ঢাকা,  শুক্রবার
১৯ ডিসেম্বর ২০২৫ , ০২:০৯ মিনিট

Donik Barta

শিরোনাম:

* জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে মানবতাবিরোধী অপরাধ: ওবায়দুল কাদেরসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দাখিল * গুলিবিদ্ধ শরিফ ওসমান হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক, দেশে–বিদেশে উদ্বেগ * ঢাকা–দিল্লি সম্পর্কে নতুন করে উত্তেজনা, আজ চালু থাকছে ভারতীয় ভিসা কেন্দ্র * ৬৬ হাজার কোটি টাকার সম্পদ জব্দ, বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ উদ্ধারে গতি আনছে সরকার * যুক্তরাষ্ট্রের ‘সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধ’ ফিরিয়ে আনছেন ট্রাম্প, সমালোচনার কেন্দ্রে ভেনেজুয়েলা অভিযান * পাবনার বেড়ায় স্পিডবোটে এসে বাজারে ডাকাতি, ব্যবসায়ীরা আতঙ্কিত * যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভেনেজুয়েলা অভিযান: মাদুরো সরকারের ওপর চাপ বাড়ছে * ট্রাম্পের ২৮ দফা শান্তি পরিকল্পনা: ইউক্রেন–রাশিয়া যুদ্ধ বন্ধে নতুন জটিলতা * গুম ও মানবতাবিরোধী অভিযোগে ১৩ সেনা কর্মকর্তা ট্রাইব্যুনালে * বিএনপির ৪০টির বেশি আসনে মনোনয়নসংক্রান্ত অসন্তোষ, কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ব্যস্ত সমাধান খুঁজতে

আছিয়া হত্যা মামলার রায় নিয়ে অসন্তুষ্টি, ন্যায়বিচারের দাবি জামায়াত আমিরের

repoter

প্রকাশিত: ০২:৩৫:২৪অপরাহ্ন , ১৭ মে ২০২৫

আপডেট: ০২:৩৫:২৪অপরাহ্ন , ১৭ মে ২০২৫

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: ছবি: সংগৃহীত

আছিয়া হত্যা মামলার রায়ে সন্তুষ্ট হতে পারেননি নিহত শিশুটির পরিবার। অবস্থায় বিষয়টি ভেবে দেখা দরকার বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে শনিবার (১৭ মে) দেওয়া এক পোস্টে তিনি ন্যায়বিচার নিশ্চিতের দাবি জানান।

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, “মাগুরার নির্যাতিত নিহত ছোট্ট মেয়ে আছিয়ার হত্যাকাণ্ডের বিচার মাত্র দুই মাসে সম্পন্ন হলো এবং রায়ও ঘোষণা করা হয়েছে। তবে রায় ঘোষণার পর আছিয়ার পরিবার অসন্তোষ প্রকাশ করেছে এবং তারা উচ্চ আদালতে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে ভেবে দেখা উচিত। আমরা চাই, ন্যায়বিচার যেন নিশ্চিত হয়।”

তিনি তার পোস্টে আরও উল্লেখ করেন, "বাংলাদেশের আপামর জনগণ চায়, খুনির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত হোক। দ্রুত সময়ে অপরাধীর শাস্তি কার্যকর হলে সমাজে লম্পটদের জন্য একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন হবে। এতে ভবিষ্যতে কেউ এমন ঘৃণ্য অপরাধ করতে সাহস পাবে না।"

পোস্টে তিনি শুধু আছিয়া হত্যার বিচার নিয়েই থেমে থাকেননি, বরং বরগুনায় নির্যাতনের শিকার এক শিশুকন্যা এবং তার বাবা মন্টু চন্দ্র দাস হত্যাকাণ্ডের দিকেও দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। তিনি বলেন, “আমরা আছিয়ার ন্যায়বিচারের পাশাপাশি বরগুনার সেই ছোট্ট মেয়েটির—যার ইজ্জত লুণ্ঠিত হয়েছিল—তার পিতা মন্টু চন্দ্র দাস হত্যারও দ্রুত বিচার দেখতে চাই। বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে।”

মাগুরার নির্মম হত্যাকাণ্ডটি সম্প্রতি দেশজুড়ে তীব্র আলোড়ন তোলে। ছোট্ট মেয়ে আছিয়াকে অপহরণের পর পাশবিক নির্যাতনের মাধ্যমে হত্যা করা হয়। ঘটনায় দায়ের করা মামলার তদন্ত বিচারকার্য দ্রুতগতিতে সম্পন্ন হওয়ায় শুরুতে অনেকেই সন্তোষ প্রকাশ করলেও, রায় ঘোষণার পর পরিবার জানিয়েছে যে, তারা দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত হয়নি বলে মনে করছেন। তাই উচ্চ আদালতে আপিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা।

অপরদিকে, বরগুনায় এক শিশুকন্যাকে ধর্ষণচেষ্টার প্রতিবাদ করায় তার পিতা মন্টু চন্দ্র দাসকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। ঘটনাও দেশব্যাপী ক্ষোভের জন্ম দেয়। তবে এখনও পর্যন্ত এই মামলার বিচারপ্রক্রিয়া দৃশ্যমানভাবে অগ্রসর হয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে।

জামায়াত আমির তার বিবৃতিতে বিচার ব্যবস্থার প্রতি আস্থা প্রকাশ করে বলেন, “আমরা বিশ্বাস করি, আইন বিচারব্যবস্থার মাধ্যমে প্রতিটি অপরাধের বিচার সম্ভব। তবে সেই বিচার হতে হবে স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ এবং দ্রুত। যাতে কোনো পরিবারকে বছরের পর বছর অপেক্ষা করতে না হয়।”

তিনি আরও বলেন, “আমরা যে সমাজে বাস করছি, সেখানে শিশু, নারী দুর্বল জনগোষ্ঠীকে নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্ব রাষ্ট্রের। অথচ বারবার তাদেরই সবচেয়ে বেশি সহিংসতার শিকার হতে দেখা যাচ্ছে। এটি অত্যন্ত দুঃখজনক উদ্বেগজনক। এই পরিস্থিতির পরিবর্তন আনতে হলে বিচারব্যবস্থার প্রতি জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে। আর সেটা সম্ভব ন্যায়বিচার নিশ্চিত করলেই।”

দেশব্যাপী যেসব নৃশংস অপরাধ ঘটে চলেছে, সেগুলোর পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত এবং অপরাধীদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিতের আহ্বান জানিয়েছেন জামায়াতের শীর্ষ এই নেতা।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার পোস্ট ইতোমধ্যে বিভিন্ন মহলে আলোচনার সৃষ্টি করেছে। অনেকেই তার দাবির সঙ্গে একমত প্রকাশ করেছেন। কেউ কেউ মন্তব্য করেছেন, দেশে প্রতিটি অপরাধের বিচার যদি দ্রুত সঠিকভাবে হতো, তাহলে সমাজে অপরাধপ্রবণতা কমে আসত।

প্রসঙ্গত, আছিয়া হত্যাকাণ্ডটি ২০২৪ সালের মার্চে ঘটে। শিশুটিকে তার নিজ বাড়ি থেকে অপহরণ করে পাশবিক নির্যাতন হত্যা করা হয়। ঘটনার কয়েকদিনের মধ্যেই অভিযুক্ত ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয় এবং মামলার তদন্ত শেষ করে দ্রুত বিচার সম্পন্ন করা হয়।

রায় ঘোষণার পর আদালত এক আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন, তবে পরিবারের দাবি ছিল, সর্বোচ্চ শাস্তি—মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হোক। নিয়ে তারা হতাশা প্রকাশ করেন এবং আপিলের কথা জানান।

এদিকে, বরগুনার ঘটনা এখনো বিচারাধীন। পরিবার, স্থানীয় বাসিন্দা মানবাধিকারকর্মীরা বারবার দ্রুত বিচার দাবি করে আসছেন। মন্টু চন্দ্র দাস হত্যার বিচার না হওয়ায় তার পরিবার এখনো ন্যায়বিচারের আশায় পথ চেয়ে আছে।

এই দুই ঘটনাকে কেন্দ্র করে দেশজুড়ে শিশু নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে সামাজিক সচেতনতা তৈরি হয়েছে। তবে অপরাধের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত এই সচেতনতা কার্যকর ভূমিকা রাখবে না বলেই মত অনেকের।

ডা. শফিকুর রহমানের বক্তব্যের মাধ্যমে বিষয়টি আবারও জাতীয় পর্যায়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এসেছে। এখন দেখার বিষয়, সংশ্লিষ্ট প্রশাসন বিচার বিভাগ এই দাবির প্রতি কী ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করে এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো ন্যায়বিচার পায় কি না।

repoter