
ছবি: ছবি: সংগৃহীত
মাগুরায় ধর্ষণের শিকার আট বছরের শিশুটিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) স্থানান্তর করা হয়েছে। শনিবার (৮ মার্চ) বিকেল ৫টার দিকে আইসিইউ অ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে সিএমএইচে নেওয়া হয়। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. আশরাফুল আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ডা. আশরাফুল আলম জানান, সমাজ কল্যাণ উপদেষ্টা শারমিন মুর্শিদ দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শিশুটিকে দেখতে যান। তার নির্দেশনা ও শিশুটির চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের সুপারিশে শিশুটিকে সিএমএইচে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। শিশুটির সঙ্গে একদল চিকিৎসক সিএমএইচে গমন করেন।
এর আগে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান জানিয়েছিলেন, শিশুটির অবস্থা আশঙ্কাজনক। ভেন্টিলেটরের সাহায্যে তার শ্বাসপ্রশ্বাস চলছে। পাশবিক নির্যাতনের কারণে তার যৌনাঙ্গে গুরুতর ক্ষত এবং গলায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। শিশুটির চিকিৎসায় গাইনি ও অ্যানেসথেসিওলজি বিভাগের চিকিৎসকদের নিয়ে বিশেষ মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে।
মাগুরা শহরে বোনের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে শিশুটি ধর্ষণের শিকার হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে অচেতন অবস্থায় শিশুটিকে মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে আনা হয়। সেখান থেকে তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
শিশুটির পরিবারের সদস্যরা জানান, তাদের বাড়ি মাগুরার শ্রীপুর উপজেলায়। শিশুটি কয়েক দিন আগে তার বড় বোনের শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিল। বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শিশুটিকে অচেতন অবস্থায় মাগুরা হাসপাতালে নিয়ে আসেন তার বোনের শাশুড়ি। পরে শিশুটির মা হাসপাতালে পৌঁছান।
চিকিৎসকরা জানান, শিশুটির গলায় চাপ দেওয়ার চিহ্ন এবং শরীরের বিভিন্ন部位 আঁচড়ের দাগ রয়েছে। তার যৌনাঙ্গে রক্তক্ষরণ হয়েছে।
এদিকে, শিশুটির মা ধর্ষণের ঘটনায় মামলা করেছেন। শনিবার সকালে শিশুটির বড় বোন ও বাবার মাধ্যমে মাগুরা সদর থানায় এজাহার জমা দেওয়া হয়। বেলা তিনটার দিকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯(৪) এর ক/৩০ ধারায় মামলা রুজু করা হয়। মামলায় শিশুটির বোনের স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি ও ভাশুরকে আসামি করা হয়েছে। তারা ইতিমধ্যে পুলিশের হেফাজতে ছিলেন এবং মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
মাগুরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মিরাজুল ইসলাম বলেন, শিশুটি ঢাকায় চিকিৎসাধীন এবং তার মা তার সঙ্গে রয়েছেন। মামলার চার আসামিকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে এবং ঘটনার তদন্ত চলছে।
এ ঘটনায় স্থানীয় জনগণ ও মানবাধিকার সংগঠনগুলো তীব্র নিন্দা জানিয়েছে এবং দোষীদের দ্রুত বিচারের দাবি জানিয়েছে।
repoter