
ছবি: প্রতীকী ছবি
পাকিস্তানের গুজরানওয়ালায় ঘুমন্ত বাবাকে দড়ি দিয়ে বেঁধে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে দুই কিশোরীর বিরুদ্ধে। নিহত ব্যক্তি আলী আকবর (৫০) ছিলেন তিন সন্তানের জনক এবং তিনবার বিবাহিত। মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) স্থানীয় পুলিশের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে জিও নিউজ। ঘটনার শিকার আলী আকবর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এ নিয়ে থানায় ফৌজদারি দণ্ডবিধির ৩০২, ৩২৪ এবং ৩৪ ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, আলী আকবর তার দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্ত্রী এবং তাদের সন্তানদের সঙ্গে একটি ভাড়া বাড়িতে বসবাস করতেন। আলীর প্রথম স্ত্রী অনেক আগেই মারা গিয়েছেন। তার পরিবারে মোট ১০ সন্তান রয়েছে। মামলার বাদী আলী আকবরের বোন অভিযোগ করেছেন, তার ভাইয়ের দ্বিতীয় এবং তৃতীয় স্ত্রীরা একসঙ্গে ষড়যন্ত্র করে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন। তাদের সঙ্গে এই হত্যাকাণ্ডে অংশগ্রহণ করে দুই কিশোরী।
অভিযোগে আরও বলা হয়, আলী আকবরকে প্রথমে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অচেতন করা হয়। পরে তার শরীরে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। পেট্রোল সংগ্রহের জন্য বাড়িতে থাকা মোটরসাইকেল থেকে তেল বের করা হয়। ঘটনার পর এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয় এবং পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায়।
পুলিশ ইতোমধ্যেই দুই কিশোরীকে গ্রেপ্তার করেছে। তাদের একজনের বয়স ১৬ বছর এবং অপরজনের বয়স ১২ বছর। জিজ্ঞাসাবাদে দুই কিশোরী পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে যে তারা ঘুমন্ত অবস্থায় বাবার শরীরে আগুন দিয়েছে। জানা গেছে, ১৬ বছরের কিশোরী আকবরের তৃতীয় স্ত্রীর আগের পক্ষের মেয়ে এবং ১২ বছরের কিশোরী তার দ্বিতীয় স্ত্রীর সন্তান।
পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাটি পারিবারিক কলহের জেরে ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আলী আকবরের একাধিক বিবাহ এবং পারিবারিক সম্পর্কের টানাপোড়েন দীর্ঘদিন ধরে তার পরিবারের সদস্যদের মধ্যে দ্বন্দ্ব তৈরি করেছিল। ঘটনার পেছনের প্রকৃত কারণ খুঁজে বের করতে পুলিশ তদন্ত অব্যাহত রেখেছে।
এদিকে, এই নির্মম হত্যাকাণ্ড এলাকাবাসীর মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। অনেকেই ঘটনাটিকে সামাজিক ও পারিবারিক মূল্যবোধের অবক্ষয়ের প্রতিফলন হিসেবে দেখছেন। আলী আকবরের আত্মীয়রা তার হত্যার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেছেন। পুলিশ জানিয়েছে, নিহতের স্ত্রীরা এবং অন্যান্য সন্দেহভাজনদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
এই হত্যাকাণ্ডে পারিবারিক কলহ এবং অবহেলার জেরে কীভাবে একটি পরিবার ধ্বংসের মুখে পড়তে পারে, তা নতুন করে সামনে এসেছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দ্রুত তদন্ত শেষ করে দায়ীদের আইনের আওতায় আনতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
repoter