
ছবি: ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর দুর্নীতি ও অনিয়মের সঙ্গে নাম জড়িয়ে যুক্তরাজ্যে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছেন টিউলিপ সিদ্দিক। বিষয়টি নিয়ে তদন্তের মুখে মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) মন্ত্রিত্ব থেকে সরে দাঁড়ান তিনি। শেখ পরিবারের সঙ্গে তার সম্পর্ক এবং অর্থ আত্মসাতের অভিযোগের কেন্দ্রে রয়েছে ১২ বছর পুরনো একটি ছবি।
২০১৩ সালে তোলা ছবিতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, শেখ হাসিনা, তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় এবং টিউলিপ সিদ্দিককে একসঙ্গে দেখা যায়। এই ছবিটি ২০১৫ সালে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ার পর থেকেই যুক্তরাজ্যের লেবার পার্টির ভেতরে টিউলিপকে ঘিরে সন্দেহ দানা বাঁধে। টিউলিপ অবশ্য বারবার দাবি করেছেন যে তার পরিবারের সঙ্গে তার সম্পর্ক শুধুই আত্মীয়তার।
"দ্য গার্ডিয়ান"-এ প্রকাশিত একটি বিশ্লেষণে বলা হয়, ২০১৩ সালের এই ছবিটি ক্রেমলিনে শেখ হাসিনা ও পুতিনের মধ্যে একটি অস্ত্র চুক্তি এবং রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের আর্থিক লেনদেনের মধ্যস্থতায় টিউলিপের সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
২০১৫ সালে যখন টিউলিপ হ্যাম্পস্টেড এবং কিলবার্ন আসনে লেবার পার্টির প্রার্থী ছিলেন, তখন এই ছবিটি নতুন করে বিতর্কের জন্ম দেয়। এ নিয়ে দলের ভেতরে উদ্বেগ দেখা দিলেও টিউলিপ তা উড়িয়ে দিয়ে বলেছিলেন, তিনি কেবল তার খালার সঙ্গে দেখা করার জন্যই অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন এবং আনুষ্ঠানিক কোনো দলের অংশ ছিলেন না।
তবে সাম্প্রতিক সময়ে শেখ হাসিনার সরকারের রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পে ৫০০ কোটি ডলার আত্মসাতের অভিযোগ টিউলিপের বিরুদ্ধে নতুন করে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম "গ্লোবাল ডিফেন্স কর্প"-এর এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, রাশিয়ার সহযোগিতায় এই প্রকল্পের মাধ্যমে শেখ হাসিনা এবং তার পরিবারের জন্য অর্থ আত্মসাতের সুযোগ তৈরি হয়। এতে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে টিউলিপ সিদ্দিক এবং সজীব ওয়াজেদ জয়ের নাম উল্লেখ করা হয়।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, প্রকল্পটি বাস্তবায়নকারী সংস্থা "রোসাট্রম" মালয়েশিয়ার একটি ব্যাংকের মাধ্যমে এই অর্থের লেনদেন করে। এই চুক্তি থেকে পাচারকৃত অর্থের ৩০ শতাংশ টিউলিপ, শেখ রেহানা এবং পরিবারের অন্য সদস্যদের ভাগে যায়।
টিউলিপের এই মধ্যস্থতা এবং পরিবারের সঙ্গে আর্থিক সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি নিয়ে যুক্তরাজ্যের রাজনীতিতেও ব্যাপক সমালোচনা চলছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, টিউলিপের পতনের ঘণ্টা ১২ বছর আগেই বেজে গিয়েছিল, যার কেন্দ্রে রয়েছে এই বিতর্কিত ছবি।
repoter