ঢাকা,  শুক্রবার
১৯ ডিসেম্বর ২০২৫ , ১২:৪৩ মিনিট

Donik Barta

শিরোনাম:

* জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে মানবতাবিরোধী অপরাধ: ওবায়দুল কাদেরসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দাখিল * গুলিবিদ্ধ শরিফ ওসমান হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক, দেশে–বিদেশে উদ্বেগ * ঢাকা–দিল্লি সম্পর্কে নতুন করে উত্তেজনা, আজ চালু থাকছে ভারতীয় ভিসা কেন্দ্র * ৬৬ হাজার কোটি টাকার সম্পদ জব্দ, বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ উদ্ধারে গতি আনছে সরকার * যুক্তরাষ্ট্রের ‘সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধ’ ফিরিয়ে আনছেন ট্রাম্প, সমালোচনার কেন্দ্রে ভেনেজুয়েলা অভিযান * পাবনার বেড়ায় স্পিডবোটে এসে বাজারে ডাকাতি, ব্যবসায়ীরা আতঙ্কিত * যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভেনেজুয়েলা অভিযান: মাদুরো সরকারের ওপর চাপ বাড়ছে * ট্রাম্পের ২৮ দফা শান্তি পরিকল্পনা: ইউক্রেন–রাশিয়া যুদ্ধ বন্ধে নতুন জটিলতা * গুম ও মানবতাবিরোধী অভিযোগে ১৩ সেনা কর্মকর্তা ট্রাইব্যুনালে * বিএনপির ৪০টির বেশি আসনে মনোনয়নসংক্রান্ত অসন্তোষ, কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ব্যস্ত সমাধান খুঁজতে

“বাবর-রিজওয়ান আধুনিক টি–টোয়েন্টির সঙ্গে মানানসই নন” — মিকি আর্থার

repoter

প্রকাশিত: ০৬:৪৪:৪৮অপরাহ্ন , ২৭ আগস্ট ২০২৫

আপডেট: ০৬:৪৪:৪৮অপরাহ্ন , ২৭ আগস্ট ২০২৫

-সংগৃহীত ছবি

ছবি: -সংগৃহীত ছবি

পাকিস্তান ক্রিকেটে আবারও শুরু হয়েছে বিতর্কের ঝড়। আসন্ন এশিয়া কাপের জন্য ঘোষিত টি–টোয়েন্টি দলে জায়গা হয়নি দুই তারকা ব্যাটার বাবর আজম ও মোহাম্মদ রিজওয়ানের। তাদের বাদ পড়া নিয়েই চলছে তুমুল আলোচনা ক্রিকেট মহলে। এবার মুখ খুললেন সাবেক পাকিস্তান কোচ ও বর্তমানে পরামর্শক হিসেবে দায়িত্ব পালন করা মিকি আর্থার। তার মতে, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাবর ও রিজওয়ান নিজেদের সামর্থ্যের প্রমাণ রাখলেও বর্তমান সময়ের টি–টোয়েন্টি ফরম্যাটের জন্য তারা আর উপযুক্ত নন।

আর্থার বলেন, “বাবর আজম ও মোহাম্মদ রিজওয়ান নিঃসন্দেহে বিশ্বমানের ক্রিকেটার। তারা দীর্ঘদিন ধরে পাকিস্তানের হয়ে ধারাবাহিক পারফরম্যান্স করে আসছেন। তবে বর্তমান সময়ে টি–টোয়েন্টি ক্রিকেটের ধরণ বদলে গেছে। এখানে প্রয়োজন আক্রমণাত্মক ব্যাটিং, ঝুঁকি নেওয়ার মানসিকতা আর দ্রুত রান তোলার দক্ষতা। এই জায়গাতেই তারা পিছিয়ে পড়ছেন।’’

এর আগে পাকিস্তান দলের প্রধান কোচ মাইক হেসনও একই ধরনের মন্তব্য করেছিলেন। তিনি দলে জায়গা না পাওয়া এই দুই তারকার ব্যাটিং ধরণকে আধুনিক টি–টোয়েন্টির সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ বলে উল্লেখ করেছিলেন। হেসনের দাবি ছিল, পাকিস্তানকে এখন এমন এক দল গড়তে হবে যারা আক্রমণাত্মকভাবে খেলতে পারবে এবং প্রতিপক্ষকে প্রথম থেকেই চাপে ফেলতে সক্ষম হবে।

মিকি আর্থার সেই বক্তব্যের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে বলেন, “মাইক হেসন পরিষ্কার পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছেন। তিনি জানেন, বর্তমান টি–টোয়েন্টি ক্রিকেটে কীভাবে দল সাজাতে হবে। তার সঙ্গে সালমান আলি আগাও কাজ করছেন, যাতে জাতীয় দলের ভেতরে সুনির্দিষ্ট কৌশল বাস্তবায়ন করা যায়। তাদের পরিকল্পনা আগামীর জন্য ইতিবাচক ফল বয়ে আনবে।”

পাকিস্তানের সমর্থক ও সাবেক ক্রিকেটারদের বড় একটি অংশ অবশ্য এই সিদ্ধান্তকে ভালোভাবে নেয়নি। দীর্ঘদিন ধরে পাকিস্তানের ব্যাটিং ভরসা হয়ে থাকা বাবর ও রিজওয়ানকে হঠাৎ করেই বাদ দেওয়াকে অনেকেই অবিচার হিসেবে দেখছেন। বিশেষ করে বাবর আজমের মতো একজন বিশ্বসেরা ব্যাটসম্যানকে টি–টোয়েন্টি দলে না রাখা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিশ্লেষকরা। তাদের মতে, আধুনিক ক্রিকেটে আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি টেকনিক্যাল দক্ষতা ও অভিজ্ঞতাও সমান গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে বাবর ও রিজওয়ান এখনো অমূল্য সম্পদ হতে পারতেন।

অন্যদিকে ক্রিকেট বোর্ডের ভেতরের একটি অংশ বলছে, গত কয়েকটি সিরিজে বাবর ও রিজওয়ানের ব্যাটিং স্ট্রাইক রেট নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে প্রশ্ন উঠছিল। বিশেষ করে পাওয়ার প্লেতে রান তোলার গতি কমে যাওয়া দলের জন্য সমস্যা হয়ে দাঁড়াচ্ছিল। বড় ম্যাচগুলোতে চাপের সময় দ্রুত রান তোলার বদলে তারা প্রায়ই ধীরগতির ইনিংস খেলেছেন, যা আধুনিক টি–টোয়েন্টি মানদণ্ডে পিছিয়ে পড়া হিসেবেই ধরা হচ্ছে।

এশিয়া কাপের আগে পাকিস্তান দলে আনা এই পরিবর্তন আসলে কৌশলগত বলে মনে করছেন অনেকে। তরুণ ব্যাটসম্যানদের জায়গা করে দিতে এবং দলকে আরও দ্রুতগতির ক্রিকেট খেলানোর জন্যই নাকি এই সিদ্ধান্ত। হেসন ও আর্থারের কৌশলগত পরিকল্পনায় এখন ঝুঁকি নেওয়ার মানসিকতা সম্পন্ন ব্যাটারদের প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে।

সমালোচনা সত্ত্বেও মিকি আর্থার আশাবাদী, পাকিস্তান ক্রিকেট এই কৌশলগত পরিবর্তন থেকে উপকৃত হবে। তিনি বলেন, “আমরা সবাই জানি বাবর ও রিজওয়ান কতটা প্রতিভাবান। তবে কখনও কখনও দলের প্রয়োজনে কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হয়। পাকিস্তানকে যদি আগামী বিশ্ব আসরে সফল হতে হয়, তবে এখনই দলকে নতুন ধারায় এগিয়ে নিতে হবে।”

বাবর আজম এবং রিজওয়ান যদিও বর্তমানে জাতীয় টি–টোয়েন্টি দলে নেই, তবে তাদের সম্পূর্ণভাবে ছেঁটে ফেলার কোনো পরিকল্পনা এখনো নেই বলে জানা গেছে। বোর্ডের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তাদের পারফরম্যান্স ও ফিটনেস পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। ভবিষ্যতে যদি তারা নিজেদের ব্যাটিং ধরণে পরিবর্তন আনতে পারেন, তবে আবারও দলে ফেরার সুযোগ থাকবে।

তবে সমর্থকদের বড় অংশ মনে করছে, পাকিস্তান দলের এই পরিবর্তন ঝুঁকিপূর্ণ। অভিজ্ঞ দুই ব্যাটসম্যানকে হঠাৎ বাদ দিয়ে তরুণদের দায়িত্ব দেওয়া একদিকে যেমন সুযোগ সৃষ্টি করবে, অন্যদিকে ব্যর্থ হলে বড় ধরনের ধাক্কাও হতে পারে। ফলে এশিয়া কাপেই বোঝা যাবে এই কৌশল কতটা কার্যকর হচ্ছে।

সব মিলিয়ে বাবর-রিজওয়ানকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত শুধু একটি দলীয় বিষয় নয়, বরং পাকিস্তান ক্রিকেটে নতুন এক দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন। আধুনিক টি–টোয়েন্টির গতি ও কৌশলের সঙ্গে নিজেদের মানিয়ে নেওয়ার জন্য এখন পাকিস্তান দল তৈরি হচ্ছে নতুন রূপে। তবে এই পথে কতটা সফল হবে তারা, সেটিই এখন বড় প্রশ্ন।

repoter