ছবি: ছবি: সংগৃহীত
যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁর প্রশাসন গঠনের কাজ প্রায় শেষ করেছেন। শনিবার, স্থানীয় সময়, ট্রাম্প তাঁর ১৫ সদস্যের মন্ত্রিসভার পূর্ণাঙ্গ তালিকা ঘোষণা করেছেন, যার মধ্যে ৫ জন নারী রয়েছেন। এগুলোর মধ্যে কিছু পরিচিত মুখ আবার নতুন মুখও রয়েছে। ট্রাম্পের এই মন্ত্রিসভা বৈচিত্র্যময় এবং নবীন ও প্রবীণদের সমন্বয়ে গঠিত। তবে, মন্ত্রিসভার সদস্যদের নিয়োগ চূড়ান্ত হতে হলে মার্কিন সিনেটের অনুমোদন প্রয়োজন।
এছাড়া, ট্রাম্প তাঁর প্রশাসন গঠনে যে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ন পদে নিয়োগ দিয়েছেন, সেগুলো বিশেষভাবে নজরকাড়া। ট্রাম্পের মন্ত্রিসভার নাম ঘোষণা হওয়ায় নিশ্চিত হয়েছে যে ২০ জানুয়ারি, ২০২১ সালে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেবেন।
মার্কো রুবিও – পররাষ্ট্রমন্ত্রী
ফ্লোরিডার সিনেটর মার্কো রুবিওকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে মনোনয়ন দিয়েছেন ট্রাম্প। রুবিও যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতির প্রতি দৃঢ় সমর্থক এবং তিনি আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে দৃঢ় দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করে থাকেন। কিউবা, ইরান এবং চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের ক্ষেত্রে রুবিও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। তিনি ইসরায়েল এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের দীর্ঘদিনের সমালোচক।
স্কট ব্যাসেন্ট – অর্থমন্ত্রী
ট্রাম্প তাঁর পরবর্তী প্রশাসনে অর্থমন্ত্রীর পদে স্কট ব্যাসেন্টকে মনোনয়ন দিয়েছেন। স্কট ব্যাসেন্ট ওয়াল স্ট্রিটের স্বনামধন্য বিনিয়োগকারী। ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারে ট্রাম্পকে তিনি সমর্থন জুগিয়েছিলেন এবং বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের করনীতি, সরকারি ঋণ এবং আন্তর্জাতিক অর্থনীতি নিয়ন্ত্রণ করবেন।
হওয়ার্ড লাটনিক – বাণিজ্যমন্ত্রী
ট্রাম্পের মন্ত্রিসভায় নতুন বাণিজ্যমন্ত্রী হিসেবে মনোনয়ন পেয়েছেন ধনকুবের হওয়ার্ড লাটনিক। তিনি মার্কিন বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ক্যানটর ফিৎসজেরাল্ডের প্রধান। ট্রাম্পের ভাষ্যে, লাটনিকের ৩০ বছরের অভিজ্ঞতা ওয়াল স্ট্রিটে তাঁকে সফলভাবে এই পদে দায়িত্ব পালনে সক্ষম করবে।
ব্রুক রলিন্স – কৃষিমন্ত্রী
ট্রাম্পের দীর্ঘদিনের সহযোগী ব্রুক রলিন্সকে কৃষিমন্ত্রী হিসেবে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। রলিন্স আমেরিকা ফার্স্ট পলিসি ইনস্টিটিউটের সহপ্রতিষ্ঠাতা ও প্রেসিডেন্ট এবং তিনি ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
লোরি শাভেজ-ডিরেমার – শ্রমমন্ত্রী
লোরি শাভেজ-ডিরেমারকে শ্রমমন্ত্রী হিসেবে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। তিনি মার্কিন কংগ্রেসের প্রতিনিধি পরিষদের সদস্য এবং ট্রেড ইউনিয়নগুলোর সমর্থন লাভ করেছেন।
ডগ বারগাম – স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
নর্থ ডাকোটার গভর্নর ডগ বারগাম স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পদে মনোনীত হয়েছেন। তিনি একসময় রিপাবলিকান পার্টি থেকে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হওয়ার দৌড়ে ছিলেন, তবে পরে ট্রাম্পের পক্ষেই কাজ করেন।
পিট হেগসেথ – প্রতিরক্ষামন্ত্রী
ফক্স নিউজের উপস্থাপক ও ন্যাশনাল গার্ডের সাবেক সদস্য পিট হেগসেথকে প্রতিরক্ষামন্ত্রী পদে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীকে নেতৃত্ব দেবেন।
আর এফ কে জুনিয়র – স্বাস্থ্যমন্ত্রী
রবার্ট এফ কেনেডি জুনিয়র, যিনি দীর্ঘদিন ধরে স্বাস্থ্য ও পরিবেশ নিয়ে কাজ করছেন, স্বাস্থ্যমন্ত্রী পদে মনোনয়ন পেয়েছেন। যদিও তিনি করোনার টিকার বিরোধিতা করে বিভিন্ন বিতর্কে জড়িয়েছেন।
ক্রিস রাইট – জ্বালানিমন্ত্রী
ক্রিস রাইটকে যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানিমন্ত্রী করা হয়েছে। তিনি জীবাশ্ম জ্বালানির পক্ষে এবং তেল-গ্যাসের উৎপাদন বাড়ানোর জন্য ট্রাম্পের পরিকল্পনাকে সমর্থন দেবেন।
পাম বন্ডি – অ্যাটর্নি জেনারেল
ফ্লোরিডার সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল পাম বন্ডি এই পদে মনোনয়ন পেয়েছেন। তিনি ট্রাম্পের আগের মেয়াদে গুরুত্বপূর্ণ আইনি দায়িত্ব পালন করেছেন।
সোন ডাফি – পরিবহনমন্ত্রী
সোন ডাফি, যিনি একসময় ফক্স নিউজের উপস্থাপক ছিলেন, পরিবহনমন্ত্রী হিসেবে মনোনীত হয়েছেন। তিনি মার্কিন কংগ্রেসের সাবেক সদস্য।
লিন্ডা ম্যাকমোহন – শিক্ষামন্ত্রী
ট্রাম্পের ট্রানজিশন টিমের কো-চেয়ার লিন্ডা ম্যাকমোহনকে শিক্ষামন্ত্রী হিসেবে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। তিনি ওয়াশিংটন ডিসিভিত্তিক আমেরিকা ফার্স্ট পলিসি ইনস্টিটিউটের বোর্ড চেয়ারম্যান।
ডগ কলিন্স – ভেটেরানস অ্যাফেয়ার্সমন্ত্রী
ইরাক যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী ডগ কলিন্স ভেটেরানস অ্যাফেয়ার্সমন্ত্রী হিসেবে মনোনয়ন পেয়েছেন।
ক্রিস্টি নোয়েম – হোমল্যান্ড সিকিউরিটি-বিষয়ক মন্ত্রী
সাউথ ডাকোটা অঙ্গরাজ্যের গভর্নর ক্রিস্টি নোয়েম হোমল্যান্ড সিকিউরিটি মন্ত্রীর পদে মনোনীত হয়েছেন।
স্কট টার্নার – আবাসন ও নগর উন্নয়নবিষয়ক মন্ত্রী
স্কট টার্নার আবাসন ও নগর উন্নয়নবিষয়ক মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করবেন।
এছাড়া, ট্রাম্পের মন্ত্রিসভার সদস্যরা সবাই নিজেদের ক্ষেত্রে অভিজ্ঞ এবং দক্ষ, এবং তারা যুক্তরাষ্ট্রের নানা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে প্রভাব বিস্তার করবেন।
repoter