ছবি: -সংগৃহীত ছবি
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আসন্ন শিক্ষার্থী সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনকে ঘিরে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের গ্রুপে গুজব ও অপতথ্য ছড়ানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় ভিপি প্রার্থী আবিদুল ইসলাম খান। শুক্রবার (২২ আগস্ট) জুমার নামাজ শেষে ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ হলে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এই অভিযোগ তোলেন এবং প্রশাসনের কাছে তাৎক্ষণিক হস্তক্ষেপের আহ্বান জানান।
আবিদুল ইসলাম বলেন, “আমরা যখন এসব নোংরামির বিরুদ্ধে সত্য প্রকাশ করি, তখন দেখা যায় তা অনলাইনে ডিলেট করে দেওয়া হচ্ছে। এ ধরনের কর্মকাণ্ড শুধু অপপ্রচার নয়, বরং নির্বাচনকে ঘিরে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টির একটি পরিকল্পিত অপচেষ্টা। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যদি এ বিষয়ে কঠোর ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে নির্বাচনের পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে।”
তিনি আরও বলেন, “গতকাল আমি স্পষ্ট করেছিলাম যে আমাদের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক চাইলে ডাকসুতে প্রার্থী হতে পারতেন। কিন্তু শিক্ষার্থীদের মতামত ও ক্যাম্পাসের পরিবেশ বিবেচনায় যে প্রার্থীদের মনোনীত করা হয়েছে, তারা নির্বাচনের মাধ্যমেই এসেছে। অথচ এর পরপরই কিছু গ্রুপে প্রোপাগান্ডা ছড়ানো হয় যে আমি নাকি বলেছি, সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক ইচ্ছা করলেই ভিপি বা জিএস হতে পারেন। এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত দাবি।”
অভিযোগ করে তিনি বলেন, “যারা এসব গুজব ছড়াচ্ছে, তারা আড়াল থেকে প্রপাগান্ডামূলক ফটোকার্ড তৈরি করছে। এসব কাজ বিকৃত মানসিকতার বহিঃপ্রকাশ, সুস্থ কোনো শিক্ষার্থী এর সঙ্গে যুক্ত হতে পারে না।”
আবিদুল ইসলাম সতর্ক করে বলেন, যদি বিশ্ববিদ্যালয়ে গুজব ও অপতথ্য ছড়ানো অব্যাহত থাকে, তাহলে নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ নষ্ট হবে। তিনি বিশ্বাস করেন, নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে অশান্ত করার উদ্দেশ্যে এ ধরনের কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। তার মতে, এমন কর্মকাণ্ড শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করছে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের গণতান্ত্রিক চর্চার জন্য হুমকিস্বরূপ।
তিনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে প্রত্যাশা প্রকাশ করে বলেন, “যত দ্রুত সম্ভব এই প্রপাগান্ডা রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। যারা গুজব ও অপতথ্য ছড়াচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি। অন্যথায় নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হবে।”
ডাকসু নির্বাচনের আগেই গুজব ও প্রোপাগান্ডা ছড়ানোর ঘটনা ছাত্ররাজনীতির অঙ্গনে নতুন কিছু নয়। তবে এবারের পরিস্থিতি নিয়ে বিশেষ উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন আবিদুল ইসলাম। তার মতে, যখন শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন পর একটি সুষ্ঠু ও প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচনের অপেক্ষায় আছে, তখন কিছু মহল গুজব রটিয়ে নির্বাচনের পরিবেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে।
তিনি মনে করেন, নির্বাচন যেন সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য হয়, তার জন্য প্রশাসনের নিরপেক্ষতা বজায় রাখা এবং অপপ্রচার বন্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। শিক্ষার্থীদের প্রকৃত মতামত প্রতিফলিত হওয়ার জন্য একটি সুষ্ঠু পরিবেশের প্রয়োজন, আর সেই পরিবেশ ধ্বংস করার জন্য যেকোনো ধরণের অপতথ্য প্রচারকে দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনা দরকার।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আবিদুল ইসলাম বলেন, “আমাদের প্রতিপক্ষরা নির্বাচনে টিকতে পারবে না বুঝেই এখন থেকে গুজব রটাচ্ছে। কিন্তু শিক্ষার্থীরা এসব মিথ্যা তথ্য বিশ্বাস করবে না। কারণ তারা জানে কারা ক্যাম্পাসের প্রকৃত প্রতিনিধি।”
তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, নির্বাচনী প্রক্রিয়া স্বচ্ছভাবে সম্পন্ন হলে শিক্ষার্থীরা প্রকৃত নেতৃত্ব বেছে নিতে সক্ষম হবে। সেইসঙ্গে তিনি প্রশাসনকে উদ্দেশ্য করে বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি অক্ষুণ্ণ রাখা আমাদের সবার দায়িত্ব। তাই নির্বাচনকালীন সময়ে যেকোনো অপতথ্য ও গুজব বন্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে কঠোর হতে হবে।”
আসন্ন ডাকসু নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ক্যাম্পাসে বাড়তি উত্তেজনা বিরাজ করছে। প্রার্থীরা প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। এরই মধ্যে গুজব ও অপতথ্যের অভিযোগ নতুন করে বিতর্ক তৈরি করেছে। এখন সবার নজর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দিকে—তারা কীভাবে এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করে এবং নির্বাচনের পরিবেশ বজায় রাখে।
repoter




