ঢাকা,  শুক্রবার
১৯ ডিসেম্বর ২০২৫ , ০৩:৩৯ মিনিট

Donik Barta

শিরোনাম:

* জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে মানবতাবিরোধী অপরাধ: ওবায়দুল কাদেরসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দাখিল * গুলিবিদ্ধ শরিফ ওসমান হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক, দেশে–বিদেশে উদ্বেগ * ঢাকা–দিল্লি সম্পর্কে নতুন করে উত্তেজনা, আজ চালু থাকছে ভারতীয় ভিসা কেন্দ্র * ৬৬ হাজার কোটি টাকার সম্পদ জব্দ, বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ উদ্ধারে গতি আনছে সরকার * যুক্তরাষ্ট্রের ‘সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধ’ ফিরিয়ে আনছেন ট্রাম্প, সমালোচনার কেন্দ্রে ভেনেজুয়েলা অভিযান * পাবনার বেড়ায় স্পিডবোটে এসে বাজারে ডাকাতি, ব্যবসায়ীরা আতঙ্কিত * যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভেনেজুয়েলা অভিযান: মাদুরো সরকারের ওপর চাপ বাড়ছে * ট্রাম্পের ২৮ দফা শান্তি পরিকল্পনা: ইউক্রেন–রাশিয়া যুদ্ধ বন্ধে নতুন জটিলতা * গুম ও মানবতাবিরোধী অভিযোগে ১৩ সেনা কর্মকর্তা ট্রাইব্যুনালে * বিএনপির ৪০টির বেশি আসনে মনোনয়নসংক্রান্ত অসন্তোষ, কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ব্যস্ত সমাধান খুঁজতে

চলতি সপ্তাহেই নির্বাচনের রোডম্যাপ প্রকাশ করবে ইসি

repoter

প্রকাশিত: ০৭:১৬:১০অপরাহ্ন , ১৮ আগস্ট ২০২৫

আপডেট: ০৭:১৬:১০অপরাহ্ন , ১৮ আগস্ট ২০২৫

-সংগৃহীত ছবি

ছবি: -সংগৃহীত ছবি

নির্বাচন কমিশন (ইসি) চলতি সপ্তাহের মধ্যেই আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের চূড়ান্ত রোডম্যাপ প্রকাশ করবে। নির্বাচনী কর্মপরিকল্পনার খসড়া ইতিমধ্যেই চূড়ান্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কমিশনের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ। সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপচারিতায় তিনি এ তথ্য জানান।

আখতার আহমেদ বলেন, চলতি সপ্তাহেই নির্বাচন কর্মপরিকল্পনা চূড়ান্ত আকারে প্রকাশ করা হবে। এর অংশ হিসেবে সীমানা নির্ধারণ প্রক্রিয়ায় ৮২টি আসন নিয়ে শুনানি শুরু হবে আগামী ২৪ আগস্ট। টানা চার দিন এই শুনানি চলবে।

তিনি আরও জানান, আসন্ন নির্বাচনে ভোটকেন্দ্র বাড়ানো হবে না। তবে ভোটার ব্যবস্থাপনায় কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে। আগের নিয়ম অনুযায়ী একটি ভোটকেন্দ্রে সর্বোচ্চ তিন হাজার ভোটার থাকবেন। তবে বুথে ভোটারের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। পূর্বে একটি বুথে ৫০০ জন ভোটার রাখার নিয়ম থাকলেও এবার সেটি বাড়িয়ে ৬০০ জন করা হয়েছে।

সিনিয়র সচিব বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর তদন্ত প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। এর অংশ হিসেবে ২২টি রাজনৈতিক দলের বিষয়ে মাঠপর্যায়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়েও কমিশন তৎপর রয়েছে। তিনি দাবি করেন, বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগের কোনো কারণ নেই।

তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজনের লক্ষ্যে নির্দিষ্ট পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। সীমানা নির্ধারণ, ভোটকেন্দ্র ব্যবস্থাপনা, রাজনৈতিক দলগুলোর যাচাই-বাছাই এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ—সবকিছুই একটি সমন্বিত প্রক্রিয়ার মধ্যে সম্পন্ন হচ্ছে।

ইসি সচিবের বক্তব্য অনুযায়ী, কমিশনের প্রতিটি পদক্ষেপকে একটি পূর্ণাঙ্গ রোডম্যাপের মাধ্যমে সাজানো হয়েছে। এর ফলে রাজনৈতিক দল, প্রার্থী, প্রশাসন এবং সাধারণ ভোটারদের জন্য পরিষ্কার ধারণা পাওয়া সহজ হবে। তিনি আরও জানান, কমিশন চাইছে ভোটগ্রহণের দিন ভোটাররা নির্বিঘ্নে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন।

আখতার আহমেদ জোর দিয়ে বলেন, “ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা না বাড়ালেও প্রতিটি কেন্দ্রে যথেষ্ট ব্যবস্থাপনা থাকবে। বুথে বাড়তি ভোটার যুক্ত হওয়ায় সময় ব্যবস্থাপনা ও নিরাপত্তা জোরদার করা হবে। আমাদের লক্ষ্য হলো ভোটারদের জন্য সহজ ও নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করা।”

তিনি মনে করেন, আসন্ন নির্বাচনে প্রযুক্তির ব্যবহার, ভোটার তালিকা হালনাগাদ এবং মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের দক্ষতা বাড়ানো—সবগুলো বিষয় কমিশনের পরিকল্পনায় গুরুত্ব পেয়েছে। নির্বাচনী প্রক্রিয়া যাতে স্বচ্ছ ও বিশ্বাসযোগ্য হয়, সে জন্য বিভিন্ন ধাপ একযোগে সম্পন্ন করা হচ্ছে।

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বর্তমানে কোনো অস্থিতিশীলতা নেই। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিয়মিত মাঠপর্যায়ে তৎপর রয়েছে এবং তারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার মতো সক্ষমতা রাখে। এ ছাড়া নির্বাচন কমিশনও বিভিন্ন সময় তাদের সঙ্গে বৈঠক করে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিচ্ছে।

ইসি সচিব আরও জানান, রাজনৈতিক দলগুলোর তদন্তের বিষয়টি একটি নিয়মিত প্রক্রিয়া। প্রতিটি দলের কার্যক্রম, সাংগঠনিক কাঠামো ও মাঠপর্যায়ের বাস্তবতা যাচাই করে চূড়ান্ত তালিকা তৈরি করা হবে। এর ফলে নিবন্ধিত দলগুলোর কার্যক্রম আরও স্বচ্ছ হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

তিনি বলেন, নির্বাচনী কর্মপরিকল্পনায় সবার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার চেষ্টা করা হয়েছে। এ লক্ষ্যে রাজনৈতিক দলগুলোকে আস্থায় নেওয়ার পাশাপাশি প্রশাসনিক দিকগুলোকে শক্তিশালী করা হচ্ছে। কমিশনের মূল লক্ষ্য হচ্ছে, ভোটারদের কাছে গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন আয়োজন করা।

আখতার আহমেদ উল্লেখ করেন, সীমানা নির্ধারণের প্রক্রিয়া অনেক জটিল হলেও কমিশন সঠিক ও স্বচ্ছ উপায়ে তা সম্পন্ন করতে চায়। এজন্য প্রার্থীদের, রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের এবং স্থানীয় প্রশাসনের মতামতকে গুরুত্ব দেওয়া হবে। শুনানিতে প্রাপ্ত মতামত অনুযায়ী প্রয়োজনীয় সমন্বয় করার সম্ভাবনাও রয়েছে।

নির্বাচনী পরিবেশ শান্তিপূর্ণ রাখতে কমিশন সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে দায়িত্বশীল আচরণের আহ্বান জানাচ্ছে। একইসঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যাতে কোনো প্রকার অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা না ঘটে।

নির্বাচন কমিশনের মতে, আসন্ন জাতীয় নির্বাচন হবে দেশের গণতন্ত্রের একটি বড় পরীক্ষা। সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ নির্বাচন আয়োজনের মধ্য দিয়েই জনগণের আস্থা পুনর্নির্মাণ সম্ভব হবে। কমিশনের শীর্ষ কর্মকর্তারা বিশ্বাস করেন, রোডম্যাপ প্রকাশের পর নির্বাচনী পরিবেশ আরও স্পষ্ট হয়ে উঠবে এবং সব পক্ষ একটি পরিষ্কার পরিকল্পনার আলোকে অগ্রসর হতে পারবে।

চলতি সপ্তাহের শেষ দিকে রোডম্যাপ প্রকাশ করা হলে নির্বাচনী প্রক্রিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে গতি পাবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন ইসি সচিব। তিনি বলেন, “নির্বাচন কমিশন একটি স্বচ্ছ, গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজনের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এজন্য আমরা ধাপে ধাপে সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করছি।”

repoter