গণধর্ষণের পর কিশোরীর মৃত্যু, হাতিরঝিল থেকে বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার
repoter
প্রকাশিত: ০৮:২৫:১৮অপরাহ্ন , ০৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
আপডেট: ০৮:২৫:১৮অপরাহ্ন , ০৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
ছবি: ছবি: সংগৃহীত
# **গণধর্ষণের পর কিশোরীর মৃত্যু, হাতিরঝিল থেকে বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার**
## **দুইজন গ্রেপ্তার, বাকিদের ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত**
ঢাকা, সোমবার – রাজধানীর হাতিরঝিল থেকে এক কিশোরীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ১৩ বছর বয়সী ওই কিশোরী রাজধানীর দক্ষিণখানের একটি স্কুলের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। পুলিশ জানায়, পাঁচজন মিলে তাকে অপহরণ করে গণধর্ষণ করার পর হত্যা করা হয়। পরে মরদেহ বস্তাবন্দি করে রাস্তার পাশে ফেলে দেওয়া হয়।
এ ঘটনায় রবিন হোসেন (৩২) ও রাব্বী মৃধা (২৬) নামে দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত ৩০ জানুয়ারি গাজীপুরের শ্রীপুর থেকে তাদের আটক করা হয়।
দক্ষিণখান থানা সূত্রে জানা যায়, গত ১৬ জানুয়ারি বিকেলে কেনাকাটার কথা বলে বাসা থেকে বেরিয়ে নিখোঁজ হয় ওই কিশোরী। পরিবারের পক্ষ থেকে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তার সন্ধান মেলেনি। ১৯ জানুয়ারি তার বাবা দক্ষিণখান থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় জানা যায়, ১৬ জানুয়ারি বিকেলে দক্ষিণখানের জয়নাল মার্কেটের সামনে থেকে কয়েকজন ব্যক্তি কিশোরীকে একটি প্রাইভেটকারে তুলে নেয়। এ তথ্য পাওয়ার পর তার বাবা ২৭ জানুয়ারি দক্ষিণখান থানায় অপহরণের মামলা দায়ের করেন।
পুলিশ মামলার তদন্তে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় কিশোরীর মোবাইল ফোন ট্র্যাক করে ৩০ জানুয়ারি গাজীপুরের শ্রীপুর থেকে রবিন হোসেন ও রাব্বী মৃধাকে গ্রেপ্তার করে। ৩১ জানুয়ারি আদালতে তাদের রিমান্ড আবেদন করলে দুদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃতরা স্বীকার করে যে, ফেসবুকের মাধ্যমে রবিন কিশোরীর সঙ্গে পরিচিত হয় এবং তাকে কৌশলে ফাঁদে ফেলে। পরে তাকে মহাখালীর একটি বাসায় নিয়ে যায়, যেখানে পাঁচজন মিলে তাকে ধর্ষণ করে। ধর্ষণের সময় কিশোরীর হাত-পা বাঁধা ছিল এবং মুখে কাপড় গোঁজা ছিল। যৌন নির্যাতনের ফলে সে মারা গেলে, গভীর রাতে মরদেহ বস্তাবন্দি করে মহাখালী থেকে রিকশায় করে হাতিরঝিলের রাস্তার পাশে ফেলে দেওয়া হয়।
ডিএমপির উত্তরা বিভাগের দক্ষিণখান জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) মো. নাসিম-এ-গুলশান জানান, মোবাইল ফোন ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটিত হয়। রবিনের ফোন নম্বর বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ঘটনার দিনই কিশোরীর সঙ্গে তার যোগাযোগ হয়েছিল। এর সূত্র ধরেই রবিনকে গাজীপুর থেকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং পরে রাব্বীকেও আটক করা হয়। প্রথমে তারা হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে কোনো তথ্য দিতে অস্বীকার করলেও দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদের পর সব স্বীকার করে।
পুলিশ জানায়, রবিন পেশায় একজন গাড়িচালক, আর রাব্বীর কোনো নির্দিষ্ট পেশা নেই। অপরাধে জড়িত বাকি তিনজনকেও চিহ্নিত করা হয়েছে এবং তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এ ঘটনায় কিশোরীর পরিবার বিচারের দাবি জানিয়েছে এবং অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আহ্বান করেছে।