
ছবি: ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি দাবি করেছে, দেশে মোট ৪ লাখ ৮২ হাজার রেস্তোরাঁর মধ্যে ৭০ শতাংশ এখনও ভ্যাট নিবন্ধনের আওতায় আসেনি। সংগঠনটির মহাসচিব ইমরান হাসান বলেছেন, সরকারের উচিত ভ্যাট হার বৃদ্ধির পরিবর্তে ভ্যাটের আওতা বাড়ানো। বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির প্রায় ৬০ হাজার সদস্য রয়েছে, তবে এদের মধ্যে অনেকেই ভ্যাট নিবন্ধনের বাইরে। সরকার জাতীয় রাজস্ব বৃদ্ধির জন্য ভ্যাটের হার ৫ শতাংশ থেকে ১৫ শতাংশে উন্নীত করার যে প্রস্তাব দিয়েছে, তা রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ীদের জন্য বড় চাপ তৈরি করবে।
ইমরান হাসান বলেন, অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প বাতিলের মাধ্যমে ঘাটতি পূরণ সম্ভব। কিন্তু আইএমএফের শর্ত মেনে জনগণের ওপর অতিরিক্ত করের বোঝা চাপিয়ে দেওয়া কোনো সঠিক সমাধান নয়। তিনি আরও বলেন, গুলশান বা বনানীর মতো এলাকায় উচ্চ ভ্যাট প্রদান সম্ভব হলেও সাধারণ মানুষের জন্য ১৫ শতাংশ ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্কসহ মোট ২৫ শতাংশ কর পরিশোধ করা অবাস্তব।
তিনি জানান, রেস্তোরাঁ ব্যবসায় বর্তমানে ৫ শতাংশ ভ্যাট এবং ১০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক রয়েছে। ভ্যাটের হার ১৫ শতাংশে উন্নীত করা হলে তা ভোক্তাদের ওপর অতিরিক্ত করের চাপ সৃষ্টি করবে। বিশ্বে কোথাও খাবারে এত বেশি ভ্যাটের হার নেই বলে উল্লেখ করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের উপদেষ্টা খন্দকার রুহুল আমিন বলেন, যদি ভ্যাট হার ৫ শতাংশে রাখা হয়, তবে রাজস্ব আদায় শতভাগ নিশ্চিত হবে।
এদিকে, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বলেছে, দেশের ১৮ কোটি মানুষের মধ্যে মাত্র ৫ লাখ ৪৪ হাজার ভ্যাট নিবন্ধন রয়েছে, যা অত্যন্ত হতাশাজনক। এনবিআরের সদস্য (ভ্যাট বাস্তবায়ন) ড. মো. আব্দুর রউফ বলেছেন, ভ্যাট একটি স্বপ্রণোদিত কর ব্যবস্থা। যাঁরা ভ্যাট প্রদানে সক্ষম, তাঁদের নিজ উদ্যোগে অনলাইনে সহজেই নিবন্ধন করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে।
তবে অনেক ব্যবসায়ী এখনও স্বউদ্যোগে নিবন্ধন নেন না, যা এনবিআরকে বাধ্যতামূলক নিবন্ধন করার দিকে ঠেলে দেয়। এনবিআর আশা করছে, রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি তাদের সদস্যদের ভ্যাট নিবন্ধনে সহযোগিতা করবে এবং রেস্তোরাঁগুলোকে করের আওতায় আনতে কাজ করবে।
এনবিআর আরও জানায়, ভ্যাট বৃদ্ধি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের ওপর প্রভাব ফেলবে না এবং মূল্যস্ফীতিও নিয়ন্ত্রণে থাকবে। জনস্বার্থে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির কর হার কমানোর পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ রাজস্ব সংগ্রহ বৃদ্ধির লক্ষ্যে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, ভ্যাট বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত থেকে সরে না এলে তারা অনির্দিষ্টকালের জন্য রেস্তোরাঁ বন্ধ রাখার পথে যেতে বাধ্য হবে।
repoter