
ছবি: ছবি: সংগৃহীত
ঢাকা, ২৫ ফেব্রুয়ারি – ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ১৬তম সমাবর্তন অনুষ্ঠান মঙ্গলবার ঢাকার পূর্বাচলে অবস্থিত বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এবারের সমাবর্তনের প্রতিপাদ্য ছিল ‘এক্সিলেন্স ইন ইউ’। এই আয়োজনে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি তাদের গ্র্যাজুয়েট শিক্ষার্থীদের সাফল্য উদযাপন করে এবং তাদের অ্যাকাডেমিক উৎকর্ষ ও সৃজনশীলতাকে স্বীকৃতি জানায়।
সমাবর্তন অনুষ্ঠানে ৪,৮২৯ জন শিক্ষার্থীকে ডিগ্রি প্রদান করা হয়। এছাড়া, চ্যান্সেলর স্বর্ণপদক দুইজন শিক্ষার্থী এবং ভাইস-চ্যান্সেলর স্বর্ণপদক ২৮ জন শিক্ষার্থীকে প্রদান করা হয়। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা প্রফেসর ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, যিনি চ্যান্সেলর স্বর্ণপদক তুলে দেন। ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর সৈয়দ ফারহাত আনোয়ার ভাইস-চ্যান্সেলর স্বর্ণপদক প্রদান করেন।
সমাবর্তন বক্তা হিসেবে ছিলেন অস্কার বিজয়ী চলচ্চিত্র নির্মাতা ও সাংবাদিক শারমিন ওবায়েদ চিনয়। তিনি শিক্ষার্থীদের তাদের বিশ্বাস ধরে রাখতে এবং নিজেদের স্বপ্নের পথে এগিয়ে যেতে উৎসাহিত করেন। তিনি ব্যর্থতাকে সফলতার অনুষঙ্গ হিসেবে বিবেচনা করার আহ্বান জানান এবং বলেন, গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করতে সবার মতামত শোনা ও ন্যায়ের পক্ষে কথা বলা জরুরি। তিনি সাহসিকতার সাথে নিজের মত প্রকাশের ওপর গুরুত্ব দেন।
চ্যান্সেলর স্বর্ণপদকপ্রাপ্ত শিক্ষার্থী শিহাব মুহতাসিম ভেলিডিক্টোরিয়ান বক্তব্যে বলেন, ‘সত্যিকারের সাফল্যের জন্য যে কোনো কাজে আনন্দ খুঁজে পাওয়া জরুরি।’ তিনি শিক্ষার্থীদের ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির মূল্যবোধ ধরে রাখার অনুরোধ করেন এবং অনবরত নিজেদের উন্নত করার জন্য পরামর্শ দেন।
বিশেষ অতিথি হিসেবে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারপারসন তামারা হাসান আবেদ উপস্থিত ছিলেন। তিনি শিক্ষার্থীদের নৈতিক নেতৃত্ব ও সংবেদনশীলতার গুরুত্ব সম্পর্কে আলোচনা করেন এবং গ্লোবাল সাউথের উন্নয়নের জন্য নতুন পথ তৈরির আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘আমাদের জীবনকে শুধু বস্তুগত চাহিদার মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে সমষ্টিগত উপলব্ধির মাধ্যমে এগিয়ে যেতে হবে।’
প্রধান অতিথি শিক্ষা উপদেষ্টা তার বক্তব্যে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের সামাজিক দায়বদ্ধতার প্রশংসা করেন এবং বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা শুধু ক্যারিয়ার নিয়ে ভাবে না, সমাজের উন্নয়নের জন্যও কাজ করে।’ তিনি গ্র্যাজুয়েটদের সততা ও নৈতিকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করার আহ্বান জানান এবং পেশা বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে শুধুমাত্র অর্থ বা সুনামের দিকে না তাকিয়ে তাদের পছন্দের কাজকে প্রাধান্য দেওয়ার পরামর্শ দেন।
ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ভাইস-চ্যান্সেলর ফারহাত আনোয়ার পরিবর্তনকে স্বাভাবিক প্রক্রিয়া হিসেবে গ্রহণ করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘বড় পরিবর্তন স্বাভাবিক হতে সময় নেয়, তবে মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি ধরে রাখলে তা সমাজের জন্য মঙ্গল বয়ে আনে।’
সমাবর্তনের সমাপনী বক্তব্য দেন সমাবর্তন কমিটির চেয়ার ও কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চেয়ারপারসন ড. সাদিয়া হামিদ কাজী।
এবারের সমাবর্তন অনুষ্ঠানের অন্যতম স্পন্সর ছিল পূবালী ব্যাংক, এবং হট বেভারেজ পার্টনার ছিল এমএম ইস্পাহানি লিমিটেড।
ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি গ্লোবাল সাউথের অন্যতম সেরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হওয়ার লক্ষ্যে কাজ করছে। প্রতিষ্ঠানটি শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বগুণ বিকাশের পাশাপাশি বাস্তব জীবনে জ্ঞান প্রয়োগের দক্ষতা ও আত্মবিশ্বাস অর্জনে সহায়তা করছে। ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা নৈতিকতা ও সহমর্মিতার মূল্যবোধ ধারণ করে সমাজের ইতিবাচক পরিবর্তনে অবদান রাখছে।
repoter