
ছবি: ছবি: সংগৃহীত
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটরের বিশেষ পরামর্শক টবি ক্যাডম্যান ভারত সরকারের প্রতি ন্যায়বিচারের স্বার্থে শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর আহ্বান জানিয়েছেন। সোমবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে শুনানি শেষে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ প্রত্যাশার কথা তুলে ধরেন।
শেখ হাসিনাকে ফেরানোর বিষয়ে দেওয়া চিঠির প্রেক্ষিতে ভারতের নীরবতা নিয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে ক্যাডম্যান বলেন, “বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যথাযথভাবে ভারতকে এই প্রত্যর্পণের জন্য আহ্বান জানিয়েছে। তবে এটি ভারতের অভ্যন্তরীণ সিদ্ধান্ত যে তারা ন্যায়বিচারের পক্ষে দাঁড়াবে, নাকি তাকে বিচারের মুখোমুখি না করার পক্ষে অবস্থান নেবে। আমি আশা করি ভবিষ্যতে তারা সুবিচারের পক্ষে অবস্থান নেবে।”
তিনি আরও বলেন, “চিঠির জবাবে ভারতকে কোনো পদক্ষেপ নিতে জোর করতে পারে না বাংলাদেশ। কিন্তু আমরা আশা করি, ভারত মানবাধিকার ও আইনের শাসনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে তাকে এ দেশে ফেরত পাঠাবে। এতে করে তিনি বিদ্যমান আইন অনুযায়ী আত্মপক্ষ সমর্থনের পূর্ণ সুযোগ পাবেন।”
সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে ক্যাডম্যান জানান, “আমি এখানে একজন পেশাদার আইনজ্ঞ হিসেবে কাজ করতে এসেছি এবং তাই করব। অতীতের কোনো ঘটনা বা আমার ব্যক্তিগত কার্যকলাপ এ প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করবে না। বিচার প্রক্রিয়া সময়সাপেক্ষ ও জটিল। তাই এর সঠিক বাস্তবায়নের জন্য তাড়াহুড়া করার কোনো সুযোগ নেই। আমরা আইন অনুযায়ী এগিয়ে যাব।”
তিনি আরও বলেন, “চিফ প্রসিকিউটর যথাযথভাবে সবকিছু গুছিয়ে এনেছেন। তিনি নিশ্চিত করেছেন যেন আইন পুরোপুরি আমাদের সহযোগিতা করে। আমি আত্মবিশ্বাসী যে, এই পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজগুলো সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হবে। ট্রাইব্যুনালে যতদিন কাজ করব, ততদিন আইনগত কাঠামো উন্নত করার বিষয়ে আলোচনা অব্যাহত থাকবে। এর পাশাপাশি অন্যান্য আইনি বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বিদ্যমান কাঠামোয় পরিবর্তন আনার বিষয়ে মতবিনিময় করব। এই পরিবর্তনগুলো বাস্তবায়িত হলে বিচার প্রক্রিয়া আরও নিরপেক্ষ, সহজ এবং আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের উপযোগী হবে।”
উল্লেখ্য, টবি ক্যাডম্যান ব্রিটিশ আইনজীবী এবং লন্ডনভিত্তিক ল’ ফার্ম ‘গুয়ের্নিকা ৩৭’-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা। তিনি ‘গুয়ের্নিকা-৩৭ চেম্বার্স’-এর যুগ্ম প্রধান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন। গত ২০ নভেম্বর তাকে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটরের বিশেষ পরামর্শক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।
নিয়োগের পর চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম এক বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, টবি ক্যাডম্যানের এই নিয়োগ ট্রাইব্যুনালের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। এই নিয়োগ আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে বিচার প্রক্রিয়া আরও জোরদার করার একটি পদক্ষেপ।
টবি ক্যাডম্যান তার পেশাদারিত্ব এবং আন্তর্জাতিক আইনি কাঠামোর সঙ্গে বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থার সমন্বয়ের মাধ্যমে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
repoter