ঢাকা,  বৃহস্পতিবার
৩ এপ্রিল ২০২৫ , ০২:৫৪ মিনিট

Donik Barta

শিরোনাম:

* চাঁদপুরের ৪০টি গ্রামে সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে ঈদ রবিবার * প্রতিযোগী না হয়ে প্রতিপক্ষ হলে ক্ষতিই নিজেদের: পঞ্চগড়ে সারজিস আলম * জুলাই বিপ্লবের শহীদ পরিবারদের পাশে নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক * ভূমিকম্প বিধ্বস্ত মিয়ানমারে যাচ্ছে বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীর উদ্ধারকারী দল * শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা গেছে, সৌদিতে রবিবার ঈদ উদযাপিত হবে * “বাংলাদেশ কোরআনের উর্বর ভূমি” — পিএইচপি কোরআনের আলো প্রতিযোগিতায় ধর্ম উপদেষ্টার উচ্ছ্বসিত প্রশংসা * চা শ্রমিকদের পাশে সিলেটের ডিসি — দুর্দশায় ত্রাণ নিয়ে হাজির প্রশাসন * সাত বছর পর পরিবারের সান্নিধ্যে ঈদ উদযাপন করছেন খালেদা জিয়া * মিয়ানমার ও থাইল্যান্ডে ভয়াবহ ভূমিকম্পে শতাধিক মৃত্যুর আশঙ্কা * আগামীকাল রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর ২ ঘণ্টার লেনদেন

প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশে ‘হজ ম্যানেজমেন্ট সেন্টার’ চালু হচ্ছে

repoter

প্রকাশিত: ০৯:৩৭:১৬অপরাহ্ন , ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

আপডেট: ০৯:৩৭:১৬অপরাহ্ন , ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: ছবি: সংগৃহীত

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস হজযাত্রীদের যাত্রাকে সহজ, নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন করতে ‘হজ ম্যানেজমেন্ট সেন্টার’ চালুর নির্দেশ দিয়েছেন। মঙ্গলবার বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অনুষ্ঠিত হজ ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত জাতীয় কমিটির সভায় তিনি এই নির্দেশ দেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, পবিত্র হজ পালন সহজ ও নির্বিঘ্ন করার জন্য সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালাতে হবে। একজন হজযাত্রীও যেন কোনো ধরনের ভোগান্তির শিকার না হন, সে বিষয়ে সব পক্ষকে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। সরকার হজ ব্যবস্থাপনার সঙ্গে জড়িত এজেন্সিগুলোর কার্যক্রম সুস্পষ্টভাবে নির্ধারণ করবে এবং তা বুকলেট আকারে ও অনলাইনে প্রকাশ করবে বলে তিনি জানান।

বর্তমানে দেশে লাইসেন্সপ্রাপ্ত হজ এজেন্সির সংখ্যা ১,২৭৫টি। এর মধ্যে ৯৪১টি এজেন্সি হজ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য যোগ্য হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে, ৭৫৩টি এজেন্সি হজযাত্রী নিবন্ধনের অনুমতি পেয়েছে এবং ৭০টি লিড এজেন্সি হিসেবে কাজ করছে। এসব এজেন্সির দায়িত্ব ও কার্যক্রম স্পষ্টভাবে নির্ধারণ করে তা প্রকাশ করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।

তিনি বলেন, সরকারের দায়িত্ব হলো এজেন্সিগুলোর কার্যক্রম যথাযথভাবে পরিচালিত হচ্ছে কিনা তা নিশ্চিত করা। কোনো এজেন্সি দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পুরো হজ ব্যবস্থাপনা হবে সহজ ও স্বচ্ছ, যাতে সরকার ও এজেন্সির ভূমিকা স্পষ্ট থাকে।

হজযাত্রীদের সেবার মান বাড়াতে এবং বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে একটি সুস্পষ্ট গাইডলাইন প্রণয়নের নির্দেশ দেন তিনি। কেউ হারিয়ে গেলে, অসুস্থ হয়ে পড়লে, লাগেজ হারিয়ে গেলে বা অন্য কোনো সমস্যার মুখোমুখি হলে কী করণীয়, সে বিষয়ে স্পষ্ট দিকনির্দেশনা প্রদান করা হবে। এছাড়া, নারী ও শিশুদের বিশেষ সুরক্ষা নিশ্চিত করতে অতিরিক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন তিনি।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশেই একটি ‘হজ ম্যানেজমেন্ট সেন্টার’ স্থাপন করতে হবে, যাতে সার্বক্ষণিক মনিটরিংয়ের মাধ্যমে হজযাত্রীদের সেবা নিশ্চিত করা যায়। কল সেন্টারে আসা অভিযোগগুলো তাৎক্ষণিকভাবে পর্যবেক্ষণ করতে হবে এবং দ্রুত সমাধান দিতে হবে। একই সঙ্গে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করা হবে, যেখানে হজযাত্রীরা তাদের অভিযোগ জানাতে পারবেন। কেউ হারিয়ে গেলে, সেই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে তার অবস্থান শনাক্ত করা সম্ভব হবে।

তিনি আরও বলেন, ভবিষ্যতে হজ ব্যবস্থাপনাকে আরও কার্যকর করতে কল সেন্টারে আসা অভিযোগগুলো পর্যবেক্ষণ করতে হবে। কী ধরনের সমস্যা বেশি দেখা দিচ্ছে, কতগুলো সমাধান হয়েছে এবং কতগুলো এখনো সমাধান হয়নি, তা বিশ্লেষণ করে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে, যাতে পরবর্তী বছরগুলোতে একই ধরনের সমস্যার পুনরাবৃত্তি না ঘটে।

এজেন্সিগুলোর দক্ষতা মূল্যায়নে নতুন ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। কোনো এজেন্সি দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হলে তাদের লাইসেন্স বাতিল করা হবে। হজযাত্রীদের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে এজেন্সিগুলোর কার্যক্রম মূল্যায়ন করা হবে এবং প্রশিক্ষণের ভিত্তিতে তাদের ‘এ’, ‘বি’, ‘সি’ ও ‘ডি’ ক্যাটাগরিতে শ্রেণিবদ্ধ করা হবে। যেসব এজেন্সি মানদণ্ড পূরণ করতে ব্যর্থ হবে, তাদের লাইসেন্স বাতিল করা হবে।

হজযাত্রীদের সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য ভিডিও গাইড তৈরি করার নির্দেশ দেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, হজযাত্রীদের জন্য বিভিন্ন সমস্যার সমাধানমূলক ভিডিও তৈরি করতে হবে। অসুস্থ হয়ে পড়লে, হারিয়ে গেলে, কোরবানি দেওয়ার সময় কোনো জটিলতা দেখা দিলে কী করণীয় তা এসব ভিডিওতে দেখানো হবে, যাতে হজযাত্রীরা আগেভাগেই প্রস্তুত থাকতে পারেন এবং মানসিকভাবে শক্ত থাকতে পারেন।

ভবিষ্যতের পরিকল্পনার অংশ হিসেবে হজযাত্রীদের জন্য ‘হজ ক্রেডিট কার্ড’ চালুর পরামর্শ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। এই কার্ড ব্যবহারের মাধ্যমে হজযাত্রীরা অর্থনৈতিকভাবে আরও সুরক্ষিত থাকবেন। দেশে ফেরার পর অবশিষ্ট অর্থ যাত্রীদের নগদ ফিরিয়ে দেওয়া হবে।

লাগেজ ব্যবস্থাপনাকে আরও উন্নত করতে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। হজযাত্রীরা যাতে লাগেজ হারিয়ে না ফেলেন, সেজন্য চেক-ইনের সময় লাগেজ ট্যাগের কপি সংরক্ষণ করা হবে। হজ ম্যানেজমেন্ট সেন্টারে এসব ট্যাগের তালিকা থাকবে, যাতে হারিয়ে যাওয়া লাগেজ দ্রুত খুঁজে বের করা যায়।

এ বছর সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৫,২০০ জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৮১,৯০০ জন হজযাত্রী নিবন্ধন করেছেন। তবে, এ বছর সরকারি খরচে কাউকে হজে পাঠানো হবে না বলে জানিয়েছে সরকার।

সভায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন এবং ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, অর্থ মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য কর্মকর্তারা।

repoter