যুতে রাজনৈতিক ঐক্যমত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যেন ভবিষ্যতে কোনো অপশক্তি আর বাংলাদেশকে তাঁবেদার রাষ্ট্রে পরিণত করার দুঃসাহস না দেখায়, যেন কারো সাহস না হয় জনগণের রক্ত ও গণতন্ত্রকে পদদলিত করার। এই লক্ষ্যে গড়ে উঠেছে ফ্যাসিবাদবিরোধী ঐক্য, যা আগামীতেও অটুট থাকবে।”
তিনি মনে করিয়ে দেন, "বাংলাদেশ বহু মানুষের ত্যাগ-তিতীক্ষায় নতুন দিশা পেয়েছে। শহীদদের রক্তে গড়া সেই ভিত্তিকে সম্মান জানিয়ে আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে ন্যায়ভিত্তিক সমাজ গড়ে তোলা, যেখানে জনগণের ক্ষমতা প্রকৃত অর্থেই জনগণের হাতে থাকবে।"
আলোচনা সভায় দলের শীর্ষস্থানীয় নেতারা ছাড়াও বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, নাগরিক সমাজ ও পেশাজীবী সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। বক্তারা বলেন, গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে দেশে যে গণচেতনার উন্মেষ ঘটেছে, তাকে রাজনীতির শক্তিতে রূপান্তর করতে হবে।
সভায় আরও বলা হয়, জনগণের অধিকার ও স্বাধীনতা রক্ষায় জবাবদিহিমূলক শাসনব্যবস্থা ছাড়া বিকল্প কিছু নেই। এই লক্ষ্যে প্রয়োজন জাতীয় ঐক্য, যার নেতৃত্বে চলবে গণতন্ত্র ও ন্যায়ের অভিযাত্রা।
তারেক রহমানের বক্তব্যে বারবার উঠে আসে শহীদদের আত্মত্যাগের কথা এবং তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা। তিনি বলেন, "এই শহীদদের স্বপ্ন ছিল একটি ইনসাফপূর্ণ সমাজ, যেখানে সকল নাগরিকের সমান অধিকার থাকবে। সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করাই হবে শহীদদের প্রতি প্রকৃত শ্রদ্ধা।"
শেষে তিনি সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, "গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার এবং জনগণের ক্ষমতায়নের পথেই হবে বাংলাদেশে একটি সত্যিকারের জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা। সময় এখনই—শহীদদের ঋণ শোধের, একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ার।"
repoter

