ছবি: ছবি: সংগৃহীত
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বলেছেন, একটি সুখী, সমৃদ্ধ ও ন্যায়ভিত্তিক বাংলাদেশ গড়তে হলে ফ্যাসিবাদী শাসনব্যবস্থার মূলোৎপাটন করে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের আদর্শ বাস্তবায়ন করতে হবে।
সোমবার ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান দিবস’ উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে রাষ্ট্রপতি বলেন, জুলাইয়ের এই ঐতিহাসিক আন্দোলন ছিল দীর্ঘদিনের শোষণ, দুর্নীতি, লুটপাট, নিপীড়ন, গুম-খুন, অপহরণ ও ভোটাধিকার হরণের বিরুদ্ধে তরুণ প্রজন্ম এবং সাধারণ মানুষের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ। এ আন্দোলনের মূল লক্ষ্য ছিল বৈষম্যমূলক ফ্যাসিবাদী শাসনব্যবস্থার অবসান ঘটিয়ে জনগণের ক্ষমতায়ন, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এবং গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা।
রাষ্ট্রপতি বলেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থান একটি যুগান্তকারী ঐতিহাসিক ঘটনা, যা জনগণের শক্তি, সাহস ও প্রতিরোধের এক অনন্য নজির। তিনি বলেন, ২০২৪ সালের এই দিনে ছাত্র-শ্রমিক ও জনগণের সম্মিলিত আন্দোলনে দেশ ফ্যাসিবাদী দুঃশাসনের শৃঙ্খল ভেঙে চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করে। এই বিজয়ের মাধ্যমে গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হয়।
রাষ্ট্রপতি তার বাণীতে এই আন্দোলনে শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান এবং তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন। সেইসঙ্গে তিনি স্মরণ করেন আহত, পঙ্গুত্ব বরণকারী এবং দৃষ্টিশক্তি হারানো সাহসী যোদ্ধাদের, যারা স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে নিজেদের সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করেছেন। রাষ্ট্রপতি বলেন, এদের অবদান জাতি চিরকাল শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে।
তিনি বলেন, এই আন্দোলনের শহীদদের পরিবার এবং আহতদের প্রতি ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের একটি পবিত্র দায়িত্ব। সেই দায়িত্ব পালনে রাষ্ট্র অঙ্গীকারবদ্ধ এবং সেই অনুযায়ী যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে।
রাষ্ট্রপতি আরও বলেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পরবর্তীকালে রাষ্ট্র একটি বৃহৎ সংস্কার প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে এগিয়ে চলেছে। এই সংস্কারের মাধ্যমে জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটবে এবং একটি সত্যিকারের গণতান্ত্রিক ও মানবিক রাষ্ট্র গড়ে উঠবে।
তিনি আশা প্রকাশ করেন, এই গণ-অভ্যুত্থান যে চেতনা, যে স্বপ্ন, তা যেন কেবল স্মরণে সীমাবদ্ধ না থেকে বাস্তবায়নের মাধ্যমে জাতির ভবিষ্যতের ভিত্তি হয়ে ওঠে। ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে এই ঐতিহাসিক সংগ্রাম গণতন্ত্রের নতুন পথ নির্মাণ করেছে, এবং তা অব্যাহত থাকলে দেশ একটি ন্যায়, সাম্য ও মানবিকতাভিত্তিক বাংলাদেশে পরিণত হবে।
‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান দিবস’ উপলক্ষে আয়োজিত সকল কর্মসূচির সফলতা কামনা করে রাষ্ট্রপতি বলেন, এই দিনটি আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও ন্যায়বিচারের পথে এগিয়ে চলার অনুপ্রেরণা জোগাক।
রাষ্ট্রপতির এই বক্তব্যে স্পষ্ট হয়, তিনি শুধু অতীত স্মরণ করছেন না, বরং ভবিষ্যতের জন্য একটি গণতান্ত্রিক, দায়িত্বশীল ও ন্যায়ের রাষ্ট্রব্যবস্থা গঠনের দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করছেন। জুলাইয়ের চেতনা নতুন করে দেশের ভবিষ্যতের পথনির্দেশনা হিসেবে প্রতিফলিত হচ্ছে তার কণ্ঠে।
repoter




