
ছবি: বাশার আল আসাদ ও ভ্লাদিমির পুতিন
সিরিয়ার ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ ও তার পরিবার রাশিয়ায় রাজনৈতিক আশ্রয় গ্রহণ করেছেন। সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের রিপোর্ট অনুযায়ী, তারা বর্তমানে মস্কোতে অবস্থান করছেন, তবে ক্রেমলিন এই খবর নিশ্চিত করতে অস্বীকার করেছে।
ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ জানিয়েছেন, আসাদের অবস্থান সম্পর্কে তিনি কিছু বলতে পারবেন না, তবে যদি প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও তার প্রশাসন বাশার আল আসাদ ও তার পরিবারের সদস্যদের আশ্রয় দেয়, তবে এটি পুরোপুরি পুতিনের সিদ্ধান্ত। পেসকভ আরো বলেন, রাষ্ট্রপ্রধানের অনুমতি ছাড়া এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব নয়।
এছাড়া, তিনি এও জানান যে, পুতিনের সঙ্গে আসাদের সাক্ষাতের কোনো পরিকল্পনা নেই। পেসকভ এই প্রসঙ্গে আরও বলেন, "রাশিয়া অতীতে বহু ক্ষমতাচ্যুত নেতাকে আশ্রয় দিয়েছে, যেমন ইউক্রেনের সাবেক প্রেসিডেন্ট ভিক্টর ইয়ানুকোভিচ।"
সিরিয়ায় চলমান বিদ্রোহী হামলা এবং বাশারের পতনের ঘটনা রাশিয়ার জন্য অবাক করার মতো ছিল। পেসকভ উল্লেখ করেছেন, "এটা সত্যিই বিশ্বের সকল দেশকে বিস্মিত করেছে, আমরাও এর বাইরে নই।" তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন যে, এই পরিস্থিতি আবারও সিরিয়ার জন্য অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করতে পারে।
রাশিয়া সিরিয়ায় কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ সামরিক এবং নৌঘাঁটি পরিচালনা করছে। ২০১৫ সালে বাশারের পক্ষ থেকে সামরিক হস্তক্ষেপ শুরু করেছিল রাশিয়া। সিরিয়ার ভবিষ্যতে রুশ সামরিক ঘাঁটির পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্নের উত্তরে পেসকভ বলেন, "এটি এখনই বলা সম্ভব নয়। আমরা তাদের সঙ্গে আলোচনা করছি যারা সিরিয়ায় ক্ষমতায় থাকবে এবং আমাদের সামরিক বাহিনীও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছে।"
সিরিয়ার বিদ্রোহী বাহিনীকে সমর্থনকারী তুরস্কের সঙ্গে রাশিয়া সংলাপ চালাচ্ছে, এমনটিও জানিয়েছেন পেসকভ।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, রাশিয়ার বার্তা সংস্থা তাস ও রিয়া নভস্তি থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে, বাশার আল আসাদ ও তার পরিবারের সদস্যরা মস্কো পৌঁছেছেন। গত রবিবার সিরিয়ার বিদ্রোহী বাহিনীর মাত্র ১২ দিনের অভিযানে আসাদ সরকার পতন ঘটে, যার ফলে তার দুই দশকের শাসনের অবসান হয়। এর আগে তার বাবা হাফিজ আল আসাদ প্রায় ২৯ বছর সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট ছিলেন।
বাশার আল আসাদ শাসনে আসার পর প্রথম দিকে সংস্কারের দিকে এগিয়ে গেলেও পরে তিনি তার বাবার মতো একনায়কতন্ত্রের পথ অনুসরণ করেন। তার শাসনকালে মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং বিরোধীদের দমন করার অভিযোগ ওঠে।
বিদ্রোহী বাহিনীর অভিযানের ফলে বাশার আল আসাদ ক্ষমতাচ্যুত হলে, রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একটি বিবৃতি দেয়, যেখানে বলা হয়, বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে আলোচনার পর বাশার প্রেসিডেন্ট পদ ছেড়ে দেশত্যাগে সম্মত হন, তবে তিনি কোথায় গেছেন বা কোথায় অবস্থান করছেন, সে বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি।
repoter