ঢাকা,  রবিবার
১৯ অক্টোবর ২০২৫ , ০৪:৪৯ মিনিট

Donik Barta

শিরোনাম:

* চার সমুদ্রবন্দরে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত বহাল * ঢাকার বাতাস আজও অস্বাস্থ্যকর পর্যায়ে * ট্রাম্পের আমন্ত্রণে নৈশভোজে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের উপস্থিতি * মালয়েশিয়ায় গ্রেফতার বাংলাদেশিদের জঙ্গিবাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা নেই: এটিইউ প্রধান * হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করবেন শেহবাজ শরিফ * চাকসু নির্বাচনে চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা ও ব্যালট নম্বর প্রকাশ * মানুষের আস্থা অর্জনই বিচার বিভাগের প্রধান লক্ষ্য : প্রধান বিচারপতি * শাপলা প্রতীকের বিষয়ে ব্যাখ্যা দেবে না নির্বাচন কমিশন: সিইসি * বাংলাদেশ-ইতালি বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণে বৈঠক * ডেঙ্গুতে আরও ৫ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৬৬৮ জন

বিএনপির বিজয় ঠেকাতে নানা প্রচেষ্টা চলছে: তারেক রহমান

repoter

প্রকাশিত: ০৮:৪২:১৩অপরাহ্ন , ২১ আগস্ট ২০২৫

আপডেট: ০৮:৪২:১৩অপরাহ্ন , ২১ আগস্ট ২০২৫

-সংগৃহীত ছবি

ছবি: -সংগৃহীত ছবি

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে যদি সুষ্ঠু নির্বাচন হয়, তবে জনগণ তাদের মূল্যবান ভোট দিয়ে বিএনপিকে বিজয়ী করবে। কিন্তু সেই বিজয় ঠেকাতে নানা ধরনের প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। তার মতে, দেশে গণতন্ত্রের যাত্রাপথ এখনও ঝুঁকিমুক্ত নয়। অতীতের মতো বর্তমানেও বিএনপিকে ঠেকানোর প্রবণতা স্পষ্ট হয়ে উঠছে, যা দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার জন্য অশনি সংকেত।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর কাকরাইলে ইনস্টিটিউশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (আইইবি) মিলনায়তনে হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতাদের সঙ্গে জন্মাষ্টমী উপলক্ষে শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে এসব মন্তব্য করেন তিনি।

তারেক রহমান বলেন, "যারা বিএনপির বিজয় রুখতে নানা শর্তের বেড়াজাল তৈরি করার কথা বলছেন, তাদের প্রতি আহ্বান জানাই—রাজনীতি দিয়ে রাজনীতি মোকাবিলা করুন। গণতন্ত্রের পথে অবরোধ সৃষ্টি না করে রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতার মাধ্যমে জনগণের রায় মেনে নিন।"

তিনি পিআর (প্রপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন) পদ্ধতি নিয়ে নিজের মতামত ব্যক্ত করে বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে এ ধরনের ভোট পদ্ধতি উপযুক্ত নয়। তার মতে, পিআর পদ্ধতিতে বিভিন্ন দলের মতভেদ থাকা সত্ত্বেও সেটিই রাজনৈতিক সৌন্দর্যের অংশ। কিন্তু দেশের বর্তমান অস্থির বাস্তবতায় এ ধরনের পদ্ধতিতে সমাধান খোঁজা সম্ভব নয়।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আরও সতর্ক করেন, নির্বাচনকে ঘিরে যেসব মহল পরিস্থিতি ঘোলাটে করার চেষ্টা করছে, তারা আসলে গণতন্ত্রের উত্তরণে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। তার ভাষায়, "গণতান্ত্রিক শক্তিগুলোর বিরোধ এমন পর্যায়ে নেওয়া যাবে না যাতে করে স্বৈরাচারের পুনরুত্থানের সুযোগ তৈরি হয়। অতীতে আমরা যে ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা পেয়েছি, সেদিকেই যেন দেশ আবার না এগোয়, সেজন্য সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।"

তারেক রহমান বলেন, বিএনপি বিশ্বাস করে জনগণই দেশের প্রকৃত মালিক, তাই ভোটের মাধ্যমে মানুষের রায় নিশ্চিত করার বিকল্প নেই। তিনি অভিযোগ করেন, যারা বারবার বিএনপির অগ্রযাত্রা বাধাগ্রস্ত করছে তারা মূলত গণতন্ত্রকে বাধাগ্রস্ত করছে। দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বিভিন্ন মহলের ষড়যন্ত্র ও অপপ্রয়াসের মধ্যেও জনগণের দৃঢ় অবস্থান বিএনপির সবচেয়ে বড় শক্তি বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, "আমরা চাই সবার অংশগ্রহণে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন। কিন্তু যারা কৃত্রিম শর্ত আরোপ করে কিংবা প্রক্রিয়াকে জটিল করে তুলতে চাইছে, তারা আসলে জনগণের অধিকার খর্ব করছে।"

তারেক রহমান বিশ্বাস প্রকাশ করেন, যত বাধা আসুক না কেন জনগণের ঐক্যবদ্ধ প্রয়াসের মাধ্যমে দেশ গণতান্ত্রিক ধারায় এগিয়ে যাবে। তিনি বলেন, "গণতান্ত্রিক শক্তির দায়িত্ব হলো জনগণকে আস্থা দেওয়া এবং গণতন্ত্রকে টিকিয়ে রাখা। কিন্তু যারা ভয় ও শঙ্কা ছড়িয়ে নিজেদের স্বার্থ হাসিল করতে চাইছে, তারা দেশের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।"

জন্মাষ্টমী উপলক্ষে আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানে বিএনপির শীর্ষ নেতৃবৃন্দসহ হিন্দু সম্প্রদায়ের বিভিন্ন প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। বক্তব্যে তারেক রহমান দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ঐতিহ্য তুলে ধরে বলেন, এদেশ সবসময় বহুমতের, বহু সংস্কৃতির দেশ। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের যে কোনো প্রচেষ্টা গণতন্ত্রের জন্য ক্ষতিকর। তিনি সকল ধর্ম-বর্ণের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে দেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে শক্তিশালী করার আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত নেতারা বিএনপির পক্ষ থেকে ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক সম্প্রীতি রক্ষার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন। তারা বলেন, গণতান্ত্রিক সমাজ গড়তে হলে দেশের সকল নাগরিকের সমান অধিকার ও সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে।

তারেক রহমানের বক্তব্যে স্পষ্ট হয় যে, বিএনপি আসন্ন নির্বাচনে জনগণের সমর্থন নিয়ে অংশ নিতে চায়। তবে সেই প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার নানা চেষ্টা নিয়ে তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তার মতে, এই মুহূর্তে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করা এবং গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করা।

তিনি আবারও আহ্বান জানান, "যারা বিএনপির বিজয় ঠেকাতে চাইছেন তারা জনগণের শক্তিকে অবমূল্যায়ন করছেন। রাজনৈতিক প্রতিযোগিতা থাকবেই, কিন্তু সেটি হতে হবে ন্যায্য ও গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে। অন্যথায় দেশ আবারও অন্ধকার পথে ধাবিত হতে পারে।"

এভাবেই অনুষ্ঠানে তারেক রহমানের বক্তব্য রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে। তিনি যে বিষয়গুলো তুলে ধরেছেন, তা মূলত আসন্ন নির্বাচনে বিএনপির কৌশল এবং সরকারের প্রতি তাদের অবস্থানকে আরও পরিষ্কার করেছে। বিএনপির পক্ষ থেকে জোরালোভাবে দাবি তোলা হয়েছে জনগণের রায়ের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়ার এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে অবাধ রাখার।

repoter