
ছবি: ছবি: সংগৃহীত
ভূমি সেবা ডিজিটাইজেশনের কার্যক্রমকে আরও গতিশীল করতে ‘ল্যান্ড সার্ভিস গেইটওয়ে’ নামে একটি আধুনিক ও সমন্বিত ডিজিটাল সেবা প্ল্যাটফর্ম চালুর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। ইতোমধ্যে ঢাকা জেলার ১৯টি ভূমি সার্কেলে ই-মিউটেশনের উন্নত সংস্করণ এবং সহজে ব্যবহারযোগ্য সফটওয়্যারের পরীক্ষামূলক কার্যক্রম শুরু হয়েছে। রবিবার প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের দপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের নেতৃত্বে চারটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমি সেবা এখন অনলাইনে নাগরিকদের জন্য উন্মুক্ত রয়েছে। এই সেবাগুলোর মধ্যে রয়েছে এলডি ট্যাক্স, ই-মিউটেশন, ই-পর্চা এবং ই-খতিয়ান ও মৌজা ম্যাপ। এর মধ্যে এলডি ট্যাক্স সেবাটি ইতোমধ্যে সারা দেশে চালু করা হয়েছে এবং এ পর্যন্ত প্রায় ২০০ কোটি টাকার ভূমি রাজস্ব আদায় করা হয়েছে।
সরকারের লক্ষ্য, নাগরিকদের ভোগান্তি কমিয়ে ডিজিটাল ভূমি সেবাগুলোর কার্যকারিতা বাড়ানো। এক্ষেত্রে আর বিচ্ছিন্নভাবে আলাদা সফটওয়্যারের মাধ্যমে নয়, বরং এলডি ট্যাক্স, ই-মিউটেশন, ই-পর্চা ও ই-খতিয়ানসহ চারটি সেবাকে একত্রে একটি সমন্বিত প্ল্যাটফর্মে যুক্ত করে ‘ল্যান্ড সার্ভিস গেইটওয়ে’ গড়ে তোলা হচ্ছে। এ ব্যবস্থায় আলাদা করে প্রতিটি সেবার জন্য নিবন্ধনের প্রয়োজন হবে না, বরং একটি মাত্র একক রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা সবগুলো সেবার সুবিধা নিতে পারবেন।
এই সিঙ্গেল সার্ভিস গেইটওয়ে চালু হলে দেশের প্রতিটি ভূমি সার্কেলের নাগরিকরা সহজে ও দ্রুত অনলাইনে ভূমি সেবা নিতে পারবেন বলে আশা প্রকাশ করা হয়েছে। তবে যেহেতু ই-মিউটেশন বিচারিক প্রক্রিয়ার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত এবং একাধিক সংস্থা ও বিভাগ এতে জড়িত, তাই এ সেবার পদ্ধতিগত সরলীকরণ এবং ই-নথি ব্যবস্থার উন্নয়নে আরও কিছু সময় এবং পরীক্ষামূলক কার্যক্রমের প্রয়োজন হবে বলে জানানো হয়েছে।
ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এ এস এম সালেহ আহমেদ, তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দপ্তর প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব এবং অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস নিজে ভূমি সেবার রূপান্তরে যৌথভাবে কাজ করছেন।
এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে ভবিষ্যতে ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার এবং বেসরকারি উদ্যোক্তাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে, যাতে তারা ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে অনলাইন ভূমি সেবা কার্যক্রমে যুক্ত হতে পারেন। এর ফলে জনগণ স্থানীয় পর্যায় থেকেই ডিজিটাল ভূমি সেবা গ্রহণ করতে পারবেন।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশে আদালতে দায়ের হওয়া মামলার প্রায় ৭০ শতাংশের বেশি ভূমি মালিকানা, দখল, বেদখল, অধিগ্রহণ ও হস্তান্তর সংক্রান্ত। এই প্রেক্ষাপটে সরকার মনে করে, ডিজিটাল ভূমি সেবা কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন করা গেলে মামলা কমে আসবে এবং নাগরিকদের হয়রানি হ্রাস পাবে।
সরকার এমন একটি ব্যবহারবান্ধব সফটওয়্যার এবং সমন্বিত ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে ভূমি সংক্রান্ত সব সেবা নাগরিকদের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
repoter