
ছবি: ছবি: সংগৃহীত
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহতরা তাদের সাত দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনায় যাওয়ার পথে পুলিশি বাধার সম্মুখীন হয়ে রাজধানীর শাহবাগে হোটেল ইন্টার কন্টিনেন্টালের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন।
রোববার সন্ধ্যায় মিরপুর সড়ক ছেড়ে তারা প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের দিকে রওনা দিলে, রাত ৭টা ৩৯ মিনিটে শাহবাগে পৌঁছানোর পর পুলিশের বাধায় তারা সেখানে অবস্থান নেন। এর আগে শনিবার সকাল থেকে তারা আগারগাঁও ও শিশুমেলা মোড়ে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ চালিয়ে যান, যেখানে তারা সুচিকিৎসা, পুনর্বাসন ও রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির দাবিতে সোচ্চার ছিলেন।
আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, আহতদের অনেকেই এখনও উপযুক্ত চিকিৎসা পাচ্ছেন না এবং জুলাই ফাউন্ডেশন থেকে সহায়তা পেতে দীর্ঘসূত্রিতার শিকার হচ্ছেন। তাদের দাবি, দ্রুত সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে এবং প্রয়োজনে বিদেশে পাঠাতে হবে।
বিক্ষোভকারীদের অনেকেই রাস্তার মাঝখানে চাদর বিছিয়ে শুয়ে পড়েছেন, অনেকে বেঞ্চ পেতে বসে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। তারা বলেন, তাদের রক্তের বিনিময়ে স্বৈরাচার বিদায় নিয়েছে, অথচ তারাই আজ চিকিৎসা ও রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির জন্য লড়াই করতে বাধ্য হচ্ছেন। কেউ পুলিশের গুলিতে আহত হয়েছেন, কেউ টিয়ারশেলের কারণে দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছেন, আবার কেউ অঙ্গহানির শিকার হয়েছেন। অথচ সরকার তাদের অবহেলা করছে বলে অভিযোগ তাদের।
মো. আইয়ুব হোসেন নামে এক আন্দোলনকারী জানান, তাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা সড়ক ছাড়বেন না। উপদেষ্টারা আশ্বাস দিলেও তারা রাস্তা ছাড়বেন না, কারণ তারা তাদের প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলেছেন। বিকেল ৪টার মধ্যে দাবি না মানা হলে তারা সচিবালয়ের দিকে যাত্রা করবেন বলে ঘোষণা দেন। পরবর্তীতে আলটিমেটামের সময়সীমা সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বাড়ানো হয়।
শনিবার রাতেও আহতরা পঙ্গু হাসপাতালের সামনে অবস্থান নিয়ে তাদের সাত দফা দাবি উত্থাপন করেন। তাদের দাবিগুলো হলো—
১. আহত এবং শহীদদের হত্যার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিচার করতে হবে।
২. ফ্যাসিস্ট সরকারের অনুসারীদের সরকারি পদ থেকে অপসারণ ও গ্রেপ্তার করতে হবে।
৩. আহতদের ক্যাটাগরি সঠিকভাবে নির্ধারণ করতে হবে।
৪. আহতদের পুনর্বাসন প্রক্রিয়া যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে।
৫. তাদের সুচিকিৎসার সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
৬. আহত ও শহীদদের রাষ্ট্রীয় সম্মান ও আইনি সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে।
৭. আহতদের আর্থিক অনুদানের পরিমাণ বৃদ্ধি ও ভবিষ্যৎ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে।
repoter