
ছবি: ছবি: সংগৃহীত
বঙ্গোপসাগর ও কর্ণফুলী নদীতে চলাচলকারী বিভিন্ন কার্গো জাহাজ ও অয়েল ট্যাংকারে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম ও সেবা সরবরাহকারী ঠিকাদারদের হুমকি-ধমকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
নৌ-সেবা খাতে নিয়োজিত ‘খাজা শিপিং লাইন্স’ নামের একটি প্রতিষ্ঠানের মালিক ইকবাল হোসেন এ বিষয়ে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেনের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। একইসঙ্গে নগরীর ইপিজেড থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন এবং জেলা প্রশাসকের কাছেও অভিযোগ জমা দিয়েছেন।
অভিযোগে ইকবাল হোসেন চারজনের নাম উল্লেখ করেছেন, যারা নৌখাতে অরাজকতা সৃষ্টি করছে বলে দাবি করেছেন। অভিযুক্তরা হলেন মোহাম্মদ শুক্কুর সওদাগর, মোহাম্মদ তসলিম, মোহাম্মদ রফিক মাঝি ও মনির। অভিযোগে বলা হয়েছে, এই চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন জাহাজের মাস্টার ও স্টাফদের ভয়ভীতি দেখিয়ে জ্বালানি তেলসহ অন্যান্য সরঞ্জাম দখল করার চেষ্টা করছে।
নৌ-সেবা সংশ্লিষ্টরা জানান, ‘খাজা শিপিং লাইন্স’ দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন কার্গো জাহাজ ও অয়েল ট্যাংকারের মাধ্যমে পদ্মা, মেঘনা, যমুনা ও আরএম ৩, ৪, ৫, ৬, ৭ ও ৯ নম্বর জেটি ঘাটে জনবল, খাদ্য সামগ্রী, চাল-মুরগি ও জ্বালানি তেল সরবরাহের বৈধ দায়িত্ব পালন করে আসছে। অথচ সম্প্রতি একটি প্রভাবশালী চক্র তাদের ব্যবসা দখলের অপচেষ্টা চালাচ্ছে। চক্রটি বিভিন্ন সময় নৌকার মাঝি, শ্রমিক ও স্টাফদের ভয় দেখিয়ে কাজে বাধা সৃষ্টি করছে।
অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, পূর্ববর্তী সরকারের আমলে এই চক্রটি বিভিন্ন কোম্পানির অয়েল ট্যাংকারের মাস্টার ও স্টাফদের জোরপূর্বক সরকারি জ্বালানি তেল সরবরাহে বাধ্য করত। এমনকি মাঝ সমুদ্রে অবস্থানরত জাহাজ থেকে জ্বালানি তেল আত্মসাৎ করার মতো গুরুতর অপরাধের সাথেও তারা যুক্ত ছিল বলে জানা গেছে।
ইকবাল হোসেন বলেন, “আমরা দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন গ্রুপের জাহাজের পাশাপাশি কিছু কোম্পানির চার্টারে চালিত জাহাজে ও লোকাল ট্রিপের মাধ্যমে বিভিন্ন পাওয়ার প্লান্টের জন্য ফার্নেস অয়েল (এফও), ডিজেল, অকটেন ও পেট্রলসহ বিভিন্ন জ্বালানি তেল বহন ও সরবরাহ করে আসছি। অথচ একটি চক্র আমাদেরকে নানাভাবে হুমকি-ধমকি দিচ্ছে।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের কর্মীদের মিথ্যা মামলার ভয় দেখিয়ে কাজ থেকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। জাহাজের স্টাফ, মাঝি ও অন্যান্য শ্রমিকদের ভয়ভীতি দেখিয়ে আমাদের ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত করার চেষ্টা করছে তারা।”
এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এ ধরনের অভিযোগ গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করা হচ্ছে এবং দোষীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নৌপরিবহন ও ব্যবসা খাতে স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষও নজরদারি বৃদ্ধি করেছে।
নৌখাতে সুশৃঙ্খল পরিবেশ বজায় রাখতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, এই ধরনের অবৈধ কর্মকাণ্ড চলতে থাকলে দেশের নৌপরিবহন খাত মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে। তাই দ্রুত প্রশাসনিক উদ্যোগ গ্রহণ করা জরুরি।
repoter