ছবি: -সংগৃহীত ছবি
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) সরকার গঠন করলে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানই প্রধানমন্ত্রী হবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তার দাবি, বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বিএনপিই একমাত্র দল যারা বাংলাদেশকে রক্ষা করতে সক্ষম।
রবিবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে দলের ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। ‘বিএনপি প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য ও তাৎপর্য’ শীর্ষক এ অনুষ্ঠানে দলের শীর্ষস্থানীয় নেতারা বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, আগামীর করণীয় এবং জাতীয় ঐক্যের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে বক্তব্য রাখেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপির দেয়া ৩১ দফা সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়নের মাধ্যমেই দেশের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক কাঠামোতে আমূল পরিবর্তন আনা সম্ভব। তিনি দাবি করেন, এ কর্মসূচির মাধ্যমেই গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা হবে। তার মতে, আওয়ামী লীগ জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে, বরং স্বৈরাচারী শাসন কায়েম করেছে। বিএনপিই সেই শক্তি যারা জনগণের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিতে সক্ষম।
আলোচনা সভায় দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নানা ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে বাংলাদেশকে গণতন্ত্র থেকে দূরে সরিয়ে রাখার চেষ্টা চলছে। তার অভিযোগ, একটি নির্দিষ্ট দলকে ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখতে দেশের ভেতরে-বাইরে ষড়যন্ত্র অব্যাহত রয়েছে। “আমাদের স্বাধীনতার চেতনা ও জনগণের অধিকারকে যারা ভুলে গেছে, তারাই আসলে দেশীয় ষড়যন্ত্রকারী,” বলেন তিনি।
ভারতের ভূমিকাও তিনি এ প্রসঙ্গে উল্লেখ করেন। হাফিজ উদ্দিন বলেন, ভারতের লোকসভায় আওয়ামী লীগের প্রশংসা করে শেখ হাসিনাকে ফের ক্ষমতায় বসানোর জন্য প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। তিনি এ ধরনের প্রচেষ্টাকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে অনধিকার হস্তক্ষেপ হিসেবে উল্লেখ করেন।
স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী তার বক্তব্যে বলেন, স্বাধীনতার পর জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করার শক্তি ছিল জাতীয়তাবাদের পতাকা। সেই জাতীয়তাবাদী শক্তির নেতৃত্বেই আবার গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার সম্ভব। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, বিএনপির নেতৃত্বে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে বড় ধরনের পরিবর্তন আসবে, যা জনগণের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা।
দলের আরেক স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান বলেন, কঠিন সময় অতিক্রম করছে দেশ। এই সময়ে বিএনপির জন্মদিন উদযাপন দলীয় ঐক্যের প্রতীক হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ। তিনি নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান, যেকোনো ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, বর্তমান ক্ষমতাসীন মহল পিআর পদ্ধতির মাধ্যমে কিছু রাজনৈতিক দলকে ব্যবহার করে নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র করছে। এ ধরনের পদক্ষেপ গণতন্ত্রকে আরও দূরে ঠেলে দিচ্ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
আলোচনা সভার পুরো পরিবেশেই নেতাদের বক্তব্যে ফুটে ওঠে দেশের বর্তমান সংকট এবং বিএনপির বিকল্প রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে আত্মপ্রকাশের দৃঢ় প্রত্যয়। বক্তারা বলেন, জনগণ আজ পরিবর্তন চায়, সেই পরিবর্তনের নেতৃত্ব দিতে প্রস্তুত বিএনপি।
প্রতিষ্ঠার ৪৭ বছর পর দলটি আবারও শপথ নিচ্ছে গণতন্ত্র ও জনগণের অধিকার ফিরিয়ে আনার। বিএনপি নেতাদের বিশ্বাস, জনগণের ঐক্য ও আন্দোলনের মাধ্যমে এক নতুন রাজনৈতিক অধ্যায় সূচিত হবে—যার নেতৃত্বে থাকবেন তারেক রহমান।
repoter

