
ছবি: ছবি: সংগৃহীত
ঢাকা, ৩ ফেব্রুয়ারি: রাজধানী ঢাকা আবারও বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় শীর্ষে উঠে এসেছে। আজ সোমবার সকাল ৮টা ৩৮ মিনিটে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ারের এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই) অনুযায়ী ঢাকার স্কোর ২৪৩। এই মাত্রাকে ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
একই সময়ে ২০৪ স্কোর নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে মিয়ানমারের ইয়াঙ্গুন শহর। পাকিস্তানের লাহোর ২০১ স্কোর নিয়ে তৃতীয়, বসনিয়া ও হার্জেগোভিনার রাজধানী সারায়েভো ১৯৮ স্কোর নিয়ে চতুর্থ এবং ভারতের দিল্লি ১৯৫ স্কোর নিয়ে পঞ্চম অবস্থানে রয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, একিউআই স্কোর ০-৫০ হলে তা ভালো হিসেবে বিবেচিত হয়, ৫১-১০০ মাঝারি, ১০১-১৫০ সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর, ১৫১-২০০ সাধারণ মানুষের জন্য অস্বাস্থ্যকর, ২০১-৩০০ অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর এবং ৩০১-এর বেশি হলে তা বিপজ্জনক হিসেবে গণ্য হয়।
দূষণের কারণ ও এর প্রভাব
ঢাকার বাতাসে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণাই দূষণের প্রধান উৎস বলে জানিয়েছে আইকিউএয়ার। বিশেষজ্ঞদের মতে, দীর্ঘদিন ধরে বায়ুদূষণের কবলে পড়া ঢাকার বাতাসের মান শীতকালে সবচেয়ে খারাপ হয়ে পড়ে, বর্ষাকালে কিছুটা উন্নতি দেখা দিলেও পরিস্থিতির আশানুরূপ পরিবর্তন হয় না।
২০১৯ সালে পরিবেশ অধিদফতর ও বিশ্বব্যাংকের এক যৌথ প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছিল যে, ঢাকার বায়ুদূষণের মূল তিনটি কারণ হলো—ইটভাটা থেকে নির্গত ধোঁয়া, যানবাহনের ধোঁয়া এবং নির্মাণ সাইটের ধুলো। এসব দূষণের ফলে রাজধানীবাসী নানা ধরনের শ্বাসকষ্ট, হৃদরোগ, ফুসফুসের ক্যানসারসহ বিভিন্ন জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, বায়ুদূষণের কারণে বিশ্বব্যাপী প্রতি বছর আনুমানিক ৭০ লাখ মানুষ মারা যায়। এর মধ্যে স্ট্রোক, হৃদরোগ, ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ, ফুসফুসের ক্যানসার এবং তীব্র শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণ অন্যতম কারণ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।
সমাধানের পথ কী?
পরিবেশবিদরা মনে করেন, ঢাকার বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে অবিলম্বে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরি। যানবাহনের দূষণ কমাতে ইলেকট্রিক বা কম দূষণকারী যানবাহন ব্যবহারের প্রতি জোর দিতে হবে। নির্মাণকাজে আধুনিক ও পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করা, ইটভাটার সংখ্যা কমিয়ে বিকল্প নির্মাণ উপকরণের প্রচলন এবং সবুজায়ন বাড়ানোর মাধ্যমে পরিস্থিতির উন্নতি করা সম্ভব।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সরকারের কঠোর মনিটরিং, জনসচেতনতা বৃদ্ধি এবং পরিবেশবান্ধব নীতিমালা কার্যকর করার মাধ্যমেই কেবল বায়ুদূষণের প্রকোপ কমানো সম্ভব হবে।
repoter