
ছবি: -সংগৃহীত ছবি
দীর্ঘ ৩৩ বছর পর বহুল প্রতীক্ষিত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন আগামীকাল বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়জুড়ে সাজানো হয়েছে বিশেষ নিরাপত্তা ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা। নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, সব ধরনের প্রস্তুতি ইতোমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে।
আগামীকাল সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত নিরবচ্ছিন্নভাবে ভোটগ্রহণ চলবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের জন্য ১১টি এবং ছাত্রীদের জন্য ১০টি হলে একযোগে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া নির্বিঘ্ন করতে ২১টি ভোটকেন্দ্রে ২২৪টি বুথ স্থাপন করা হয়েছে। দায়িত্ব পালনে নিয়োজিত থাকবেন ৬৭ জন পোলিং অফিসার, যারা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, এবং তাঁদের সহায়তায় থাকবেন সমসংখ্যক সহায়ক পোলিং অফিসার। ভোটগ্রহণ শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট হলে গণনা অনুষ্ঠিত হবে।
শান্তিপূর্ণ নির্বাচন নিশ্চিত করতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে। ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা বলয় গড়ে তুলতে মোতায়েন থাকবে ১৫০০ পুলিশ, ৭ প্লাটুন বিজিবি এবং ৫ প্লাটুন আনসার। এছাড়াও ক্যাম্পাসের ভেতরে ও বাইরে অবস্থান করবে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্যরা, যেন কোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি সৃষ্টি না হয়।
নির্বাচনকে সামনে রেখে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিশেষ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। মীর মশরারফ হোসেন হল গেইট এবং প্রান্তিক গেইট ছাড়া বাকি সব গেইট আজ সন্ধ্যা ৬টা থেকে ১২ সেপ্টেম্বর দুপুর ১২টা পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। একই সঙ্গে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন ভাসমান দোকান, টারজান পয়েন্টের দোকান, পুরাতন পরিবহন সংলগ্ন দোকান, নতুন কলা ভবন সংলগ্ন মুরাদ চত্বরের দোকান, প্রান্তিক গেইটের উত্তর পাশের কাপড়ের মার্কেট ও প্রধান গেইটের আশপাশের দোকান আগামীকাল সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে প্রতিটি হলে ক্যান্টিন ও দোকান খোলা থাকবে এবং পর্যাপ্ত খাবারের মজুদ রাখার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
নির্বাচনকালীন সময়ে যান চলাচলেও বিধিনিষেধ থাকবে। আজ সন্ধ্যা ৬টা থেকে ১২ সেপ্টেম্বর দুপুর ১২টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে জরুরি সেবা (নিরাপত্তা, পানি, বিদ্যুৎ, গ্যাস ও ইন্টারনেট) ছাড়া অন্য সব ধরনের মোটরসাইকেল চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কেবলমাত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলাকার স্টিকার ও নির্বাচন কমিশনের স্টিকারযুক্ত গাড়িই এ সময়ে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে পারবে। শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের যানবাহনের ক্ষেত্রেও একই নিয়ম প্রযোজ্য হবে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানিয়েছে, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ক্যাম্পাসে সবার সহযোগিতা কামনা করা হচ্ছে। শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহণ শেষে দীর্ঘ তিন দশকেরও বেশি সময় পর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় আবারও শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন নেতৃত্বের দায়িত্ব তুলে দিতে যাচ্ছে।
repoter