
ছবি: ছবি: সংগৃহীত
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পানামা খাল দখল করার হুমকির প্রেক্ষিতে জাতিসংঘে অভিযোগ করেছে পানামা। জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস বরাবর এক চিঠি পাঠিয়ে দেশটি এই অভিযোগ জানায়।
চিঠিতে, পানামা সরকার জাতিসংঘ সনদের একটি অনুচ্ছেদের উল্লেখ করে, যেখানে উল্লেখ করা হয়েছে যে, কোনো সদস্য দেশকে অন্য দেশের আঞ্চলিক অখণ্ডতা বা রাজনৈতিক স্বাধীনতার বিরুদ্ধে ‘হুমকি বা শক্তি প্রয়োগ’ থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ২১ জানুয়ারি, মঙ্গলবার পাঠানো ওই চিঠিতে জাতিসংঘ মহাসচিব গুতেরেসকে বৈঠক ডাকার অনুরোধ না জানিয়ে, বিষয়টি জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে পাঠানোর আহ্বান জানানো হয়।
গত ২৩ ডিসেম্বর প্রথমবার পানামা খাল দখলের হুমকি দেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। সে দিন, অ্যারিজোনা অঙ্গরাজ্যে এক সমাবেশে ট্রাম্প বলেন, "ওই খালের মালিকানা ও নিয়ন্ত্রণ পানামা এবং তার জনগণের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল এবং সেটি ছিল যুক্তরাষ্ট্রের বদান্যতা। কিছু শর্তে পানামার তৎকালীন সরকার রাজি হয়েছিল বলেই খালের নিয়ন্ত্রণ তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল।"
তিনি আরও বলেন, "আমরা এটা চীনকে দেইনি, আমরা পানামাকে দিয়েছি। এবং আমরা এটি ফিরিয়ে নিচ্ছি।"
পানামার প্রেসিডেন্ট হোসে রাউল মুলিনো ট্রাম্পের এই হুমকির জবাবে বলেন, "খালটি পানামার আছে এবং থাকবে।" তিনি আরও জানান, হংকংভিত্তিক কনগ্লোমারেট সিকে হাচিসন হোল্ডিংসের সহায়তা সংস্থা হাচিসন পোর্টস পানামা খালের উভয় প্রান্তে বালবোয়া এবং ক্রিস্টোবাল বন্দর পরিচালনা করে। ২০২১ সালে, পানামা পোর্টস কোম্পানির কনসেশন চুক্তির মেয়াদ ২৫ বছর বাড়ানো হয়।
মুলিনো বলেন, "আমরা কোনো দেশের হস্তক্ষেপ মেনে নেব না, এবং আমাদের দেশের স্বার্থ রক্ষায় কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।"
পানামার দাবি অনুযায়ী, ট্রাম্পের হুমকি আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন হিসেবে গণ্য হতে পারে, বিশেষ করে ওই সনদ যা আঞ্চলিক অখণ্ডতা এবং রাজনৈতিক স্বাধীনতা রক্ষার বিষয়ে নির্দেশনা দেয়।
পানামা সরকারের এক শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, “এই ধরনের হুমকি আন্তর্জাতিক সম্পর্কের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে এবং এটি আমাদের দেশের সার্বভৌমত্বের প্রতি একটি অগ্রহণযোগ্য হস্তক্ষেপ।”
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পানামা খালটির প্রধান ব্যবহারকারী, এর পরে আসে চীন। ২০০০ সাল থেকে এই জলপথটি পানামার রাষ্ট্রীয় কোষাগারে ৩০ বিলিয়ন ডলারের বেশি অবদান রেখেছে, যার মধ্যে গত অর্থবছরে প্রায় ২.৫ বিলিয়ন ডলার রয়েছে।
পানামা সরকার এ ব্যাপারে তদন্তের আহ্বান জানিয়ে সুষ্পষ্টভাবে জানিয়ে দেয়, "আমরা কোনো দেশের বা নেতার কাছ থেকে আমাদের জাতীয় সম্পত্তি ছাড়তে প্রস্তুত নই।"
বর্তমানে, পানামা খাল বিশ্ব বাণিজ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি নৌপথ। এটি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পণ্য পরিবহন দ্রুত এবং সস্তা করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি মাধ্যম হিসেবে বিবেচিত।
repoter