
ছবি: ফাইল ছবি
হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নরওয়ের প্রবাসী যাত্রী সাঈদ উদ্দিনের রক্তাক্ত হওয়ার ঘটনায় দুই নিরাপত্তাকর্মীকে দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মঞ্জুর কবীর ভূঁইয়া বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) বেবিচক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, এ ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন ইতোমধ্যে জমা দেওয়া হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট দুই নিরাপত্তাকর্মীকে তাদের বাহিনীতে ফেরত পাঠানো হয়েছে। তবে তদন্ত এখনও চলমান এবং পুরো প্রক্রিয়া শেষ হলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, নিরাপত্তাকর্মীদের আচরণে নম্রতা থাকা সত্ত্বেও তাদের আরও পেশাদার ও সদাচরণ করতে হবে। একইসঙ্গে যাত্রীদের কাছ থেকেও আরও সহনশীল আচরণের প্রত্যাশা করা হয়। তিনি জানান, বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় বর্তমানে ২৪টি সংস্থা কাজ করছে এবং তাদের সবার ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কেউ যদি দায়িত্ব পালনে ভুল করে, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বেবিচক চেয়ারম্যান তৃতীয় টার্মিনালসহ দেশের অন্যান্য বিমানবন্দরের উন্নয়ন প্রকল্প নিয়েও আলোচনা করেন। তিনি বলেন, সিলেট বিমানবন্দর বাদে অন্যান্য প্রকল্পগুলো ২০২৫ সালের মধ্যেই শেষ হবে। তৃতীয় টার্মিনালের কাজ প্রায় ৯৯ শতাংশ শেষ হয়েছে। বাকি থাকা সিলিং, বোর্ডিং ব্রিজ, এবং ভিভিআইপি জোনের কিছু কাজ আগামী মার্চের মধ্যেই শেষ করার পরিকল্পনা রয়েছে।
তিনি আরও জানান, ২.১ বিলিয়ন ডলারের এ প্রকল্পের অর্থায়ন জাইকার লোন এবং সরকারের অংশীদারিত্বে হয়েছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী, চলতি বছরের অক্টোবরে অথবা নভেম্বরে তৃতীয় টার্মিনাল উদ্বোধন করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে টার্মিনালের কার পার্কিং ডিজাইন নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পার্কিংটি ভবনের সামনে রাখা হয়েছে, যা সৌন্দর্য আরও বাড়াতে পারত যদি অন্য জায়গায় করা যেত। তবে জায়গার সীমাবদ্ধতার কারণে এটি সামনে রাখা হয়েছে।
তিনি বলেন, তৃতীয় টার্মিনালের অপারেশনস এবং রক্ষণাবেক্ষণের বিষয়ে শিগগিরই জাপানি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলোচনা করা হবে। প্রকল্পের মান নিয়ে কোনো ধরনের ছাড় দেওয়া হবে না।
এপিবিএন (এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন) প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এপিবিএনের দায়িত্ব বিমানবন্দরের বাইরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা। ২০১০ সালে তাদের এই কাজে নিয়োজিত করা হয়েছিল এবং তারা নির্ধারিত জায়গায় দায়িত্ব পালন করছে।
বেবিচক চেয়ারম্যান বলেন, বিমানবন্দরে নিয়োজিত কাস্টমস, আনসার, ইমিগ্রেশন পুলিশ, এভসেকসহ সব সংস্থার ওপর অর্পিত দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করা হচ্ছে। যদি কোনো সংস্থার সদস্য দায়িত্বে ব্যর্থ হয়, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তৃতীয় টার্মিনালের উদ্বোধন এবং উন্নয়ন প্রকল্পের অগ্রগতি নিয়ে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি জানান, সময়মতো কাজ শেষ করে বিমানবন্দরের আধুনিকায়ন নিশ্চিত করতে সব ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
repoter