ছবি: ছবি: সংগৃহীত
ঢাকা, ১৮ নভেম্বর – পুলিশ ভেরিফিকেশনে রাজনৈতিক পরিচয় তুলে দেওয়ার সুপারিশ করেছে পুলিশ সংস্কার কমিশন। একই সঙ্গে পুলিশসহ সকল সরকারি বিভাগকে রাজনীতিমুক্ত রাখার আহ্বান জানিয়েছেন কমিশনের প্রধান সফর রাজ হোসেন। তিনি বলেন, “নিকট অতীতে গত ১৫ বছরে আমরা দেখেছি, পুলিশসহ বিভিন্ন সরকারি বিভাগের সদস্যরা রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংযুক্ত ছিলেন। এর ফলে দুর্নীতি এবং অনৈতিক পদোন্নতির মতো ঘটনাগুলো ঘটেছে। এগুলো বন্ধে সুপারিশ প্রণয়নের কাজ চলছে।”
সোমবার বিকেলে সচিবালয়ে উপদেষ্টার নিজ দপ্তরে পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রথম সভা শেষে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান সফর রাজ হোসেন। তিনি আরও বলেন, “১৮৯৮ সালের ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারা অনুযায়ী ওয়ারেন্ট ছাড়া কাউকে গ্রেপ্তার করার ক্ষেত্রে এবং ১৬৭ ধারায় পুলিশ রিমান্ডের ক্ষেত্রে হাইকোর্টের দেওয়া নির্দেশনা মেনে চলতে হবে। এছাড়া গ্রেপ্তারের সময় অভিযুক্তের পরিবারকে অবিলম্বে জানানো বাধ্যতামূলক করা হবে।”
হাইকোর্টের নির্দেশনা মেনে আইন প্রয়োগের তাগিদ
সভায় জানানো হয়, ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ও ১৬৭ ধারার প্রয়োগ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে মামলা চলছে। ব্লাস্টের পক্ষ থেকে করা একটি রিটে হাইকোর্ট নির্দেশনা দিয়েছিল, এসব ধারা প্রয়োগের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগও হাইকোর্টের নির্দেশনা বহাল রেখেছে। কমিশন প্রধান জানান, “আমাদের লক্ষ্য হলো আইনের প্রয়োগকে আরও সুশৃঙ্খল করা। কাউকে গ্রেপ্তার করলে তার পরিবারের কাছে তথ্য পৌঁছানো বাধ্যতামূলক করার বিষয়টি আইনগতভাবে নিশ্চিত করতে হবে।”
পুলিশের দুর্নীতি নিয়ে উদ্বেগ
পুলিশ বিভাগের দুর্নীতি নিয়ে কথা বলতে গিয়ে সফর রাজ হোসেন বলেন, “দুর্নীতি আমাদের এক নম্বর শত্রু। যখন কোনো বিভাগের দুর্নীতি কমে যায়, তখন সেখানে কর্মদক্ষতা বাড়ে এবং আইন-শৃঙ্খলার প্রতি মানুষের আস্থা বৃদ্ধি পায়। আমরা পুলিশের বেতন কাঠামো এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা নিয়েও আলোচনা করছি, যা আগামীকাল আরও বিস্তৃতভাবে আলোচনা করা হবে।”
সাদা পোশাকে গ্রেপ্তার নিয়ে নির্দেশনা আসছে
সাদা পোশাকে গ্রেপ্তার করা নিয়ে কোনো সুপারিশ এখনো করা হয়নি বলে জানান তিনি। তবে এ বিষয়ে একটি নির্দেশনা শিগগিরই দেওয়া হবে।
সফর রাজ হোসেন বলেন, “সরকারি বিভাগের সদস্যদের রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রেখে স্বচ্ছভাবে কাজ করতে হবে। গত ১৫ বছরে আমরা দেখেছি, রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে অনেক অদক্ষ ও অনৈতিক কাজ হয়েছে। পুলিশসহ সব সরকারি বিভাগকে এ ধরনের প্রভাবমুক্ত রাখতে হবে।”
পুলিশ সংস্কার কমিশনের কাজের অংশ হিসেবে এসব সুপারিশ ও নির্দেশনা কার্যকর করার জন্য আইন মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় একটি যুগ্ম সচিবকে কমিশনে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে
repoter