
ছবি: ছবি: সংগৃহীত
রাজধানীর রামপুরায় ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি এবং আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (এআইইউবি) দুই শিক্ষার্থী হত্যার বিচার দাবি করে বিক্ষোভ সমাবেশ এবং আংশিক অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) বিকেল চারটার দিকে রামপুরা ব্রিজে এই কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
সম্মিলিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে আয়োজিত এই কর্মসূচিতে শিহান (ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি) এবং সীমান্ত (এআইইউবি) হত্যার দ্রুত বিচার দাবি করা হয়। বক্তারা অভিযোগ করেন, শিহান ও সীমান্তকে পরিকল্পিতভাবে টার্গেট কিলিং করা হয়েছে।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা বলেন, সারা দেশে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা গুপ্তহত্যা ও হামলার শিকার হচ্ছেন। এসব হত্যাকাণ্ডের পেছনে শক্তিশালী চক্র সক্রিয় রয়েছে, যা শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তাহীনতার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এই চক্রকে সনাক্ত করে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন তারা।
বিক্ষোভকারীরা জানান, শুধু শিহান ও সীমান্ত নয়, সারা দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের জীবন হুমকির মুখে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে তারা বলেন, এসব ঘটনার দ্রুত তদন্ত করে দোষীদের আইনের আওতায় আনা না হলে ভবিষ্যতে আরও কঠোর আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
বক্তারা আরও বলেন, আজকের কর্মসূচি ছিল আংশিক অবরোধ। কিন্তু প্রশাসন যদি দ্রুত ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে আমরা পুরো রাজধানী অবরোধ করতেও পিছপা হব না। আমরা ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিচ্ছি। এর মধ্যে যদি শিহান ও সীমান্তের হত্যাকারীদের শনাক্ত করে তাদের গ্রেপ্তার না করা হয়, তবে রাজপথে কঠোর কর্মসূচি পালন করা হবে।
সমাবেশে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা এবং তাদের নিরাপত্তাহীনতার বিষয়টি দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত। এ ধরনের ঘটনা শিক্ষার্থীদের স্বাভাবিক জীবন এবং শিক্ষার পরিবেশকে বাধাগ্রস্ত করছে।
বিক্ষোভের সময় শিক্ষার্থীদের একটি বড় অংশ রামপুরা ব্রিজের গুরুত্বপূর্ণ অংশে অবস্থান নেন। এতে ওই এলাকার যান চলাচলে সাময়িক সমস্যা তৈরি হয়। তবে শিক্ষার্থীরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করেছেন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের বিষয়ে প্রশাসনের কোনো উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করেন।
শিক্ষার্থীদের এই বিক্ষোভ কর্মসূচি রাজধানীজুড়ে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও শিক্ষার্থীদের সমর্থনে সাধারণ জনগণের মন্তব্য দেখা গেছে। অনেকে শিহান ও সীমান্তের পরিবারের প্রতি সহানুভূতি জানিয়ে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।
উল্লেখ্য, ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী শিহান এবং এআইইউবির শিক্ষার্থী সীমান্ত সম্প্রতি পৃথক ঘটনায় নিহত হন। এ হত্যাকাণ্ডগুলোর কোনো স্পষ্ট কারণ এখনও জানা যায়নি। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ঘটনাগুলোর তদন্ত চলছে এবং দোষীদের খুঁজে বের করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে।
শিক্ষার্থীরা তাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
repoter