ঢাকা,  শুক্রবার
১৮ এপ্রিল ২০২৫ , ১০:৩৮ মিনিট

Donik Barta

শিরোনাম:

* ইউরোপে রাজনৈতিক আশ্রয় পেতে কঠিন হবে বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য * আলোচনায় অসন্তুষ্ট কারিগরি শিক্ষার্থীরা, আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা * চীন থেকে অর্থ আনার অনিয়মে জড়িত থাকার অভিযোগে এনবিআরের দুই কর্মকর্তা বাধ্যতামূলক অবসরে * ঢাকার চারপাশে গড়ে উঠছে ব্লু নেটওয়ার্ক: পানি সম্পদ উপদেষ্টা * বাংলাদেশ-পাকিস্তান সম্পর্ক নিয়ে ফলপ্রসূ আলোচনা * গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি বাড়ালেও সরবরাহ সংকট ও চুরি কমেনি * দেশজুড়ে বজ্রসহ বৃষ্টির আভাস, কোথাও কোথাও শিলাবৃষ্টির সম্ভাবনা * ২১ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন, বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি নেমে এসেছে ৬ দশমিক ৮২ শতাংশে * মাত্র ৮ দিনের মাথায় জামিনে মুক্ত ‘ডন মাসুদ’, এলাকায় ফের আতঙ্কের ছায়া * প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে বিএনপি প্রতিনিধি দল

প্রথম ছয় মাসে রাজস্ব ঘাটতি ৫৮ হাজার কোটি টাকা

repoter

প্রকাশিত: ০৯:১৪:৪৩অপরাহ্ন , ২৪ জানুয়ারী ২০২৫

আপডেট: ০৯:১৪:৪৩অপরাহ্ন , ২৪ জানুয়ারী ২০২৫

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: ছবি: সংগৃহীত

২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথমার্ধে সরকারের রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ লাখ ১৪ হাজার কোটি টাকা। তবে, জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে মোট রাজস্ব আদায় হয়েছে ১ লাখ ৫৬ হাজার ২৭৬ কোটি টাকা, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় ৫৮ হাজার কোটি টাকা কম। এই সময়ে রাজস্ব আদায় আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৫ দশমিক ৬৫ শতাংশ কমেছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে রাজস্ব আদায় ছিল ১ লাখ ৬৫ হাজার ৬৩০ কোটি টাকা।

রাজস্ব আদায়ে ঘাটতির কারণ হিসেবে রাজস্ব কর্মকর্তারা উল্লেখ করেছেন, গত জুলাই-আগস্টে দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা ও ছাত্র-জনতার আন্দোলনের ফলে ব্যবসা-বাণিজ্য বাধাগ্রস্ত হয়েছে। এতে আমদানি শুল্ক, ভ্যাট, এবং আয়কর আদায় উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে। এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান ও বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের রাজস্ব খাত সংস্কারের পরামর্শক কমিটির সদস্য মোহাম্মদ আবদুল মজিদ বলেন, ব্যবসা-বাণিজ্যের স্থবিরতার কারণে রাজস্ব আদায়ে ঘাটতির মাত্রা বেড়েছে।

চলতি অর্থবছরে ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও প্রথম ছয় মাসে মাত্র ৩২ শতাংশ পূরণ হয়েছে। এনবিআর জানায়, এ সময়ে আয়কর খাতে ৭৬ হাজার ৬৭ কোটি টাকার লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আদায় হয়েছে ৫২ হাজার ১৬২ কোটি টাকা। আমদানি শুল্ক খাতে ৬১ হাজার ৯৫২ কোটি টাকার লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আদায় হয়েছে ৪৯ হাজার ৮০ কোটি টাকা। ভ্যাট খাতে আদায় হয়েছে ৫৫ হাজার ১৭৭ কোটি টাকা, যেখানে লক্ষ্য ছিল ৬৬ হাজার ৩১৭ কোটি টাকা।

অর্থনীতিবিদরা মনে করেন, চলতি অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা সম্ভব হবে না। পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের একজন গবেষণা পরিচালক বলেন, বর্তমান অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রা অবাস্তব এবং তা অর্জনের সম্ভাবনা নেই। তিনি বলেন, চলতি বছরের প্রথম দিকে রাজনৈতিক অস্থিরতা, আমদানিতে ধীরগতি, এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যে শুল্ক ছাড় দেওয়ায় রাজস্ব আদায় ব্যাহত হয়েছে। অর্থনীতিবিদরা পরামর্শ দেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের দ্রুত রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ও পুরো বাজেট সংশোধন করা উচিত।

এদিকে, অন্তর্বর্তী সরকার ইতোমধ্যে আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট প্রণয়নের কাজ শুরু করেছে। প্রাথমিকভাবে ৮ লাখ ৪৮ হাজার কোটি টাকার বাজেট প্রণয়নের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। বাজেট বিশ্লেষকরা বলছেন, বাজেট বড় করার প্রয়োজন নেই এবং ঘাটতি সীমিত রাখা উচিত। তারা মনে করেন, সংকোচনমূলক মুদ্রানীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে আর্থিক নীতি তৈরি করা উচিত, যাতে অর্থনীতি স্থিতিশীল থাকে এবং মূল্যস্ফীতির চাপ কমে।

সিপিডির গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, বাজেটে ব্যয় সংকোচন এবং রাজস্ব আদায়ের ভারসাম্য বজায় রাখা জরুরি। সাধারণ মানুষের ওপর যেন রাজস্ব আদায়ের বাড়তি চাপ না পড়ে, সেদিকে লক্ষ্য রাখার কথা উল্লেখ করেন তিনি। তিনি আরও বলেন, বাজেটের বড় অংশ ঋণ পরিশোধে ব্যয় হবে, তাই ব্যয় সঙ্কোচনের মাধ্যমে তা বাস্তবায়ন করতে হবে।

অর্থনীতিবিদরা মনে করেন, রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য নির্ধারণে বাস্তবতাকে গুরুত্ব দিতে হবে। একই সঙ্গে অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক ঋণের ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে টেকসই অর্থনৈতিক কাঠামো গড়ে তোলার দিকে মনোযোগ দেওয়া প্রয়োজন।

repoter