ছবি: ছবি: সংগৃহীত
যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তে দগ্ধদের মধ্যে ৪০ জন এখনো ভর্তি, শনিবার ছাড়পত্র পেতে পারেন ৫ জন
ঢাকার উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন দগ্ধদের মধ্যে পাঁচজনের অবস্থা এখনো সংকটাপন্ন। বর্তমানে তাদের আইসিইউতে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। শুক্রবার (২৫ জুলাই) বিকেলে ইনস্টিটিউটের জরুরি বিভাগে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসির উদ্দিন।
তিনি জানান, আজ এই দুর্ঘটনায় দগ্ধ দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। বর্তমানে মোট ৪০ জন রোগী বার্ন ইনস্টিটিউটে ভর্তি রয়েছেন। এর মধ্যে পাঁচজনের অবস্থা সবচেয়ে আশঙ্কাজনক। তাদের নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে রাখা হয়েছে। এছাড়া, সিপিআর ক্যাটাগরিতে থাকা আরও ১০ জনের অবস্থাও গুরুতর বলে তিনি উল্লেখ করেন।
ডা. নাসির বলেন, “এই ৫ জন রোগীর শ্বাস-প্রশ্বাস যন্ত্রের সহায়তা ছাড়াই নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তবে লাইফ সাপোর্টে থাকা দুইজনের অবস্থার সামান্য উন্নতি হয়েছে। তারা ধীরে ধীরে নিজে নিজে শ্বাস নিতে পারছে।”
তিনি বলেন, “ইন্টারমিডিয়েট ক্যাটাগরিতে যারা রয়েছেন, তাদের সংখ্যা ১০। এদের বেশিরভাগই অপারেশনের পর পোস্ট-অপারেটিভ পর্যায়ে আছেন। এছাড়া ক্যাবিনে আরও ১৫ জন রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন, যাদের শারীরিক অবস্থা তুলনামূলক ভালো। চিকিৎসা কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।”
শনিবার (২৬ জুলাই) দগ্ধদের মধ্যে শারীরিক অবস্থার উন্নতি হওয়ায় ৪ থেকে ৫ জন রোগীকে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়ার সম্ভাবনার কথাও জানিয়েছেন পরিচালক।
দুর্ঘটনায় দগ্ধদের উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক পর্যায়ের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে জানিয়ে অধ্যাপক নাসির উদ্দিন বলেন, “আজ সিঙ্গাপুর, চীন ও ভারতের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের একটি যৌথ প্রতিনিধি দল ইনস্টিটিউটে আসেন। তারা আমাদের চিকিৎসক দলের সঙ্গে দগ্ধ রোগীদের অবস্থা পর্যালোচনা করেন এবং প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেন।”
তিনি বলেন, “এই ধরনের বড় আকারের দুর্ঘটনায় চিকিৎসা ব্যবস্থাপনায় সমন্বয় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আন্তর্জাতিক চিকিৎসকদের অংশগ্রহণ আমাদের জন্য সহায়ক হবে।”
উল্লেখ্য, মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের কাছে সম্প্রতি একটি যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়। এতে বহু শিক্ষার্থী ও শিক্ষক দগ্ধ হন। দুর্ঘটনার পর থেকে গুরুতর দগ্ধদের জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। বর্তমানে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা পরিস্থিতি সামাল দিতে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
পরিচালক জানান, “এই ৪০ জন দগ্ধ রোগীর প্রত্যেকের চিকিৎসা দীর্ঘমেয়াদী এবং পর্যাপ্ত চিকিৎসা সরঞ্জাম ও অভিজ্ঞতার প্রয়োজন রয়েছে। আমরা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয় করে প্রতিটি ধাপ গুরুত্ব সহকারে পরিচালনা করছি।”
তিনি সবাইকে আহতদের জন্য দোয়া করার আহ্বান জানান এবং দগ্ধদের পাশে দাঁড়াতে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে সহানুভূতিশীল হওয়ার অনুরোধ জানান।
সামগ্রিকভাবে চিকিৎসকদের মতে, পরবর্তী কয়েক দিন দগ্ধদের শারীরিক উন্নয়ন নির্ভর করবে চিকিৎসা, পরিচর্যা এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার ওপর। পরিস্থিতির অবনতি যেন না ঘটে, সে জন্য সর্বোচ্চ প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে বলে আশ্বস্ত করেন পরিচালক।
repoter




