ছবি: -সংগৃহীত ছবি
হবিগঞ্জের চুনারুঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নূর আলমকে শনিবার পুলিশ লাইনে ক্লোজড করা হয়েছে। এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার এমএএন সাজেদুর রহমান।
ঘটনাটি ঘটেছে ৮ সেপ্টেম্বর, যখন চুনারুঘাট থানার ওসি নূর আলমের সরকারি বাসা থেকে প্রায় ৪ লাখ টাকা চুরি হওয়ার অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে ওসির ব্যক্তিগত গাড়িচালক ওয়াসিমের বাসায় অভিযান চালায় ওসি নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল।
যেখানে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছিল, সেই ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে মাত্র ছয় মিনিটের মধ্যে। ভিডিওটি দ্রুত ভাইরাল হয়ে যায় এবং এতে তল্লাশির প্রক্রিয়া এবং পুলিশি ব্যবহারের উপস্থাপনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় ওঠে। সাধারণ নাগরিকরা এবং বিভিন্ন সামাজিক প্ল্যাটফর্মে অনেকেই এই ঘটনাকে পুলিশি শৃঙ্খলা ও প্রয়োজনীয় নিয়মকানুনের প্রতি অশোভন আচরণের উদাহরণ হিসেবে দেখেন।
সমালোচনার মাত্রা বাড়ার পর হবিগঞ্জের পুলিশ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ নূর আলমকে পুলিশ লাইনে ক্লোজড করার নির্দেশ দেন। পুলিশ সুপার এমএএন সাজেদুর রহমান জানান, এ ধরণের বিষয়গুলোতে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। তিনি বলেন, তদন্ত শেষে ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নূর আলমের বাসা থেকে অর্থ চুরি হওয়ার পরপরই ব্যক্তিগত গাড়িচালককে সন্দেহভাজন হিসেবে ধরে অভিযান চালানো এবং সেই তল্লাশি সংক্রান্ত ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া নিয়ে চুনারুঘাটসহ হবিগঞ্জ জেলায় নিন্দা ও প্রশ্ন উঠেছে। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, এই ধরনের অভিযান করার সময় কতটা প্রয়োজনীয় অনুমোদন এবং সতর্কতা নেওয়া হয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি পুলিশি দায়িত্ব পালনের মান ও প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতার ওপর জনগণের আস্থা প্রভাবিত করেছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তির যুগে পুলিশি কর্মকাণ্ডে স্বচ্ছতা এবং নৈতিক আচরণের গুরুত্ব বৃদ্ধি পেয়েছে, এবং যে কোনো অব্যবস্থাপনা মুহূর্তের মধ্যে জনমতের প্রতিক্রিয়ায় পরিণত হতে পারে।
এই ঘটনায় পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের তৎপর পদক্ষেপকে আইনানুগ ব্যবস্থা হিসেবে দেখা হচ্ছে। পাশাপাশি এটি পুলিশ বাহিনীর জন্য সতর্কবার্তা হিসেবে কাজ করবে, যাতে ভবিষ্যতে অভিযানের সময় প্রয়োজনীয় নিয়মকানুন অনুসরণ করা হয় এবং অনাকাঙ্ক্ষিত সমালোচনার সম্মুখীন হতে না হয়।
নূর আলমের ক্লোজড হওয়া এই ঘটনা চুনারুঘাট থানার পুলিশি কার্যক্রম, নিরাপত্তা প্রক্রিয়া এবং সরকারি কর্মকর্তাদের আচরণের স্বচ্ছতা নিয়ে জনসাধারণের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। তদন্ত শেষ হলে এই ঘটনার আরও বিস্তারিত তথ্য প্রকাশিত হবে, যা পুলিশি প্রক্রিয়া ও সরকারি কর্মকর্তাদের দায়িত্ব পালনের মানোন্নয়নের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিবেচিত হবে।
repoter




