ঢাকা,  বৃহস্পতিবার
৩ এপ্রিল ২০২৫ , ০৩:১৩ মিনিট

Donik Barta

শিরোনাম:

* চাঁদপুরের ৪০টি গ্রামে সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে ঈদ রবিবার * প্রতিযোগী না হয়ে প্রতিপক্ষ হলে ক্ষতিই নিজেদের: পঞ্চগড়ে সারজিস আলম * জুলাই বিপ্লবের শহীদ পরিবারদের পাশে নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক * ভূমিকম্প বিধ্বস্ত মিয়ানমারে যাচ্ছে বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীর উদ্ধারকারী দল * শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা গেছে, সৌদিতে রবিবার ঈদ উদযাপিত হবে * “বাংলাদেশ কোরআনের উর্বর ভূমি” — পিএইচপি কোরআনের আলো প্রতিযোগিতায় ধর্ম উপদেষ্টার উচ্ছ্বসিত প্রশংসা * চা শ্রমিকদের পাশে সিলেটের ডিসি — দুর্দশায় ত্রাণ নিয়ে হাজির প্রশাসন * সাত বছর পর পরিবারের সান্নিধ্যে ঈদ উদযাপন করছেন খালেদা জিয়া * মিয়ানমার ও থাইল্যান্ডে ভয়াবহ ভূমিকম্পে শতাধিক মৃত্যুর আশঙ্কা * আগামীকাল রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর ২ ঘণ্টার লেনদেন

ভৈরবে কাভার্ডভ্যান-অটোরিকশার সংঘর্ষে নিহত ৫, চালক পলাতক

repoter

প্রকাশিত: ০২:৪৯:১২অপরাহ্ন , ১৬ ডিসেম্বর ২০২৪

আপডেট: ০২:৪৯:১২অপরাহ্ন , ১৬ ডিসেম্বর ২০২৪

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: ছবি: সংগৃহীত

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের জগন্নাথপুর ব্রিজ-সংলগ্ন এলাকায় কাভার্ডভ্যান ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার মধ্যে সংঘর্ষে তিন নারীসহ পাঁচজন নিহত হয়েছেন। সোমবার সকাল ১০টার দিকে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সকালে দুটি কাভার্ডভ্যান নরসিংদীর নিলকুটি এলাকা থেকে ভৈরবের দিকে যাচ্ছিল। কাভার্ডভ্যান দুটি যখন জগন্নাথপুর ব্রিজ পার হচ্ছিল, তখন একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা দ্রুতগতিতে ওভারটেক করার চেষ্টা করে। সেই সময় বিপরীত দিক থেকে আরেকটি গাড়ি আসতে দেখে অটোরিকশাটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুই কাভার্ডভ্যানের মাঝখানে ঢুকে পড়ে। প্রথমে সামনে থাকা কাভার্ডভ্যানটিকে ধাক্কা দেয় অটোরিকশাটি এবং এর পর পেছনের কাভার্ডভ্যানটি সেটিকে চাপা দিয়ে চূর্ণবিচূর্ণ করে ফেলে।

এই সংঘর্ষের ফলে ঘটনাস্থলেই অটোরিকশায় থাকা পাঁচ যাত্রীর মৃত্যু হয়। নিহতদের মধ্যে তিনজন নারী এবং দুজন পুরুষ রয়েছেন। তবে তাৎক্ষণিকভাবে নিহতদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি।

খবর পেয়ে ভৈরব হাইওয়ে থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহগুলো উদ্ধার করে। দুর্ঘটনার পর মহাসড়কে কিছু সময়ের জন্য যান চলাচল ব্যাহত হলেও পুলিশ দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

ভৈরব হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো: সাজু মিয়া জানান, "কাভার্ডভ্যান ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার সংঘর্ষে চালকসহ মোট পাঁচজন নিহত হয়েছেন। কাভার্ডভ্যান দুটি আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে, তবে চালক দুজন ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে গেছেন। তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।"

ওসি আরও জানান, দুর্ঘটনার কারণ তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, দ্রুতগতিতে ওভারটেক করার সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে এই দুর্ঘটনা ঘটে। এদিকে নিহতদের পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ পাওয়া গেলে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

স্থানীয়রা জানান, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের এই অংশে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। বিশেষ করে ব্রিজ সংলগ্ন এলাকাটি অতিরিক্ত ঝুঁকিপূর্ণ বলে তারা অভিযোগ করেন। অটোরিকশা ও অন্যান্য ছোট যানবাহনের ওভারটেক করার প্রবণতা এবং কাভার্ডভ্যান ও ট্রাকের বেপরোয়া গতি এই ধরনের দুর্ঘটনার কারণ বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।

এ দুর্ঘটনার পর নিহতদের পরিবারে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিহতদের পরিচয় শনাক্ত করার প্রক্রিয়া চলছে এবং পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হচ্ছে।

এদিকে পুলিশ জানিয়েছে, আটক করা কাভার্ডভ্যান দুটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হবে। এছাড়া পলাতক চালকদের দ্রুত গ্রেপ্তার করতে অভিযান চালানো হচ্ছে। দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ উদঘাটনে প্রয়োজনীয় তদন্তের পাশাপাশি মহাসড়কে যানবাহন চলাচলে শৃঙ্খলা আনতে আরও কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে হাইওয়ে পুলিশ।

নিহতদের পরিবার ও স্থানীয় বাসিন্দারা এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনার জন্য দায়ীদের শাস্তি দাবি করেছেন। তারা মহাসড়কে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান।

দুর্ঘটনার খবর পেয়ে এলাকার অনেকেই ছুটে আসেন ঘটনাস্থলে। তারা জানান, এমন দুর্ঘটনা নিয়মিত ঘটছে এবং দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে আরও প্রাণহানি ঘটতে পারে। তারা মহাসড়কে নিয়ন্ত্রণহীন যান চলাচল বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানান।

এই ঘটনার পর মহাসড়কের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও ছোট যানবাহনগুলোর চলাচল নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে। পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দ্রুত এই সমস্যার সমাধান করবে বলে আশ্বাস দিলেও স্থানীয় বাসিন্দারা দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।

সড়ক দুর্ঘটনায় এই পাঁচটি তাজা প্রাণের মৃত্যু এলাকাবাসী ও নিহতদের পরিবারের জন্য এক গভীর শোকের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তদন্ত শেষে দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করার পাশাপাশি মহাসড়কের নিরাপত্তা জোরদার করতে প্রশাসন কার্যকর পদক্ষেপ নেবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।

repoter