
ছবি: গণজমায়েতে বক্তব্য দিচ্ছেন হাসনাত আব্দুল্লাহ
আওয়ামী লীগের বিচার নিশ্চিত না করে তাদের পুনর্বাসনের যেকোনো প্রচেষ্টা শহীদদের রক্তের সঙ্গে বেঈমানি হবে বলে মন্তব্য করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ। তিনি সতর্ক করে বলেছেন, “যতদিন পর্যন্ত বিচার না হবে, ততদিন পর্যন্ত আওয়ামী লীগকে রাজনীতির মাঠে ফিরিয়ে আনতে চাইলে তা আহত ও শহীদদের রক্তের উপর পাড়া দিয়ে করতে হবে।”
ক্ষমতায় যাওয়ার লোভে কিছু দল আওয়ামী লীগকে ক্ষমা করার কথা বলছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আমরা বলতে চাই, যারা মন্ত্রিত্ব, সংসদ, কিংবা ক্ষমতায় যাওয়ার লোভে আহতদের রক্তের উপর দিয়ে রাজনীতির মাঠে যেতে চান, তারা জাতির বেঈমান হিসেবে পরিচিত হবেন।”
শহীদদের রক্তের মর্যাদা রক্ষার আহ্বান জানিয়ে হাসনাত আব্দুল্লাহ আরও বলেন, “শহীদের রক্ত শুকানোর আগেই কিছু মুরব্বি আওয়ামী লীগকে ক্ষমা করার ও নির্বাচনে আনার কথা বলছেন। আমি স্পষ্ট বলতে চাই, আওয়ামী লীগের বিচার নিশ্চিত না করে তাদের পুনর্বাসনের চেষ্টা শহীদের রক্তের সঙ্গে বেঈমানি।”
আওয়ামী লীগের প্রতি ‘রিকনসিলিয়েশনের’ আলাপের বিরোধিতা করে তিনি বলেন, “যে আওয়ামী লীগ এখনও পর্যন্ত কোনো সরি বলে নাই, কোনো অপরাধ স্বীকার করে নাই, তাদের সঙ্গে কিসের রিকনসিলিয়েশন? বরং তারা এখনও বিদেশে বসে হত্যার হুমকি দিচ্ছে। অথচ আমরা দেখছি কিছু মুরব্বি তাদের প্রতি মায়া দেখাচ্ছেন। যারা এই রিকনসিলিয়েশনের আলাপ করছেন, তারা ক্ষমতামুখি। আর আমরা আহত, আমরা জনতামুখি।”
তিনি আরও বলেন, “একাত্তরের যুদ্ধের নামে আওয়ামী লীগ শত মায়ের কোল খালি করেছে, সন্তানদের এতিম করেছে। যারা একাত্তরকে পুঁজি করে নিজেদের স্বার্থ হাসিল করেছে, তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। তাদের অন্যায়ের শিকার পরিবারগুলোর সম্মান ফিরিয়ে দিতে হবে।”
প্রশাসন এবং পুলিশের প্রত্যেকটি স্তরে ফ্যাসিবাদের উপস্থিতি উল্লেখ করে তিনি বলেন, “প্রত্যেকটি জায়গা থেকে এই ফ্যাসিবাদ উৎখাত করতে হবে। আওয়ামী লীগ নেতারা জেল থেকে বেরিয়ে মনে করেন তারা শ্বশুর বাড়িতে পিকনিক করতে এসেছেন। আমরা খবর পেয়েছি, জেলখানাগুলোতে রাতের বেলায় ব্যাডমিন্টন খেলার আয়োজন করা হয়।”
ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “ভারতের সঙ্গে আর কোনো নতজানু সম্পর্ক থাকবে না। সম্পর্ক হবে ন্যায্যতার ভিত্তিতে। ভারত এখন জঙ্গিদের আশ্রয় দিচ্ছে এবং তাদের কাছ থেকে আমরা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির সাজেশন পাচ্ছি।”
তিনি গুজরাটের ঘটনায় ভারতের ভূমিকা সমালোচনা করে বলেন, “আমরা গুজরাট কসাইকে বলতে চাই, আমাদের ভাই আবু আলিফকে পঙ্গু করে রাস্তায় জবাই করা হয়েছে। এই নির্যাতনের পরেও আমাদের দেশের আলেম সমাজ ধৈর্য দেখিয়েছে।”
গণজমায়েতে আরও সংহতি প্রকাশ করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন খান, জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগর উত্তরের সেক্রেটারি শফিকুল ইসলাম, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক আজিজুল হক ইসলামাবাদী, জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, সদস্য সচিব আক্তার হোসেন, আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমান মঞ্জু, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য হুম্মাম কাদের চৌধুরী, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ইশরাক হোসেন, এবং গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি প্রমুখ।
repoter