ঢাকা,  শুক্রবার
১৯ ডিসেম্বর ২০২৫ , ০৩:৩৯ মিনিট

Donik Barta

শিরোনাম:

* জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে মানবতাবিরোধী অপরাধ: ওবায়দুল কাদেরসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দাখিল * গুলিবিদ্ধ শরিফ ওসমান হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক, দেশে–বিদেশে উদ্বেগ * ঢাকা–দিল্লি সম্পর্কে নতুন করে উত্তেজনা, আজ চালু থাকছে ভারতীয় ভিসা কেন্দ্র * ৬৬ হাজার কোটি টাকার সম্পদ জব্দ, বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ উদ্ধারে গতি আনছে সরকার * যুক্তরাষ্ট্রের ‘সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধ’ ফিরিয়ে আনছেন ট্রাম্প, সমালোচনার কেন্দ্রে ভেনেজুয়েলা অভিযান * পাবনার বেড়ায় স্পিডবোটে এসে বাজারে ডাকাতি, ব্যবসায়ীরা আতঙ্কিত * যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভেনেজুয়েলা অভিযান: মাদুরো সরকারের ওপর চাপ বাড়ছে * ট্রাম্পের ২৮ দফা শান্তি পরিকল্পনা: ইউক্রেন–রাশিয়া যুদ্ধ বন্ধে নতুন জটিলতা * গুম ও মানবতাবিরোধী অভিযোগে ১৩ সেনা কর্মকর্তা ট্রাইব্যুনালে * বিএনপির ৪০টির বেশি আসনে মনোনয়নসংক্রান্ত অসন্তোষ, কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ব্যস্ত সমাধান খুঁজতে

আবারও প্রাণঘাতী হয়ে উঠছে করোনা: একদিনেই ৫ জনের মৃত্যু, শনাক্ত ৩৬

repoter

প্রকাশিত: ০৭:২২:২৪অপরাহ্ন , ২২ জুন ২০২৫

আপডেট: ০৭:২২:২৪অপরাহ্ন , ২২ জুন ২০২৫

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: ছবি: সংগৃহীত

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের হুঁশিয়ারি, সচেতন না হলে বাড়তে পারে সংক্রমণ ও মৃত্যু

দেশে আবারও করোনা পরিস্থিতি উদ্বেগজনক রূপ নিচ্ছে। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ৫ জনের। নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন আরও ৩৬ জন। এই তথ্য জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

রবিবার (২২ জুন) বিকেলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, সারাদেশে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া নমুনা পরীক্ষার ভিত্তিতে এ তথ্য পাওয়া গেছে। করোনা ভাইরাসে মৃত্যুর সংখ্যা এবং আক্রান্তের হার বিগত কয়েক মাসের তুলনায় আবারও ঊর্ধ্বমুখী হতে শুরু করেছে, যা জনমনে নতুন করে শঙ্কার সৃষ্টি করেছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, নতুন শনাক্তদের মধ্যে বেশিরভাগই ঢাকা মহানগরী ও আশপাশের এলাকা থেকে। তবে কিছু রোগী বিভিন্ন বিভাগীয় শহর থেকেও শনাক্ত হয়েছেন। এ অবস্থায় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) এবং স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা সংক্রমণ প্রতিরোধে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।

বিশেষজ্ঞদের মতে, করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্টগুলো আগের তুলনায় অপেক্ষাকৃত সংক্রামক হলেও উপসর্গ মৃদু হতে পারে। তবে শারীরিকভাবে দুর্বল, বয়স্ক এবং দীর্ঘমেয়াদি রোগে আক্রান্তদের জন্য এটি আবারও প্রাণঘাতী হয়ে উঠছে। এমন পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা, গণপরিবহন ও জনসমাগমস্থলে মাস্ক পরা এবং হাত পরিষ্কার রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করছেন তারা।

এদিকে, বেশ কয়েকটি হাসপাতালে করোনা ইউনিটে রোগী ভর্তির সংখ্যা কিছুটা বাড়ছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। যদিও এখনো পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণের বাইরে যায়নি, তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অবহেলা করা হলে সংক্রমণ দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে এবং আবারও বড় ধরনের বিপর্যয়ের আশঙ্কা তৈরি হতে পারে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক ডা. তাহমিনা বেগম জানান, “আমরা নিয়মিত নমুনা পরীক্ষা ও পর্যবেক্ষণ চালিয়ে যাচ্ছি। এখনই আতঙ্কিত না হয়ে সতর্ক ও সচেতন হতে হবে। প্রয়োজন হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে এবং যাদের বুস্টার ডোজ বাকি রয়েছে, তারা যেন দ্রুত তা গ্রহণ করেন।”

অন্যদিকে, সাধারণ মানুষের মধ্যে এখনও করোনার প্রতি প্রয়োজনীয় সচেতনতার অভাব দেখা যাচ্ছে। গণপরিবহন, হাটবাজার কিংবা পার্কসহ জনসমাগমস্থলে অনেককেই দেখা যাচ্ছে মাস্কবিহীন অবস্থায়। স্বাস্থ্যবিধি মানার ক্ষেত্রে এই ধরনের অবহেলা আগাম বিপদের ইঙ্গিত হতে পারে বলে মনে করছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।

বিশ্লেষকরা বলছেন, করোনা ভাইরাস এখন অনেকটাই স্থানীয় রোগে পরিণত হয়েছে। তবে এটি সামান্য অবহেলাতেই ভয়াবহ রূপ নিতে পারে, যার প্রমাণ আমরা আগেও পেয়েছি। অতএব, প্রয়োজন সচেতনতা, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা এবং টিকাদান কার্যক্রমে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা।

বর্তমান পরিস্থিতিতে আবারও হাসপাতালগুলোতে কোভিড প্রস্তুতি জোরদার করা হচ্ছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকেও স্থানীয় প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

দেশের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে যারা নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করছেন, তাদের মতে আগামী কয়েক সপ্তাহ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যদি এখন থেকেই সবাই সচেতন না হন, তাহলে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে। তাই এখনই সময় আগেভাগে প্রস্তুতি নেওয়ার।

করোনাভাইরাসের এমন হঠাৎ উর্ধ্বগতি দেশে আবারও একধরনের অনিশ্চয়তা তৈরি করছে। বিশেষ করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ব্যবসা-বাণিজ্য এবং জনজীবনে এর প্রভাব পড়তে পারে বলে মনে করছেন অনেকেই। এক্ষেত্রে সরকার ও জনগণের সমন্বিত সচেতনতাই হতে পারে বড় বিপর্যয় রোধের একমাত্র উপায়।

সংক্রমণের বর্তমান পরিস্থিতি মাথায় রেখে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে আগামীতে নতুন করে কিছু নির্দেশনা আসতে পারে বলেও ইঙ্গিত মিলেছে। ইতোমধ্যে কিছু সীমান্ত এলাকায় কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে এবং বিদেশ থেকে আগতদের জন্য স্ক্রিনিং জোরদার করা হচ্ছে।

করোনার বর্তমান চিত্রে যে বার্তাটি সবচেয়ে গুরুত্ব পাচ্ছে তা হলো—অবহেলা নয়, সচেতনতাই রক্ষাকবচ। অতএব সবাইকে আবারও স্বাস্থ্যবিধির প্রতি আন্তরিক হতে হবে এবং নিজের পাশাপাশি সমাজকেও নিরাপদ রাখতে হবে।

repoter