
ছবি: ছবি: সংগৃহীত
যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক রপ্তানি উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। চলতি বছরের জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশ থেকে ৭৯ কোটি ৯৫ লাখ ৬০ হাজার ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৪৫.৯৩ শতাংশ বেশি। ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানি আয় ছিল ৫৪ কোটি ৭৯ লাখ ৫০ হাজার ডলার। ইউএস ডিপার্টমেন্ট অব কমার্সের আওতাধীন অফিস অব টেক্সটাইল অ্যান্ড অ্যাপারেল (অটেক্সা) প্রকাশিত হালনাগাদ পরিসংখ্যান থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশি পোশাকের চাহিদা বৃদ্ধির পাশাপাশি বৈশ্বিক বাজারে বাংলাদেশের অবস্থানও শক্তিশালী হচ্ছে। চলতি বছরের জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের আমদানিকারকরা বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ৭২০ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক আমদানি করেছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৯.৫ শতাংশ বেশি। ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি পোশাক আমদানির পরিমাণ ছিল ৬০৩ কোটি ডলার।
বাংলাদেশি তৈরি পোশাকের সবচেয়ে বড় বাজার যুক্তরাষ্ট্র। ২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে রপ্তানি বৃদ্ধির মাধ্যমে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্প ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে। গত বছর বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে ৭৩৪ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে, যা ২০২৩ সালের তুলনায় ০.৭৫ শতাংশ বেশি। তবে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে ২০২৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের রপ্তানি ২৫ শতাংশ কমে ৭২৯ কোটি ডলারে নেমে গিয়েছিল।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নীতির কারণে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পের জন্য নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হয়েছে। ট্রাম্প কানাডা, মেক্সিকো ও চীন থেকে আমদানিকৃত পণ্যে বাড়তি শুল্ক আরোপ করেছেন। বিশেষ করে চীনা পণ্যে ১০ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক বসানো হয়েছে। এ কারণে যুক্তরাষ্ট্রের ক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলো চীন থেকে ক্রয়াদেশ স্থানান্তর করতে পারে, যা বাংলাদেশের জন্য বাড়তি ক্রয়াদেশের সুযোগ সৃষ্টি করবে। এছাড়া, চীন থেকে কারখানা সরিয়ে অন্য দেশে স্থানান্তরের প্রবণতা বাড়তে পারে, যা বাংলাদেশের জন্য বিনিয়োগের নতুন দিগন্ত খুলে দিতে পারে।
অটেক্সার তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে চীন ১৬০ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি করেছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৩.৭২ শতাংশ বেশি। অন্যদিকে, ভিয়েতনাম থেকে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি হয়েছে ১৪৪ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক, যা গত বছরের তুলনায় ১৯.৯০ শতাংশ বেশি।
বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের উদ্যোক্তারা মনে করছেন, যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি পুনরুদ্ধার এবং চীনে বাড়তি শুল্কের কারণে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পের জন্য নতুন সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। তারা আশা করছেন, আগামী দিনগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের রপ্তানি আরও বাড়বে এবং বৈশ্বিক বাজারে বাংলাদেশের অবস্থান আরও শক্তিশালী হবে।
সর্বোপরি, বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পের এই অগ্রগতি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।
repoter