
ছবি: ছবি: সংগৃহীত
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করেছেন, প্রশাসনের শ্লথ ও ঢিলেঢালা আচরণের ফলে দুষ্কৃতকারীরা আশকারা পাচ্ছে এবং সমাজে অপরাধ প্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। শুক্রবার সকালে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
রিজভী বলেন, দেশের মানুষ বর্তমানে নির্যাতিত শিশু আছিয়ার ধর্ষণের পর মৃত্যুর ঘটনা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছে না। জনগণের প্রত্যাশা ছিল যে, আইনের শাসন নিশ্চিত করে অপরাধ দমনে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে, কিন্তু বাস্তবে প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তার কারণে অপরাধীরা আরও উৎসাহিত হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, বিগত ১৬ বছর ধরে চলা দুঃশাসনে দেশের সামাজিক ও নৈতিক কাঠামো ভেঙে পড়েছে। হত্যা, গুম, লুটপাট, দুর্নীতি এবং নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনা ব্যাপকভাবে বেড়ে গেছে। রাষ্ট্র ও সমাজে এমন এক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে যেখানে সৎ, নৈতিক ও শিষ্ট মানুষের বসবাস করা কঠিন হয়ে পড়েছে। তিনি বলেন, অপরাধীরা শাস্তি না পাওয়ায় সমাজে ভয় ও নিরাপত্তাহীনতার আবহ ছড়িয়ে পড়ছে।
রিজভী বলেন, সম্প্রতি মাগুরায় বোনের শ্বশুর কর্তৃক আট বছরের শিশু আছিয়াকে ধর্ষণের পর তার মৃত্যু পুরো জাতিকে মর্মাহত করেছে। এ ধরনের জঘন্য অপরাধগুলোর বিচার না হলে অপরাধীরা আরও উৎসাহিত হবে এবং এ ধরনের ঘটনা বাড়বে। তিনি বলেন, দীর্ঘদিনের শাসন ব্যবস্থায় ন্যায়বিচারের অভাবের ফলে মানবিকতা, নৈতিকতা ও ন্যায্যতার জায়গাগুলো ধ্বংস হয়ে গেছে। অপরাধীদের অধিকাংশই ক্ষমতাসীন দলের ছত্রচ্ছায়ায় থাকায় তারা আইনের আওতার বাইরে থেকে যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, জনগণ ন্যায়বিচার চায়, কিন্তু ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা না হলে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের গ্রহণযোগ্যতা হ্রাস পাবে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, সঠিকভাবে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা হলেই প্রকৃত ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা সম্ভব। প্রশাসন যদি দক্ষ, সৎ ও মানবিক না হয়, তাহলে সমাজে অন্যায়, খুন, নারী ও শিশু নির্যাতনের মাত্রা আরও বাড়বে।
রিজভী অবিলম্বে সুষ্ঠু আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার দাবি জানান এবং প্রকৃত অপরাধীদের দ্রুত শাস্তির আওতায় আনার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, অপরাধীদের রাজনৈতিক পরিচয় বা প্রভাব বিবেচনা না করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।
তিনি আরও জানান, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) নারী ও শিশু নির্যাতন, ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনাগুলো পর্যবেক্ষণ করতে এবং ভুক্তভোগীদের আইনি ও স্বাস্থ্য সহায়তা দিতে একটি বিশেষ সেল গঠন করেছে। দেশের ৮৪টি সাংগঠনিক জেলায় এই কার্যক্রম পরিচালিত হবে। বিএনপির পক্ষ থেকে প্রতিটি ঘটনায় তথ্য সংগ্রহ করে তা যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে উপস্থাপন করা হবে এবং ভুক্তভোগীদের প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়া হবে।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলামসহ দলের অন্যান্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
repoter