
ছবি: ছবি: সংগৃহীত
একজন সাবেক র্যাব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এক নারীর ওপর যৌন সহিংসতার গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ অনুযায়ী, স্বামীকে ক্রসফায়ারের হুমকি দিয়ে ওই নারীকে একাধিকবার ধর্ষণ করা হয়। অভিযুক্ত র্যাব কর্মকর্তার নাম আলেপ বলে দাবি করা হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তার বিচারের দাবি তুলেছেন অনেকেই।
ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগ, পবিত্র শবেকদরের রাতে রোজা ভাঙিয়ে ধর্ষণ করা হয় ওই নারীকে। এর আগেও তিনবার তাকে একইভাবে নির্যাতন করা হয়। শেষবারের নির্যাতনের পর মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন তিনি এবং কিছুদিনের মধ্যে মৃত্যুবরণ করেন।
এই ঘটনার বিস্তারিত তথ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলম। তিনি মউদুদ সুজন নামের এক ব্যক্তির পোস্ট শেয়ার করেন, যা দ্রুতই ছড়িয়ে পড়ে। পোস্টে বলা হয়, একাধিকবার ধর্ষণের শিকার ওই নারী তার স্বামীকে এই দুঃসহ অভিজ্ঞতার কথা জানান। স্বামীকে ক্রসফায়ারের হুমকি দিয়ে তার স্ত্রীকে নির্যাতন করা হয় বলে অভিযোগ করেন তিনি।
মউদুদ সুজন তার পোস্টে লিখেছেন, "গুম হওয়া স্বামী বলেছেন, পবিত্র শবেকদরের দিনে রোজা ভাঙিয়ে ধর্ষণ করা হয় তার স্ত্রীকে। এর আগেও একাধিকবার একই ঘটনা ঘটানো হয়। সবশেষ ধর্ষণের পর স্ত্রী মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন এবং পরবর্তীতে মারা যান।"
তিনি আরও লেখেন, "ধর্ষক একজন ঊর্ধ্বতন র্যাব কর্মকর্তা, নাম আলেপ। স্বামী যখন বারবার তাকে ফোন দেন, তখন আলেপ জানান, ‘বন্দি নারী বা বন্দি পুরুষদের স্ত্রীদের সাথে এমন আচরণ এখানে অলিখিতভাবে স্বীকৃত।’"
এছাড়াও পোস্টে দাবি করা হয়, আলেপ নামে অভিযুক্ত ব্যক্তি আর্থিক অনটনে থাকাকালীন বিভিন্নজনের সহায়তায় পড়াশোনা শেষ করেন। পরবর্তীতে র্যাবে যোগদান করে নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েন। এক পুলিশ সুপারের সঙ্গে কথা বলার পর জানা যায়, আলেপ আগে থেকেই নানা কুখ্যাত কর্মকাণ্ডের জন্য ছিলেন।
পোস্টের শেষে মউদুদ সুজন লেখেন, "এই আলেপ এতটাই কুখ্যাত ছিল যে তাকে গ্রেপ্তার হওয়া এক মেজর জেনারেল ব্যবহার করতেন। তার ছায়ায় থেকে আলেপ এ ধরনের অপরাধ করে গেছে। এমনকি এসব কর্মকাণ্ডের জন্য তাকে বিভিন্ন পদকও দেওয়া হয়।"
এই ঘটনা প্রকাশের পর, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করে তার দ্রুত বিচারের দাবি তুলেছেন। একাধিকজন এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার চেয়ে সোচ্চার হয়েছেন।
সাম্প্রতিক সময়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ উঠলেও, এমন ঘটনা নতুন মাত্রা যোগ করেছে। বিশেষ করে একজন সাবেক র্যাব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এ ধরনের গুরুতর অভিযোগ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভাবমূর্তিকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।
এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে, সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়টি তদন্ত করে দোষীদের শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন বিভিন্ন মহল।
repoter