
ছবি: ছবি: সংগৃহীত
যুক্তরাজ্যের ট্রেজারি ও নগর বিষয়ক মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিক একাধিক অভিযোগের প্রেক্ষিতে পদত্যাগ করেছেন। তবে এই পদত্যাগের পরও তাকে ঘিরে বিতর্ক থামেনি। টিউলিপের পদত্যাগের ঘটনায় ব্রিটিশ রাজনীতিতে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে। এ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমার নিজ দলের সদস্যদের চাপের মুখে পড়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী স্টারমারের ঘনিষ্ঠ বন্ধু হিসেবে পরিচিত টিউলিপকে নিয়ে বিতর্কের মধ্যে এবার মুখ খুলেছেন বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ ধনকুবের ও প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ইলন মাস্ক। বুধবার (১৫ জানুয়ারি) সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে একটি পোস্টে তিনি বলেছেন, দুর্নীতিবিরোধী কাজের দায়িত্বে থাকা লেবার পার্টির মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিক নিজেই দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত।
মাস্ক তার মন্তব্যটি করেছেন মারিও নাউফালের একটি টুইট শেয়ার করে। সেখানে টিউলিপের বিরুদ্ধে বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগের কথা উল্লেখ ছিল। যদিও টিউলিপ তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তার দাবি, সরকারকে অপ্রয়োজনীয় বিতর্ক থেকে রক্ষা করতেই তিনি পদত্যাগ করেছেন।
টিউলিপ সিদ্দিক ব্রিটেনের ক্ষমতাসীন লেবার মন্ত্রিসভার একজন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিলেন। দল ক্ষমতায় আসার পর তিনি অর্থমন্ত্রণালয়ের ইকনোমিক সেক্রেটারি টু দি ট্রেজারি অ্যান্ড সিটি মিনিস্টার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তার দায়িত্ব ছিল যুক্তরাজ্যের অর্থবাজারে শৃঙ্খলা আনা ও দুর্নীতি দমন।
তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে টিউলিপের বিরুদ্ধে বেশ কিছু গুরুতর অভিযোগ ওঠে। অভিযোগগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল লন্ডনের একটি বিলাসবহুল ফ্ল্যাটের আয় লুকানো, আওয়ামী ঘনিষ্ঠ একজন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে বিনামূল্যে ফ্ল্যাট গ্রহণ, একজন ব্যারিস্টারের স্ত্রীকে হয়রানি করা, অন্তঃসত্ত্বা এক সাংবাদিককে হুমকি দেওয়া, এবং বাংলাদেশের রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের দুর্নীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা।
এমন অবস্থায় রাজনৈতিক ও সামাজিক চাপের মুখে গত মঙ্গলবার তিনি পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। তার পদত্যাগের পরপরই ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমার তার স্থলাভিষিক্ত হিসেবে এমা রেনল্ডসকে নিয়োগ দেন।
টিউলিপের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ ও তার পদত্যাগ ব্রিটিশ রাজনীতিতে বড় ধরনের আলোড়ন তুলেছে। লেবার পার্টির একাধিক সদস্য টিউলিপ ইস্যুতে সরকারের নীতিগত অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। এর পাশাপাশি আন্তর্জাতিক পর্যায়েও টিউলিপের কর্মকাণ্ড নিয়ে সমালোচনা অব্যাহত রয়েছে।
টিউলিপ সিদ্দিকের পদত্যাগ এবং তাকে ঘিরে বিতর্ক লেবার পার্টির ভাবমূর্তিতে প্রভাব ফেলেছে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন। যদিও তার সমর্থকরা এই ঘটনাকে ষড়যন্ত্র বলে দাবি করেছেন।
repoter