ঢাকা,  বৃহস্পতিবার
৩ এপ্রিল ২০২৫ , ০৩:২৪ মিনিট

Donik Barta

শিরোনাম:

* চাঁদপুরের ৪০টি গ্রামে সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে ঈদ রবিবার * প্রতিযোগী না হয়ে প্রতিপক্ষ হলে ক্ষতিই নিজেদের: পঞ্চগড়ে সারজিস আলম * জুলাই বিপ্লবের শহীদ পরিবারদের পাশে নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক * ভূমিকম্প বিধ্বস্ত মিয়ানমারে যাচ্ছে বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীর উদ্ধারকারী দল * শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা গেছে, সৌদিতে রবিবার ঈদ উদযাপিত হবে * “বাংলাদেশ কোরআনের উর্বর ভূমি” — পিএইচপি কোরআনের আলো প্রতিযোগিতায় ধর্ম উপদেষ্টার উচ্ছ্বসিত প্রশংসা * চা শ্রমিকদের পাশে সিলেটের ডিসি — দুর্দশায় ত্রাণ নিয়ে হাজির প্রশাসন * সাত বছর পর পরিবারের সান্নিধ্যে ঈদ উদযাপন করছেন খালেদা জিয়া * মিয়ানমার ও থাইল্যান্ডে ভয়াবহ ভূমিকম্পে শতাধিক মৃত্যুর আশঙ্কা * আগামীকাল রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর ২ ঘণ্টার লেনদেন

ট্রাম্পের আমেরিকা কি এশিয়ায় নতুন অধ্যায়ের সূচনা করবে?

repoter

প্রকাশিত: ০৭:৩৩:০৪অপরাহ্ন , ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

আপডেট: ০৭:৩৩:০৪অপরাহ্ন , ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: ছবি: সংগৃহীত

বিশ্বের অন্যতম পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্রের রয়েছে শক্তিশালী অর্থনীতি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় আধিপত্য এবং বিশ্বসেরা প্রতিরক্ষা বাহিনী। ডোনাল্ড ট্রাম্পের পুনরায় হোয়াইট হাউসে ফিরে আসা আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে বড় প্রভাব ফেলতে পারে। ট্রাম্প প্রশাসনের দ্বিতীয় দফায় আমেরিকা কীভাবে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং মিয়ানমারের প্রতি দৃষ্টি নিবদ্ধ করবে তা নিয়ে চলছে জল্পনা। বিশেষত, মিয়ানমারের বিপুল খনিজ সম্পদ এবং চীনের ভূকৌশলগত প্রভাবকে কীভাবে মোকাবিলা করবে ট্রাম্প প্রশাসন, তা এখনো অনিশ্চিত।

বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের একটি বাণিজ্য যুদ্ধের আশঙ্কা রয়েছে। চীনের প্রতি কঠোর অবস্থান বজায় রাখার সম্ভাবনা থাকলেও মিয়ানমার ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক কোন দিকে মোড় নেবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। মিয়ানমার নিয়ে ওয়াশিংটনের দীর্ঘমেয়াদী আগ্রহের অভাব এবং বর্তমান সেনা শাসিত জান্তার সঙ্গে চীন ও রাশিয়ার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক পরিস্থিতিকে আরও জটিল করেছে।

১৯৮৮ সালে সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে গণঅভ্যুত্থানের পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র মিয়ানমারের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে সম্পৃক্ত। তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ এবং তার স্ত্রী লরা বুশ দেশটির গণতান্ত্রিক আন্দোলন এবং বিরোধীদলীয় নেত্রী অং সান সু চিকে সমর্থন দিয়েছিলেন। এরপর প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা তার ‘পিভট টু এশিয়া’ নীতির অংশ হিসেবে মিয়ানমারে সফর করেন এবং নিষেধাজ্ঞা শিথিল করেন।

তবে বর্তমান পরিস্থিতি একেবারে ভিন্ন। মিয়ানমারের সামরিক জান্তা গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে রাশিয়া এবং চীনের সঙ্গে কৌশলগত সম্পর্ক স্থাপন করেছে। ২০২১ সালের অভ্যুত্থানের পর মিয়ানমারে রাজনৈতিক অস্থিরতা চরমে পৌঁছেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্র মিয়ানমারের সঙ্গে সম্পর্ক হ্রাস করে জান্তার ওপর বেশ কিছু নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।

তবে প্রশ্ন হচ্ছে, ট্রাম্প প্রশাসন এই অঞ্চলে নতুন কোনো উদ্যোগ নেবে কি না। ট্রাম্প তার প্রথম মেয়াদে মিয়ানমারের গণতন্ত্র ও মানবাধিকার ইস্যুতে খুব একটা আগ্রহ দেখাননি। যদিও মিয়ানমারের বিরোধী দল ও সক্রিয় কর্মীরা ট্রাম্প প্রশাসনের মনোযোগ আকর্ষণের চেষ্টা করবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

মার্কিন কংগ্রেস ২০২২ সালে বার্মা অ্যাক্ট পাস করেছে, যার লক্ষ্য ছিল মিয়ানমারের জনগণকে গণতান্ত্রিক ভবিষ্যতের পথে সমর্থন দেওয়া। তবে এই আইন কার্যকর করার কোনো বাস্তব পদক্ষেপ এখনো দেখা যায়নি।

বিশ্লেষকরা মনে করেন, মিয়ানমারের প্রতি ওয়াশিংটনের সীমিত আগ্রহ এবং স্টেট ডিপার্টমেন্টের নীতিগত অগ্রাধিকারের অভাবের কারণে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ট্রাম্প প্রশাসনের কার্যক্রম সীমিত থাকবে। এতে চীনের প্রভাব বৃদ্ধির সম্ভাবনা আরও জোরালো হবে। চীন ইতোমধ্যেই মিয়ানমারের ভৌগোলিক অবস্থান এবং অর্থনৈতিক সম্পদের ওপর গুরুত্বপূর্ণ বিনিয়োগ করেছে।

চীনের এই আধিপত্য মোকাবিলায় মিয়ানমারের গণতান্ত্রিক শক্তি এবং ভবিষ্যতের বেসামরিক সরকারগুলোর মার্কিন নেতৃত্বের সহায়তা প্রয়োজন। তবে ট্রাম্প প্রশাসন এই অঞ্চলে কী ধরনের ভূমিকা পালন করবে, তা স্পষ্ট নয়।

ট্রাম্প প্রশাসনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে সিনেটর মার্কো রুবিওর নাম সামনে আসছে। ধারণা করা হচ্ছে, চীনের প্রতি কঠোর নীতি অনুসরণ করতে পারেন তিনি। তবে মিয়ানমারের গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে সমর্থন দিয়ে কীভাবে তিনি নেতৃত্ব দেখাবেন, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতি এবং ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের কৌশলগত গুরুত্ব বিশ্ব রাজনীতির ক্ষেত্রে অপরিসীম। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশলকে আরও শক্তিশালী করতে চায়। তবে মিয়ানমারের জান্তা সরকার এই কৌশলের জন্য একটি বড় বাধা হিসেবে রয়ে গেছে।

মিয়ানমারের জনগণ যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে শক্তিশালী নেতৃত্ব এবং আন্তর্জাতিক সমর্থন আশা করে। গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার জন্য তারা ট্রাম্প প্রশাসনের সহযোগিতা প্রত্যাশা করছে। তবে যুক্তরাষ্ট্র কীভাবে মিয়ানমার এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় তার ভূমিকা পুনঃস্থাপন করবে, তা নিয়ে এখনো অনিশ্চয়তা রয়ে গেছে।

repoter