ঢাকা,  শুক্রবার
১৯ ডিসেম্বর ২০২৫ , ০৩:৩৯ মিনিট

Donik Barta

শিরোনাম:

* জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে মানবতাবিরোধী অপরাধ: ওবায়দুল কাদেরসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দাখিল * গুলিবিদ্ধ শরিফ ওসমান হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক, দেশে–বিদেশে উদ্বেগ * ঢাকা–দিল্লি সম্পর্কে নতুন করে উত্তেজনা, আজ চালু থাকছে ভারতীয় ভিসা কেন্দ্র * ৬৬ হাজার কোটি টাকার সম্পদ জব্দ, বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ উদ্ধারে গতি আনছে সরকার * যুক্তরাষ্ট্রের ‘সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধ’ ফিরিয়ে আনছেন ট্রাম্প, সমালোচনার কেন্দ্রে ভেনেজুয়েলা অভিযান * পাবনার বেড়ায় স্পিডবোটে এসে বাজারে ডাকাতি, ব্যবসায়ীরা আতঙ্কিত * যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভেনেজুয়েলা অভিযান: মাদুরো সরকারের ওপর চাপ বাড়ছে * ট্রাম্পের ২৮ দফা শান্তি পরিকল্পনা: ইউক্রেন–রাশিয়া যুদ্ধ বন্ধে নতুন জটিলতা * গুম ও মানবতাবিরোধী অভিযোগে ১৩ সেনা কর্মকর্তা ট্রাইব্যুনালে * বিএনপির ৪০টির বেশি আসনে মনোনয়নসংক্রান্ত অসন্তোষ, কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ব্যস্ত সমাধান খুঁজতে

এনআইডি সংশোধন আবেদন বাতিল হওয়াদের ফের সুযোগ দিচ্ছে নির্বাচন কমিশন

repoter

প্রকাশিত: ০৮:৩৮:০৩অপরাহ্ন , ৩০ আগস্ট ২০২৫

আপডেট: ০৮:৩৮:০৩অপরাহ্ন , ৩০ আগস্ট ২০২৫

-সংগৃহীত ছবি

ছবি: -সংগৃহীত ছবি

যাদের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সংশোধনের আবেদন বাতিল হয়েছিল, তারা আবারও আবেদন করার সুযোগ পাচ্ছেন। এ সুযোগ আগামী ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। এনআইডি সহকারী পরিচালক (বৈধ ও সঠিকতা যাচাই) মুহা. সরওয়ার হোসেন মাঠ কর্মকর্তাদের কাছে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা পাঠিয়েছেন।

নির্দেশনায় জানানো হয়, গত বছরের ২৯ ডিসেম্বর থেকে চলতি বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত একটি বিশেষ ক্র্যাশ প্রোগ্রাম পরিচালনা করা হয়েছিল। সেই প্রোগ্রামের আওতায় বিপুল সংখ্যক এনআইডি সংশোধনের আবেদন নিষ্পত্তি করা হয়। এ ছাড়া, ‘ঘ’ ক্যাটাগরির জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধনের আবেদন নিষ্পত্তির জন্য গত ২১ জুলাই থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত আরেকটি ক্র্যাশ প্রোগ্রাম চলছে।

প্রথম দফার ক্র্যাশ প্রোগ্রামে যেসব আবেদন বাতিল হয়েছিল, সেগুলোর মধ্যে অনেক ক্ষেত্রে আবেদনকারীদের সঠিক সিদ্ধান্ত প্রতিফলিত হয়নি। বাতিল হওয়ার পেছনে বিভিন্ন কারণ উল্লেখ করা হয়েছে। যেমন—প্রয়োজনীয় দলিলাদি চেয়ে পাঠানোর পর নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তা জমা না দেওয়া, আবেদন যথাযথভাবে দাখিল না করা বা অসম্পূর্ণ তথ্য দেওয়া, চাহিত সংশোধন জমা দেওয়া দলিলাদির সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ হওয়া, সাক্ষাৎকারের জন্য ডাকার পর যথাসময়ে উপস্থিত না থাকা কিংবা সম্পূর্ণ অনুপস্থিত থাকা, অথবা সংশ্লিষ্ট এনআইডিধারীর নিজস্ব আবেদনের প্রেক্ষিতে বাতিল হওয়া। এসব কারণে অনেকের আবেদন বাতিল হলেও তাদের সঠিক সিদ্ধান্ত প্রক্রিয়ায় প্রতিফলিত হয়নি বলে কমিশনের অভ্যন্তরীণ মূল্যায়নে দেখা গেছে।

এ প্রেক্ষাপটে নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যাদের আবেদন বাতিল হয়েছিল তারা পুনরায় আবেদন করতে পারবেন। নতুন করে আবেদন করলে সেটি আর উচ্চতর কোনো ক্যাটাগরিতে স্থানান্তর করা হবে না। বরং পূর্বের যেই ক্যাটাগরিতে আবেদন বাতিল হয়েছিল, সেই একই ক্যাটাগরিতে অন্তর্ভুক্ত করে প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। এ কার্যক্রম চলমান থাকবে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত।

নির্বাচন কমিশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এ সিদ্ধান্তের মাধ্যমে আবেদনকারীরা আরেকটি সুযোগ পাচ্ছেন। ফলে যেসব মানুষ বিভিন্ন কারণে তাদের তথ্য সংশোধনের সুযোগ হারিয়েছিলেন, তারা এখন আবারও সমস্যার সমাধান করতে পারবেন। বিশেষ করে যারা যথাসময়ে সাক্ষাৎকারে উপস্থিত হতে পারেননি কিংবা প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিতে ব্যর্থ হয়েছেন, তাদের জন্য এটি কার্যকর হবে।

কমিশনের তথ্যমতে, গত ছয় মাসে পরিচালিত ক্র্যাশ প্রোগ্রামের মাধ্যমে প্রায় ৯ লাখ এনআইডি সংশোধন সংক্রান্ত আবেদন নিষ্পত্তি করা হয়েছে। এটি কমিশনের ইতিহাসে অন্যতম বৃহৎ কার্যক্রম হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। তবুও এত সংখ্যক আবেদন প্রক্রিয়া করার সময়ে কিছু ভুল সিদ্ধান্ত কিংবা আবেদনকারীর অসতর্কতার কারণে অনেক আবেদন বাতিল হয়ে যায়। এখন পুনরায় সুযোগ দেওয়ার মাধ্যমে সেই সমস্যাগুলো সমাধান হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা আরও বলেন, এনআইডি একটি গুরুত্বপূর্ণ নাগরিক দলিল, যা জীবনের প্রায় সব ক্ষেত্রে প্রয়োজন হয়। তাই এনআইডিতে কোনো ভুল থাকলে তা সংশোধনের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হওয়া একজন নাগরিকের জন্য বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। এ কারণে বাতিল হওয়া আবেদনকারীদের ফের সুযোগ দেওয়ার এ সিদ্ধান্ত যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ।

প্রসঙ্গত, ‘ঘ’ ক্যাটাগরির আওতায় সাধারণত জটিল ও বিতর্কিত তথ্য সংশোধনের আবেদনগুলো নিষ্পত্তি করা হয়। এ ধরনের আবেদনে যাচাই-বাছাইয়ের জন্য অধিক সময় ও বিশেষ নজর দেওয়া হয়। বর্তমানে চলমান প্রোগ্রামের আওতায় এসব আবেদনও দ্রুত নিষ্পত্তির চেষ্টা করছে নির্বাচন কমিশন।

এদিকে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যাতে তারা পুনরায় আবেদনকারীদের যথাযথভাবে সহায়তা করেন। নতুন আবেদনকারীরা যেন কোনো ভোগান্তির শিকার না হন এবং নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কার্যক্রম সম্পন্ন হয়, সে বিষয়েও নজর রাখতে বলা হয়েছে।

অন্যদিকে, আবেদনকারীদেরও যথাসময়ে প্রয়োজনীয় দলিলাদি জমা দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। কারণ পূর্বে যেসব কারণে আবেদন বাতিল হয়েছিল, সেই একই ভুল যদি আবারও ঘটে তবে আবেদন প্রক্রিয়ায় সমস্যা তৈরি হতে পারে। কমিশন মনে করছে, এবার আবেদনকারীরা সতর্ক থাকলে দ্রুতই তাদের সমস্যা সমাধান করা সম্ভব হবে।

এনআইডি সংশোধন সংক্রান্ত এ উদ্যোগকে সাধারণ মানুষ স্বাগত জানিয়েছে। অনেক আবেদনকারী জানিয়েছেন, প্রথমবার আবেদন বাতিল হওয়ার কারণে তারা চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়েছিলেন। এবার ফের সুযোগ পাওয়ায় তারা আশাবাদী যে সমস্যার সমাধান হবে।

আগামী ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দেওয়ায় আবেদনকারীদের দ্রুত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এ সময়সীমা পেরিয়ে গেলে নতুন করে আর কোনো সুযোগ দেওয়া হবে কিনা সে বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। নির্বাচন কমিশন বলছে, চলমান প্রোগ্রামটি সফলভাবে শেষ করার পর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নেওয়া হবে।

ফলে আগামী দুই মাস এনআইডি সংশোধন কার্যক্রমের ক্ষেত্রে বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ হতে যাচ্ছে। এই সময়ের মধ্যে বাতিল হওয়া আবেদনকারীরা নতুন সুযোগ কাজে লাগাতে পারলে তাদের সমস্যার স্থায়ী সমাধান হবে। নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, সব ধরনের আবেদন নিরপেক্ষভাবে এবং যথাযথ প্রক্রিয়ায় নিষ্পত্তি করা হবে।

repoter