ছবি: ছবি: সংগৃহীত
তদন্তে ঘটনার সত্যতা না পাওয়ায় এইচএসসির বাংলা প্রথম পত্রে বসার সুযোগ হারালেন আনিসা, দ্বিতীয় পত্রে ৬৬ নম্বর পেলেই মিলবে পাসের সুযোগ
এইচএসসির প্রথম দিন বাংলা প্রথম পত্র পরীক্ষায় অংশ নিতে না পেরে কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন পরীক্ষার্থী আনিসা আহমেদ। তার দাবি ছিল, পরীক্ষার সকালে অসুস্থ মাকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হওয়ায় তিনি সময়মতো কেন্দ্রে পৌঁছাতে পারেননি। দেরি হওয়ার কারণে তাকে কেন্দ্রের ভেতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি।
সরকারি বাঙলা কলেজ কেন্দ্রের সামনে আনিসার ছোটাছুটি ও কান্নার দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়। নেটিজেনরা তার প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করে এবং তাকে বাংলা প্রথম পত্রে পরীক্ষার সুযোগ দেওয়ার দাবি জানান। শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডও প্রথমে জানায় যে আনিসাকে পরীক্ষায় বসানো হবে।
তবে ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ে দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। একটি কমিটি করে ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড এবং আরেকটি গঠন করা হয় আনিসার পরীক্ষা কেন্দ্র সরকারি বাঙলা কলেজের পক্ষ থেকে। তদন্তে দেখা যায়, আনিসার দেওয়া তথ্যের সঙ্গে বাস্তব ঘটনার মিল নেই।
ঢাকা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক এস এম কামাল উদ্দিন হায়দার রোববার জানান, এখনো আনিসার পরীক্ষার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। তার দেওয়া তথ্য যাচাই করা হয়েছে এবং সেগুলো বিবেচনায় নেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, আনিসা প্রথম পত্রে না বসলেও দুই পত্র মিলিয়ে ৬৬ নম্বর পেলে পাস করতে পারবে। অর্থাৎ, বাংলা দ্বিতীয় পত্রে যদি সে ৬৬ নম্বর পায়, তবে তার রেজাল্ট প্রকাশ করা হবে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন উপসচিব ও ঢাকা বোর্ডের দুইজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, আনিসার দাবি অনুযায়ী তার মা হঠাৎ অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন—এমন তথ্য মেলেনি। তদন্তে জানা যায়, তার মা ওই হাসপাতালের নিয়মিত রোগী। যে সময়ের কথা বলা হয়েছে, সেদিন হঠাৎ ভর্তি হওয়ার ঘটনা ঘটেনি। এমনকি হাসপাতালে ভর্তির স্লিপ নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ড ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. আসাদুজ্জামান জানান, আনিসা পরবর্তীতে আর তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেননি। তদন্ত কমিটিকে প্রমাণ হিসেবে হাসপাতালে ভর্তির স্লিপসহ কিছু নথি দেওয়া হয়েছিল, যা আনিসার কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়। তিনি বলেন, “যদি শিক্ষার্থী ভুয়া স্লিপ দেয়, তা আমাদের পক্ষে যাচাই করা সম্ভব নয়। তদন্ত কমিটি সেই সত্যতা যাচাই করেছে এবং ঘটনার সত্যতা না পাওয়ায় বোর্ড তাকে প্রথম পত্রে বসাচ্ছে না।”
তিনি আরও জানান, নিয়ম অনুযায়ী, বাংলা দ্বিতীয় পত্রে ৬৬ নম্বর পেলে এবং অন্য সব বিষয়ে পাস করলে আনিসা পাস করতে পারবে। তবে প্রথম পত্রের পরীক্ষার সুযোগ আর থাকছে না।
repoter




