ছবি: বেগম খালেদা জিয়া
বাংলাদেশের রাজনীতির এক অনন্য ও আপসহীন অধ্যায়ের অবসান ঘটেছে। বিএনপির চেয়ারপারসন ও তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া ইন্তেকাল করেছেন। মঙ্গলবার ভোর ৬টায় রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স ছিল প্রায় ৮০ বছর।
দীর্ঘ অসুস্থতার সঙ্গে লড়াই
বেগম খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে লিভার সিরোসিস, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিসসহ নানা জটিল রোগে ভুগছিলেন। পাশাপাশি কিডনি, ফুসফুস, হৃদযন্ত্র ও চোখের সমস্যাও ছিল। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে গত ২৩ নভেম্বর তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সমন্বয়ে গঠিত একটি মেডিকেল বোর্ড তাঁর চিকিৎসা তদারকি করছিল।
পরিবার ও দলীয় নেতাদের উপস্থিতি
মৃত্যুর সময় তাঁর পাশে ছিলেন পরিবারের সদস্যরা এবং দলের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ। শেষ মুহূর্তে স্বজনদের পাশাপাশি চিকিৎসক দলও উপস্থিত ছিলেন।
রাজনৈতিক জীবনের সংক্ষিপ্ত প্রোফাইল
বেগম খালেদা জিয়া বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী। তিনি ১৯৯১, ১৯৯৬ এবং ২০০১ সালে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও বহুদলীয় রাজনীতির বিকাশে তাঁর ভূমিকা ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রাজনৈতিক জীবনে তিনি বহুবার মামলা, কারাবাস ও নির্যাতনের মুখোমুখি হলেও আদর্শ থেকে বিচ্যুত হননি।
জন্ম ও শিক্ষা
১৯৪৫ সালের ১৫ আগস্ট তাঁর জন্ম। শিক্ষাজীবন শেষে তিনি শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। রাষ্ট্রপতি জিয়ার মৃত্যুর পর তিনি রাজনীতিতে সক্রিয়ভাবে যুক্ত হন এবং বিএনপির নেতৃত্ব গ্রহণ করেন।
রাষ্ট্রীয় শোক ও শেষকৃত্য
তাঁর মৃত্যুতে সরকার তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছে। জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় জানাজা অনুষ্ঠিত হবে এবং পরে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরের পাশে তাঁকে দাফন করা হবে।
দেশ-বিদেশের শোকবার্তা
রাষ্ট্রপতি, প্রধান উপদেষ্টা, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকারপ্রধানরা বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। তাঁর প্রয়াণে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে এক অপূরণীয় শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছে।
repoter

